কবি : এলিজা আজাদ
তার ঠোঁট
এপথে হেঁটো না পথিক
এপথটা বড্ড এলোমেলো
তোমাকে সামলাবে এমন শক্ত হাত কই?
এইতো কদিন আগেই দুটি মানুষ একসাথে নদীর জলে পা ডুবিয়ে ছিলো জীবনের পাঠ শিখে নেবে বলে
একজন ভেসে গিয়েছিল অকস্মাৎ
আরেকজন রাতভর দাপাদাপি করে আকাশের দিকে তাকিয়েছিল
সেদিন আকাশটা অনেক কাছের মনে হয়েছিল
আকাশের বুকটা ক্যানভাস ভেবে কিছু স্বপ্ন ছড়িয়ে দিতেই
আকাশটা বেদনার রঙে আরও গাঢ নীল হয়ে বলেছিল,
এদিকটাও বেসামাল
দেখেছো না আমার হাতে হুইস্কির বোতল
বোতলের ঢাকনা খুলতেই আমি আর আমি থাকিনা
তোমার হই কীকরে?
সেদিন আকাশটা অনেক দূরের অচেনা পাখির মতোন
তার ঠোঁট পুড়ে যাচ্ছে সিগারেটের ধোঁয়ায়
জ্বলে যাচ্ছে জীবন ঘোলাটে হচ্ছে আকাশ
কেউ একজন বলেছিল এখানে পাঁজর ভাঙে যখন তখন!!
কলাবতী বাগানটা পেরিয়ে
আমিও কলাবতী বাগানটা পেরিয়ে পথের কাছে যাবো
চিনে নেবো অচেনা পথ
হয়তো হোঁচট খাবো
কিছুটা রক্তক্ষরণ তাও সামলে নেবো
এভাবেই সবাই একদিন জীবনের কাছে যায়
নাবিশ্বাসের ধোঁয়া ওঠা জীবনের গলাটিপে ধরে একটু স্বস্তি নিতে অদৃশ্য তোমার কাছে সুখ খুঁজতেই আমার এই অগ্রযাত্রা
তুমি ফুরফুরে বাতাস হয়ে ছুঁয়ে যেও
ছোঁয়ার অনুভবে অনেকদিন বেঁচে থাকা যায়
অচেনা পথটা অনেক উঁচুনীচু উঠতে কষ্ট হলেও
দূর থেকেই সবুজ সিঁড়ি উঠে গেছে ধাপেধাপে উপরের দিকে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি।
জলে ভাসা পদ্ম ফুলের সংসার
ঘোর লাগা সময়ে,
আজকের বিকেলটা অন্যরকম
বুকে দাগ কেটে যাওয়া শনশন শব্দের এক অনন্য বিকেল
যেই ছুঁয়ে দিলে সারাদিনের বিষাদ কেটে গেলো এই এইটুকু স্পর্শে
কিছুটা উদ্বেলিত মাতাল লাগা ঘোর
দুষ্টু বুদ্ধি মাথায় ভীড় জমিয়েছে
বেশ আয়োজন করেই তোমাকে দুমড়ে মুচড়ে ফেলতে উদগ্রীব
খুঁজে খুঁজে খুনসুটির সময়গুলো উপভোগ করি আর মোমের মতো গলতে থাকি
অপূর্ণতা নেই
নেই বাঁক খাওয়ার পথের দিকে যেতে যেতে হোঁচট খাওয়া
জলের বেগ রুখে তোমার দিকে মুখ করে দাঁড়ানো স্তম্ভিত আমি-
এতো নতুন কিছু নয়;
কিছুটা অনধিকারচর্চা অনুমতি ছাড়াই উজ্জীবিত হচ্ছে
নিজের মাঝে নিজেকে হারিয়ে যাওয়া ঝিমধরা এই সময়ে
নদীর তীব্র প্রখরতা বাড়িয়ে ছুটে চলেছো আমাকে নিয়ে
আমিও অনন্তকাল ধরে সে জলেই ভেসে বেড়াচ্ছি
এ আমার সবুজ পাতায় জড়ানো জলে ভাসা পদ্ম ফুলের সংসার।
এক ও অভিন্ন হৃদয়
এমন একটা দিন আসুক
তুমি-আমি পৃথিবী থেকে আলাদা বিচ্ছিন্ন একটা দ্বীপে
আমাদের দিব্বি মনে আছে প্রেমে ভেসে যাওয়া
সেই শুভক্ষণ
তোমার ধারালো চোখের চকচক করা জ্যোতিতে বাঁধা পড়েছিলো আমার হৃদয়
সুখ যেনো কোঁচড় ভরা বেলির সুবাস
ছড়িয়ে যেতে যেতে সহবাসে গিয়ে ঠ্যাকে
প্রেমিক প্রেমিকার ভালোবাসার এক প্যাকেজ ডিল-
সামনে দেখা মাত্রই শরীর জাগ্রত হবেই;
লাউয়ের কচি ডগার মতো নরম লতাপাতায় জড়াজড়ি ঋষিমুনিদের যজ্ঞের মতো-
এক ও অভিন্ন আত্মার সংযোগ---
এখানে দরজা খুলে কেউ অন্য কেউ প্রবেশ করতে পারে না
আমরা বুকের বামপাশে হাত রেখে শপথের সাথে এর নাম দিলাম,
এক ও অভিন্ন হৃদয়।
সবুজ পাতায় চোখ জুড়ানো রাত
হেলুসিনেশনের এই রাতকে অভিনন্দন জানাও প্রিয়
একে অবজ্ঞা করোনা
এও ভালোবাসা জানাবার এক অভিনব কায়দা
রাত বাড়ানোর গতিবিধি এর তীব্রতা বাড়িয়ে দেয়
লজ্জা সম্ভ্রম ভুলে উন্মোচন করি আমি নিজেকে তোমার কাছে
প্রগাঢ় রং ছড়িয়ে ঘুরে বেড়াই শক্ত শরীরে
কাটি ভালোবাসার আঁচর
যদি নাম দাও আদিম সভ্যতার আদিবাসী আমি একজন-
তাতেও নেই সংকোচ
প্রশান্তি নিয়ে বিবস্ত্র হতেও এখানে নেই দ্বিধা
সারাদিনের অভিমানের পুটলীটা লুকিয়ে রেখে তোমার রঙে রাঙিয়ে ফেলি অতি সহজে
গোপন বলে এখানে কিছুই নেই
তাই প্রতিটা রাত আমার কাছে রোমাঞ্চকর
জীবিত-মৃতের অন্তরের মাঝেও-
এ-এক সবুজ পাতায় চোখ জুড়ানো রাত।