এ কে এম আব্দুল্লাহ এর পাঁচটি কবিতা
পিটের কুঁজো বেয়ে নেমে এলে অ্যাপেলগুলো— নিউটনের সূত্র ভেঙে— পেটগুলো মাথায় ওঠে। আমরা সেই মাথাগুলো সাজিয়ে রাখি— একবিংশ শতাব্দীর ড্রয়িংরুমে,কড়ই কাঠের সেলফে।
আর আমরা ভ্যালভেটের সোফায় বসে— লাজের মাথা খাই। ফরাসিগন্ধ ছিটিয়ে সেই মাথায় ফুল ফোটাই।
আমরা চার্কোলের বাকেটে কলিজা পুড়াই আর সেলফির ফ্লেক্সিলোডে নিজেকে চমকাই।
আমাদের মাথায় এখন ঘুনপোকার বাস। আমরা বধির দৃষ্টি আর অন্ধকার কান নিয়ে— বিগব্যাং এর ভেতর দিয়ে হাঁটি। আর আমাদের মরে যাওয়া হৃদয় পেছনে পেছনে মোড়ক উন্মোচন করে আমাদের ভেঙে যাওয়া করোটির।
অতপর মৃত উপত্যকায় শামিয়ানা টাঙিয়ে— কেউ এসে জানিয়ে যায় দীর্ঘ পাঠপ্রতিক্রিয়া।
এরপর,শতাব্দী বদল হয়। লালরং কোনো বিল্ডিং এর ব্যাইজমেন্টে— আমরা, লালফিতায় বন্ধি ফাইলে ঢুকে পড়ি। আমাদের মাথায় ধূলো জমে। আমাদের চোখে,আমাদের কানে ধূলো জমে।আমরা ভুলে যাই আমাদের আইডি ডি-অ্যাকটিভেইট করার কথা।
এভাবে অনন্তকাল আমরা ধূলোর স্তুপের ভেতর ঘরসংসার করতে করতে বেঁচে থাকি। বাঁচতে থাকি অন্যভাবে...
শোনেছি,আজকাল তুমি পঙ্খিরাজে আসো। জলকেলি শেষে দুধসাদা জোছনার চাদরে
গতর মোছো।আর আমাকে সাদা-কালো,যে
সংগম প্যেঁচিয়ে রাখে সারা রাত— তার আরাধনায় গর্ভবীজগুলো ডানামেলে উড়ে যায় পরীর দেশে। আর তোমার স্নিগ্ধ হাসির পেছনে উল্কা ঝরে।তোমার চুল বেয়ে বেয়ে নামে শেষ প্রহর।
এরপর, আমি দুহাতে ঠেলে ঘনঅন্ধকার— ভোরের ন্যাংটা আভায় যখন বসি মুখোমুখি— কানের ভেতর ভেঙে নেমে আসে হাতে,ভীষণ জন্মযন্ত্রণায় হৃদয় ভাঙা ধ্বনি।
বাতাস সেলাই করে করে যে কোকিলটি এলো। সেও দু:খিতা সন্ধ্যার মতো বসে আছে ; ফিউজ উড়ে যাওয়া কারেন্টের তারে। মানুষ পুড়া আগুন পোহাতে পোহাতে রাত গুলোও উড়ে যাচ্ছে আকাশের দিকে।
আর গৃহবন্দী বধু নিজেকে অনাবাসী ভাবতে ভাবতে— চোখ থেকে খুলে রাখে স্বামীর স্পর্শগুলো, স্যাঁতসেতে বালিশে।নিজস্ব পালক বাড়িয়ে কামনা করে একসমুদ্র জল।
এখন দুপুরের ছাদ অন্ধকার। কিছুক্ষণের মধ্যেই আকাশের কোমর ভেঙে পড়তে পারে। কথাগুলো শোনার পর, পাশের সবাই মুখ চাওয়া-চাওয়ি করলো।আর হঠাৎ পেছনে কয়েকটা আগুনলাগা জীবের গোঙানি শোনা গেলো।
জীবন থেমে আছে সময়ের মেদে ; কারেন্টের জালে আটকে থাকা মাছের মতোন।স্পিনারের মতো ঘুরছে চোখ— নি:শঙ্ক বাঁচার আকুলতায়।
তবুও চলো,হাওয়ায় দোলানো বেয়াড়া চুলের ঘ্রাণ জিইয়ে রাখি বিলের কিনারে।
বৃন্তের শক্ত বন্ধন ছিঁড়ে যাওয়া বোঁটার মতো— হৃদয় বেয়ে নেমে গেলে দূর্বোধ্য রাত। তোমার খোঁপায় গুজে রাখা নিশিগন্ধায় চেয়ে রবে যে কালের মৃত ভ্রমর ; তার চোখ থেকে কেড়ে এনে স্বপ্ন— লিখে নেব আনুগত্যের নতুন ইতিহাস।
তুমি শুধু উন্মোক্ত করে দিয়ে উজ্জল ভোর,একটু কাছে এসো।আমি তোমার সিঁথি ভরে ঢেলে দেব ফের ; মুঠোভর্তি সূর্যকণা।
এই নাও হাত। ধরো। এবার চলো হাঁটি। পানের-পিক ফেলা দেয়ালটা অতিক্রম করলেই— নতুন শহর। জোনাকির ডানা থেকে ঝরে পড়া সোডিয়াম আলোয় ভিজে, আমাদের কিছুক্ষণ চুমো'র গন্ধ মাখা গলি-ঘুপচি দিয়ে হাঁটতে হবে। আর আমাদের সাথে ছায়াবেশে আসতে পারে— কিছু অনাকাঙ্খিত মৃত্যু সংবাদ।
মাঝেমধ্যে ঘামভেজা দরজার ফাঁকে শুনবে—চুড়ি আর বিচিত্র হাসির ব্যাকুল ধ্বনি। ফুটপাতে পাতা অসংখ্য সংসারগুলোর মতো,নতুন শহরে পাবে অসংখ্য রঙিন শামিয়ানা টাঙানো সংসার। আর সেখানে প্রদর্শিত হবে হিমোগ্লোবিনের ঘনত্ব। আধুনিকতার ডিজিটালস্ক্রিনে দেখবে ফ্যাশন শো,টকশো’এবং নতুন শহর গড়ার মার্জিতকাহিনী।
আমি নতুন শহরের বারান্দায় বসে,তোমাকে রাতভর শোনাবো ; শহরের চিকামারা-দেয়ালের দীর্ঘশ্বাসের আতঙ্কিত আত্মকথা।
একটি পাঠপ্রতিক্রিয়া
পিটের কুঁজো বেয়ে নেমে এলে অ্যাপেলগুলো— নিউটনের সূত্র ভেঙে— পেটগুলো মাথায় ওঠে। আমরা সেই মাথাগুলো সাজিয়ে রাখি— একবিংশ শতাব্দীর ড্রয়িংরুমে,কড়ই কাঠের সেলফে।
আর আমরা ভ্যালভেটের সোফায় বসে— লাজের মাথা খাই। ফরাসিগন্ধ ছিটিয়ে সেই মাথায় ফুল ফোটাই।
আমরা চার্কোলের বাকেটে কলিজা পুড়াই আর সেলফির ফ্লেক্সিলোডে নিজেকে চমকাই।
আমাদের মাথায় এখন ঘুনপোকার বাস। আমরা বধির দৃষ্টি আর অন্ধকার কান নিয়ে— বিগব্যাং এর ভেতর দিয়ে হাঁটি। আর আমাদের মরে যাওয়া হৃদয় পেছনে পেছনে মোড়ক উন্মোচন করে আমাদের ভেঙে যাওয়া করোটির।
অতপর মৃত উপত্যকায় শামিয়ানা টাঙিয়ে— কেউ এসে জানিয়ে যায় দীর্ঘ পাঠপ্রতিক্রিয়া।
এরপর,শতাব্দী বদল হয়। লালরং কোনো বিল্ডিং এর ব্যাইজমেন্টে— আমরা, লালফিতায় বন্ধি ফাইলে ঢুকে পড়ি। আমাদের মাথায় ধূলো জমে। আমাদের চোখে,আমাদের কানে ধূলো জমে।আমরা ভুলে যাই আমাদের আইডি ডি-অ্যাকটিভেইট করার কথা।
এভাবে অনন্তকাল আমরা ধূলোর স্তুপের ভেতর ঘরসংসার করতে করতে বেঁচে থাকি। বাঁচতে থাকি অন্যভাবে...
মুর্ছিতস্পন্দন
শোনেছি,আজকাল তুমি পঙ্খিরাজে আসো। জলকেলি শেষে দুধসাদা জোছনার চাদরে
গতর মোছো।আর আমাকে সাদা-কালো,যে
সংগম প্যেঁচিয়ে রাখে সারা রাত— তার আরাধনায় গর্ভবীজগুলো ডানামেলে উড়ে যায় পরীর দেশে। আর তোমার স্নিগ্ধ হাসির পেছনে উল্কা ঝরে।তোমার চুল বেয়ে বেয়ে নামে শেষ প্রহর।
এরপর, আমি দুহাতে ঠেলে ঘনঅন্ধকার— ভোরের ন্যাংটা আভায় যখন বসি মুখোমুখি— কানের ভেতর ভেঙে নেমে আসে হাতে,ভীষণ জন্মযন্ত্রণায় হৃদয় ভাঙা ধ্বনি।
দু:খিতা সন্ধ্যার গল্প
বাতাস সেলাই করে করে যে কোকিলটি এলো। সেও দু:খিতা সন্ধ্যার মতো বসে আছে ; ফিউজ উড়ে যাওয়া কারেন্টের তারে। মানুষ পুড়া আগুন পোহাতে পোহাতে রাত গুলোও উড়ে যাচ্ছে আকাশের দিকে।
আর গৃহবন্দী বধু নিজেকে অনাবাসী ভাবতে ভাবতে— চোখ থেকে খুলে রাখে স্বামীর স্পর্শগুলো, স্যাঁতসেতে বালিশে।নিজস্ব পালক বাড়িয়ে কামনা করে একসমুদ্র জল।
এখন দুপুরের ছাদ অন্ধকার। কিছুক্ষণের মধ্যেই আকাশের কোমর ভেঙে পড়তে পারে। কথাগুলো শোনার পর, পাশের সবাই মুখ চাওয়া-চাওয়ি করলো।আর হঠাৎ পেছনে কয়েকটা আগুনলাগা জীবের গোঙানি শোনা গেলো।
একটি মেয়াদোত্তীর্ণ অক্সিজেন পাইপের গল্প
জীবন থেমে আছে সময়ের মেদে ; কারেন্টের জালে আটকে থাকা মাছের মতোন।স্পিনারের মতো ঘুরছে চোখ— নি:শঙ্ক বাঁচার আকুলতায়।
তবুও চলো,হাওয়ায় দোলানো বেয়াড়া চুলের ঘ্রাণ জিইয়ে রাখি বিলের কিনারে।
বৃন্তের শক্ত বন্ধন ছিঁড়ে যাওয়া বোঁটার মতো— হৃদয় বেয়ে নেমে গেলে দূর্বোধ্য রাত। তোমার খোঁপায় গুজে রাখা নিশিগন্ধায় চেয়ে রবে যে কালের মৃত ভ্রমর ; তার চোখ থেকে কেড়ে এনে স্বপ্ন— লিখে নেব আনুগত্যের নতুন ইতিহাস।
তুমি শুধু উন্মোক্ত করে দিয়ে উজ্জল ভোর,একটু কাছে এসো।আমি তোমার সিঁথি ভরে ঢেলে দেব ফের ; মুঠোভর্তি সূর্যকণা।
নতুন শহরের গল্প
এই নাও হাত। ধরো। এবার চলো হাঁটি। পানের-পিক ফেলা দেয়ালটা অতিক্রম করলেই— নতুন শহর। জোনাকির ডানা থেকে ঝরে পড়া সোডিয়াম আলোয় ভিজে, আমাদের কিছুক্ষণ চুমো'র গন্ধ মাখা গলি-ঘুপচি দিয়ে হাঁটতে হবে। আর আমাদের সাথে ছায়াবেশে আসতে পারে— কিছু অনাকাঙ্খিত মৃত্যু সংবাদ।
মাঝেমধ্যে ঘামভেজা দরজার ফাঁকে শুনবে—চুড়ি আর বিচিত্র হাসির ব্যাকুল ধ্বনি। ফুটপাতে পাতা অসংখ্য সংসারগুলোর মতো,নতুন শহরে পাবে অসংখ্য রঙিন শামিয়ানা টাঙানো সংসার। আর সেখানে প্রদর্শিত হবে হিমোগ্লোবিনের ঘনত্ব। আধুনিকতার ডিজিটালস্ক্রিনে দেখবে ফ্যাশন শো,টকশো’এবং নতুন শহর গড়ার মার্জিতকাহিনী।
আমি নতুন শহরের বারান্দায় বসে,তোমাকে রাতভর শোনাবো ; শহরের চিকামারা-দেয়ালের দীর্ঘশ্বাসের আতঙ্কিত আত্মকথা।