আয়নায় হিরণ্ময়ী মুখ - মেহরাব রহমান
আয়নায় হিরণ্ময়ী মুখ - মেহরাব রহমান
যে
ঐখানে
ঐ চোখ
পরিশ্রান্ত … প্রশান্ত … সুন্দর …
ঐখানে এই মেঘ
মাতাল-মুগ্ধ-ঝড়
দামামা বাজে
ঢোল বাজে
বাজে টাক -ডুম টাক -ডুম
ঢোল বাজে
দূর বালুচর
ঢাকের শব্দ
দগ্ধ বেলাভূম
রুদ্ধ দুয়ার …বন্ধ হৃদয় …
অলস প্রেম
মাঝে মাঝে পাথর জীবন
তবে এইমাত্র মুক্ত আমি …
উড়ন্ত … ছুটন্ত বালিহাঁস …
জেগেছে অরণ্য-উন্মাদ
বন্য ভালবাসা
লোকে মন্দ বলে বলুক
গালি দেয় দিক
দিকভ্রষ্ট নই
নই আমি ক্ষুব্ধ
সাগর তীরে দাঁড়িয়ে
চোখ রাখি বায়োস্কোপে :
অনুপ্রবেশ ঘটে
পর্দায় ভাসে
অভিনব এক চিত্রকল্পঃ
নীল বাঁকা জল
খেলা করে
পূর্ণচাঁদ রাত
রং তামাশার খেলা
নদীর জল বাঁক
ফেরাতে ফেরাতেই
নানা রং
জল তরঙ্গ
অলৌকিক উচ্ছাস
বিচিত্র ঢঙের খেলা
খেলার ছলে খেলতেই রংবাজ …সৌখিন … সমুজ্জ্বল … সমুদ্র বন্দর …
ঐ যে
ঐখানে
ঐ চোখ
দর্পণে বিম্বিত
পোড়ায় …জ্বালায় খুব …
উহ ! খুব পোড়ায়
কে জানে ? এ কাহার চাহনি ?
এ কোন নিষিদ্ধ নির্বাক কাহিনী ?
তবে কি আমি যার দীর্ঘ প্রতীক্ষায় ছিলাম
এই সেই মেয়ে ?
হৃদযমুনায় খরস্রোতা ধেয়ে চলে সে
তাইকি এইখানে ভিনগোলার্ধে আমি এতটা তৃষ্ণার্ত ?
আমার দুর্ধর্ষ দুষ্টু চোখ এতটা চন্দ্রভুক ?
জেনে রাখো ইতিহাস
আর কেউ নই আমি
জানি আমি আর জানে অন্তর্যামী
যাত্রাপালার ক্ষুধার্ত এক অধিকারি
অসম্ভব তৃষ্ণা নিয়ে এক অরণ্যচারী
এ যেন ঘুমের ঘোরে
ঐশিক সপ্ন ভাণ্ডার চাওয়া
এখানে দাঁড়িয়ে এইমাত্র শুনছি
কোন দূর নগরে বাজে
নুপুর নিক্কন
রিনিঝিনি রিনিঝিনি
ঝন্ ঝন্ ঝন্ চমকিত গুঞ্জন
ঢিপ্ ঢিপ্ ঢিপ্
ঝিক্ ঝিক্ ঝিক্
নৃত্যের তালে তালে চলমান
ভ্রাম্যমাণ হৃদপিন্ড
নিলয় গভিরে
অহর্নিশি নিশিডাক
ডাক দেয় … আয় আয় আয়
চেনা পথ তবুও হারাই পথ
দেখি আগুন উৎসব
পূর্ণিমায় আলোর ঝরনার কলরব
যদিও আজন্ম মাতাল আমি
ভুলেও কখনো অমাবশ্যার
তরল গরল অন্ধকার পান করি না
শ্রাবণে প্লাবনে চন্দ্রমল্লিকা শিকার করি
দিবস-রজনী সোনার হরিণীর পেছনে ছুটি
সব বাধা বিঘ্ন টুটি
চেপে ধরি লাল মরগের ঝুঁটি
জানি একদিন সময় আসবেই হাতের মুঠোয়
দুর দ্রাঘিমা থেকে ভেসে আসা ফজরের আযানের ধ্বনি
রাগ সিন্ধু ভৈরবী শুনি
মধুর মিনতি মনমন্দিরে … বাজে কাঁসর ঘণ্টা
এই শুনে শুনে অংকের সংখ্যাতত্ত গুনে গুনে
কবিতার তাঁতি নিরাভরন স্বপ্নজাল বুনি
সোনার তন্তুতে কবিতার বয়ন যন্ত্রে
তাঁত বুনতে বুনতেই কখন যেন
নিজেকে হারাই
অজানা দ্বীপের বালুহীন বালুচরে
বিজ্ঞানমনস্ক পার্থিব জগতের
এক অবাক পুরুষ
পৌরষের পরিপূর্ণ দর্পণে দেখি
এক রহস্য-রূপঙ্কর নারী
হে মোহময় মায়াবতী রমণীকুল
নমস্য তোমরা
ক্ষমা করো যদি হয় ভুল
তোমাদের ক্লান্ত … শান্ত …
অবগুন্ঠনে ঢাকা মুখ … খুব ভালোবাসি
যাবার আগে কাঁধের
বিমুর্ত ঝোলায় ঝুলিয়েছি
বিম্বিতো আয়নার হিরন্ময়ী ঐসব মুখ
এবং
নির্বাক নীলজল …তৃষ্ণা … গুঞ্জন … নুপুর-নিক্কন … অবগুণ্ঠন …
ইত্তাকার শব্দাবলি
আমি বিস্ময়ের মত
দুরারোগ্য ব্যাধি আক্রান্ত
অদ্ভুত এক প্রাণী
মেঘের ভেলায় বিছানা পেতেছি
স্বপ্ন খচিত চাদরে শুয়ে
ভেসে চলেছি অনন্ত লোকের অন্তহীন
নির্বাচিত গন্তব্যের
শেষ ঠিকানায়

সাবস্ক্রাইব করুন! মেইল দ্বারা নিউজ আপডেট পান