দয়াহীন বেহালার সুর
পাখিটি এক দরিয়া থেকে আরেক দরিয়ায় উড়াল দেয়, আশ্রয় তখন কামলা খাটে জলের ভেতর ।
দিশেহারা চোখ তাকিয়ে দেখে
মাংসের কবরে আকাশ ঢালে জলের সরবত ।
মনের গাফিলতিতে বদলে যায় ফেলে আসা পথের ধুলোমাখা ভাষা,
মনে হলো বিপদে কালো মেঘ আরো ঘনিয়ে উঠেছে!
আকুলতার মধ্যে পরাণ সায় পায় না কথা বলতে
সম্মুখের পথও হয়ে যায় পথহারা।
পাখিটি ভেজা বকুলের মতো তাকায় আমার দিকে
যে চোখে ভাসছে তখন জালিয়ার হাওর,
আকাশ চাঁদোয়া হয়,
বুকের ভিতরে বাজে দয়াহীন বেহালার সুর,
মনে পড়ে,দূরের আভাস সর্বত্র বঞ্চিত অন্ধকার ।
আশা ও বেদনায় কম্পিত হয়ে কোন দিক হয়েছি কিছুই বুঝিনি, প্রতিটি দিক মনে হচ্ছে পবিত্র।
অন্ধকারে সেজদা আমাকে নিখোঁজ করে দিলো,
খুঁজে পাই না!চিৎকার করতে লাগলাম,
ওয়াহিদ, ওয়াহিদ, ওয়াহিদ
হঠাৎ পাখিটি আঙুল তুলে দেখিয়ে দিল
সন্ন্যাসির ভাঙা মন্দিরের সামনে
প্রাণহীন মানুষের দেহ ছায়ার আড়ালে নিদ্রাহীন ।
শূন্যতায় দরদী হয় নিজের ছায়া
আমি সবার কাছে গিয়েছি,
মেঘবতী এক সন্ধ্যায় ময়ূরনৃত্য
থেমে যাবার পূর্ব মূহুর্তে
বুকের ভিতর বিদ্ধ হয়ে আছে এমন
একটি জখম থেকে কষ্টগুলো তুলে
বাতাসের সিন্দুকে ভরে রাখবো
এমন সময় রক্তের উষ্ণতায় রসত্বত্ত্বের
সূত্র আমাকে নিগূঢ় করে চলে গেলো।
স্বচ্ছ পানির ভেতর কখনো মাছটি
আশ্রয় খুঁজে পরাজিত হয় নিজের বিহনে।
আমিও সবার কাছে গিয়েছি,
তারপর মাটিকে পেরিয়ে যেতে
বেদনার নদী ভেবে সাঁতার দিয়েছি
বুঝিনি শূন্যতায় দরদী হয় নিজের ছায়া।
মামাবাড়ি থেকে নিজের বাড়ির দূরত্ব অনেক।
মোটর, উড়োজাহাজ কিংবা পায়ে হেঁটে
পৌছানোর পূর্বেই বাতাসের জোড়া
খুলে যাবে,সেখানে দ্রুত যেতে হলে
মাটির একটি নাও চাই,
নদীটি শুকিয়ে গেছে প্রায়!
নায়ের বুক মাটির স্তনে লেগে মাটি
অনেকটা রক্তাক্ত হয়ে যায়, আর তখনই সে
ভালোবাসা ভালোবাসা বলে চিৎকার করে উঠে।
বলতে পারিনি অন্ধকার ছিলো
সমস্ত চলার শেষে
গাছের শাখায় নুয়ে পড়া প্রেমিক মুখ
সহজে ফিরে আসাকে বচনে বাঁধে।
তাড়না আর জীবন এক নয়,
দুজনেই সময়ের বরযাত্রী,
লোকের সন্ধানে হঠাৎ ব্যাকুল হয়ে উঠে
কপালে পিতার আঙ্গুল,
তবু মাছের কাছে জানতে চাই
কোন এক রাত্রির লোভের গল্প।
শব্দের ভাঙন বড়ই জ্বালা দেয়,
প্রজাপতির মতো শরীরের ঘাম
মুছে দেয় ঘাসের মায়া,
খুব ভিতরে তুমি নেই বলেই
আজো মানুষ পৃথিবীকে বসিয়ে রাখে,
অথচ মনের ক্ষত তোমার
নামটি দিয়ে ভরে দেই, মানুষের
বিবেচনা আমাকে বিফলভাবে আহত করে।
হিম জড়ানো তারাগুলো জ্বলে উঠে
মনের ভিতর জ্বলে অসম্ভবের আলো,
ধ্বংসের উন্মুখ ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে
সে যে সাঁতার জানেনা, তা বেমালুম ভুলে যায়!
মানুষের সহবাসে শূন্য হয়
হাজারো দিনের অপেক্ষিত গোধূলী বেলা,
কোথাও আর যাওয়া হয় না আমার,
প্রতিটি সুবেহসাদেকের সময় অনাগত
ভোরকে উনুন থেকে সদ্য তোলা
রুটির মতো ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাই।