ভালোবাসার পদাবলি
১.
ওখানে যাবে না বসা, ধুলোবালি জঞ্জাল জুলুম
ওখানে যাবে না বসা, হাটখোলা হাটের আকাশ
মাঠেও যাবো না ভাই, ঘাটেও না, সেখানে হালুম
নতুন রাস্তার মোড়? ওখানে তো ওপেন বাতাস!
মণিকে যাবে না দেয়া, তার সঙ্গি অভাবের চেলা
সনিকে যাবে না দেয়া, তার চোখে গাঁজার পিরিতি
স্বপন ভায়া তো ঘোরে সাথে নিয়ে শুধু হেলাফেলা
বলো না কবির কথা, সে বোঝে না গোছানোর রীতি।
বাগানে যায় না রাখা, মালিটার হাতে ধুলোবালি
উঠানে রাখাও দায়, পথ দিয়ে যায় কতজনা
লিটল ম্যাগের বাক্স! তার মানে দুইহাত খালি!
কীভাবে নীলাম ডাকি, এখনো তো হয়নি পুরানা?
চারপাশে কাঁটাতার, প্রহরীরা দাঁড়িয়ে অদূরে
তোমার সতর্ক প্রেম কেটে যায় শিকার ইঁদুরে।
২.
জানি যে রেখেছো তুলে সযতনে মাথার ওপর
জমে নাকো ধুলোবালি, লাগে নাকো দূষণের ছাপ
জেনেছে ঘরের লোক- কাকে বলে ভাঁড়ার আদর
সর্দার ইঁদুর জানে তারো বেশি আরো এক ধাপ।
দুয়ারে পাহারা কড়া, জানালাও বন্ধ প্রায় সাঁঝ
জানা নেই এ দুয়ার এ জানালা খোলে কিনা খিল
সার্বভৌম সংশয় কী যে এতো আঁধারের কাজ!
রাত যায়- প্রভাতেও ধাঁধারঙে বাঁধা অন্ত্যমিল।
কারুণের ধন কবে হয়েছিল সাগরের বালি
সে প্রসঙ্গে নিরুত্তর হলে হোক অতীতের কাল
তার চেয়ে এই ভাল কঞ্জুসের গলা হলে’ খালি
সে মালায় হেসে যাবে উচ্চকণ্ঠ চোরের ছিনাল।
কুয়াশার রঙে বুঝি- তার পরে কার আগমন
তোমার প্রেমের শিকা বুঝি নাতো ছিঁড়ে যে কখন!
৩.
চারপাশে শোরগোল বেচাকেনা দর কষাকষি
পাসপোর্ট পারমিট- অঘরের টিকেট ডলার
টান দিয়েছে সময়- চিরায়ত হাতে বাঁধা রশি
হুড়াহুড়ি দাপাদাপি বেঁকে যায় শার্টের কলার।
আমি আগে তুমি পরে তুমি নাও আমি তারপর
লাইন পড়েছে ভেঙে- খোয়া যায় পেছন পকেট
সোনা গেছে জমি গেল- রইলো যা তা কেবলি পর
দুয়ারে দাঁড়িয়ে ঘর চোখে তার এয়ার টিকেট।
আলঘেঁষে কাঁটাতার- তার ’ পর আকাশ হা-খোলা
হা-খোলা আকাশ পথে ওড়ে আহা ডলার দিনার
ওপেন মার্কেট আসে- কড়া ধরে দিয়ে যায় দোলা-
বেনিয়া-মনের সাথে দোল খায় প্রেমের মিনার।
আমি তো পুরোনো প্রেম ধরে আছি শ্যামল কোমর
আমাকে যেও না ফেলে থাক শত অকাট্য ওজর।
৪.
এ কোন্ বাতাস বলো ফাগুনে হলুদ ইস্তেহার
বোঝে নাকো ঘাসফুল এ কেমন অকালের ভাও
শিমুল পলাশ বোবা হাতে নিয়ে ম্লান এজাহার
বাগানে বাগানে পড়ে গেছে কোন্ যমছোঁয়া বাও!
বাতাসে গ্যাসের চুলো- পুড়ে ওঠে শ্বেত অম্লজান
শূন্যের চাদরে দ্যাখো বেড়ে যায় ছিদ্র আর ক্ষত
নীলিমা বিবর্ণ তাই থেমে যায় বলাকার গান
জলের শরীর সেও হয়ে ওঠে বারুদে বিক্ষত।
নদীর শরীরে আজ বাসা বাঁধে জলাশয়-সুখ
প্রেম কি যে কি অপ্রেম- এ দ্বিধায় পেয়েছে রাজত্ব
ঠোঁট দেখে ভয় হয়-ঠোঁট নাকি বেমারের মুখ!
দিন ছোটে, ছোটে রাত,- এই ছোটা অন্ধগলিত্ব।
তবুও প্রাণের ঘাঁটি এ আমার লখিন্দর-কায়া
বেহুলাদুপুর তুমি অক্সিজেনে মেখে ধুপছায়া।
৫.
সময়তো ড্রাইভার হাতে তার স্টিয়ারিং বাঁশি
পায়ে ব্রেক ইস্টার্টার ফার্স্ট টপ সকল গিয়ার
বগিভর্তি প্যাসেঞ্জার আর কত গল্প কান্না হাসি
এইতো সাত্ত্বিক দিন- এই রাত ওয়াইনবিয়ার।
পেছনের দিন এসে বেল্ট টানে- ট্রেনে ধরে টান
কখনোবা জংশনে ট্রেন চেঞ্জ- চায়ের মৌতাত
আবারো হুসেল বাজে- যাত্রীরাও ছোটে টানটান
প্রবাদের মতো জোটে নতুন দুপুর কিম্বা রাত।
অন্ধহাতে আমরাও খুঁজে নেবো নতুন সকাল
বিধ্বস্ত আলোয় কিম্বা অন্ধকারে এসে যাবে চাঁদ
অন্তর্গত উষ্ণতায় মনে রবে বেহুলা বিকাল
কিম্বা মসলিন রাত- সেই রাতে ফ্লাশব্যাক সাধ।
প্রেম থেমে নেই দ্যাখো- আজো সেই চলন্ত যমুনা
নতুন প্লাবনে ভাসে, পথ ভোলে,- ভোলে না মোহনা।
৬.
স্রোতের সোয়ার হয়ে কেটে গেছে বহুব্রীহি দিন
অথচ দ্বন্দ্বের রাত ফলেনিকো তৃতীয় ফসলে
শহরে বন্দরে শুধু ছড়িয়েছে অসুখের চিন
কেন্দ্রের অসুখ তাই ফলে ওঠে দূর মফস্বলে।
লোডশেডিঙ্গের দিন একদিন হয়ে এলে শেষ
নিশিগন্ধা প্রাণ আর হবে নাকো দুর্গন্ধের দাস
গোধুলি অধর হলে মেঠোসাঁঝ হবে এলোকেশ
আকাশ আবার সেই বলাকার ডানার আকাশ।
রোদে-অন্ধ এতোদিন দেখিনিকো আমি তুমি কেহ
দূষণ এড়িয়ে সুধা ধরে আছে চিরায়ত ডাব
যদিও নগদে নাঙ্গা মিডিয়ায় প্রযোজিত দেহ
হৃদয় ছড়িয়ে আছে আসমুদ্র সে অব্যয়ীভাব।
স্বপ্নের আকাশে দ্যাখো উঠে আসে প্রতœময়ী চাঁদ
এসো তবে দাও হাত পরে নেই প্রণয়ের ফাঁদ।
---------------০০০--------------