এমদাদুল কাদের এর কবিতাগুচ্ছ
এমদাদুল কাদের  এর কবিতাগুচ্ছ
ভালবাসার ফেরিওয়ালা

অর্ধশতাব্দীর পাগলামি
মাথায় ভর করেছে আমার,
পুরো শতাব্দীর ভালবাসা পেয়ে আমি পাগল হতে চাই।
কি হবে এ জীবন দিয়ে?
যদি না আদমের মতো গন্দম খেয়ে স্বর্গ ছাড়তে পারি?
ভালবাসায়......
ভালবাসার ফেরি করে আমি যে মানুষ হতে চাই।

ভালবাসায় সিক্তা তুমি

তুমি কি বুঝ ভালবাসার রুপ?
আকাশের নীল রঙ?
খুজেছো কখনো নীলের ভেতরের মন?
জমে থাকা ভালবাসার কান্নার জল?
সহজ সরল সমীকরণককে জটিল করে তুলো কেন?
কবিতার সরলতা ঈশ্বরের মতো,
প্রতিটা পংতিতে পংতিতে যেন নদীর শান্ত ঢেউ
সাগরে মেলার কি দারুণ ব্যাকুলতা।
আমার গজলেই লিখে যাবো সমর্পনের ইতিহাস
ভালবাসার টুকটাক মনের কথা,
ব্যাকুলতারর ঘ্রাণ পাবে তুমি প্রতিটা শব্দে
অনুভব করবে দূর থেকেও আমার দেখা করার আগ্রহটা।
তোমাকে দেখলেই আমার তাওয়াফ হয়ে যায়
ঠোটে দেয়া চুমু যেন হজরতে আসোয়াদে রাখি,
জিকিরে জিকিরে নেয়া তোমার নাম
লেখা হয়ে যায় বিধাতার দরবারে, পূণ্যের খাতায়।
এটা ভালবাসা প্রিয়
সীমানার প্রাচীর যে এক লহমাতেই পাড় করে
কথা বলে ঈশ্বরীয় ভাষায়
মুহুর্তেই তোমাকে নিয়ে বসায় এক মানবীর আসনে।
নীলাঞ্জনা, দেবী হয়েও এক মানবী তুমি আমার বুকে
অপার ভালবাসায় সিক্তা,
হাজার জনমের পুণ্যের বিনিময়ে প্রাপ্ত্য
অপার ভালবাসার ফসল।
বেসম্ভব ভালবাসি তোমাকে।

কিছু আক্ষেপ
দেশের স্বার্থে জীবনটাকে কোন জীবনই মনে করিনি একদিন
যে বয়সে বন্ধুদের সাথে আড্ডা মারার কথা
সিনেমার গল্প বা কোন সুন্দরী মেয়ে নিয়ে মনের উচ্ছাস প্রকাশ করার সময়,
সেই সময়টাতেই চোয়াল ছিল শক্ত
বুকের ভেতর জ্বলছিল আগুন
হাত নিশপিশ করছিল
ট্রিগারে রাখা আঙ্গুলে ছিল যেন শরীরের
সব শক্তি।
শুকনো চোখে না ছিল জল, না রক্ত,
ছিল শ্যেনদৃষ্টি
শত্রুর সামান্যতম গন্ধ শুঁকে নিতে পারতো এ নাক।
মানুষ হয়েও মানুষ ছিলাম না তখন
ছিলাম ঐশ্বরিক পরিকল্পনার এক গুটি
সর্বশক্তিমানের হাতেই ছিল সমস্ত ক্ষমতা বরাবরের মতোই।
এ দেশটার জন্য রনজিৎ হারিয়েছিল তাদের সংসার,
তার দেশ,
বাসু দেব হারিয়েছে তার বাবা,
ফারুক হারিয়েছিল তার প্রিয় ভাইদের
ডাব্লুদা হারিয়েছিলেন তার অমূল্য জীবন।
এমনি করেই গুনতে গুনতে পার হয়ে গেল ত্রিশ লাখ
দু লাখ মা-বোন তাদের সম্ভ্রম হারিয়ে লুকিয়ে গেলেন কবরের আড়ালে।
রক্তের নদী সাঁতরে দেশ স্বাধীন হয়ে গেলে
দেখা গেল জীবনটাই ছিল ঠুনকো,
চোখ বেয়ে নামা জলে আজ রক্ত
চারপাশে নুপুরের ঝংকারে দেখি মিথ্যের বেসাতি
মানবিকতার কথা অহরহ শুনলেও দেখি না মানবিকতা।
মুক্তিযোদ্ধারা কিছুই ছিল না
তারা যেন ছিল এক দমকা বাতাস
গায়ে ছিল যাদের লোবানের সুবাস
পবিত্র পুস্তকের উচ্চারিত কিছু আয়াত
সমৃদ্ধ করেছিল তাদের মাটির ঘর
শুরুতেই যেন লেখা ছিল তাদের শেষের আভাস।


সাবস্ক্রাইব করুন! মেইল দ্বারা নিউজ আপডেট পান