কবিতাগুচ্ছ ।। রেজাউল কারীম
কবিতাগুচ্ছ ।। রেজাউল কারীম
এমনও হয়
এমনও হয় মাঝে মাঝে
প্রত্যাখান করি পৃথিবীকে।
আকাশের চোখে একে দিই
ধুন্ধুমার শিল্পকলা।
দক্ষিণের কপিশ তুলে রাখি উত্তরে।
বয়ে নিয়ে যাই টেবিলের নীচে জমে থাকা
বিরলপ্রজ বরফখণ্ড।
স্বরবৃত্ত সুইয়ের মুখে নিলামে তুলে দিই
পৃথিবীর সমস্ত বোতামহীন জামা।
দানোয় গিলে ফেলা মাতাল আত্মকেন্দ্রিক
গণতন্ত্রকে চাপড়াতে চাপড়াতে বলি:
“মোতে দে শালা মোতে দে সারা শরীরে,
আরও বেশি নষ্ট করে দে
অবশিষ্ট যাতায়াত।”
এমনও হয় মাঝে মাঝে
কী রকম দ্রুত বদলে যাই-
ফিনফিনে বাতাসের সযত্ন বন্দরে।

কথার আয়ু
নিশ্চিত কথাটা শুনতে পারেন।
বলা যায় আপনাকে।
কতদিন কথা বলেননি নদীকে
অথচ নদী কালও কথা বলেছিল
বারান্দায় একটুখানি।
কতনা কথা বলেছেন ছেলেবেলায়।
ধীরে ধীরে ঘরে-বাইরে হাটে-বাজারে
কমে আসছে কথাগুলো।
কথা বলা কমিয়ে দিচ্ছে সবাই।
মুখের সুদূর থেকে উড়ে যাচ্ছে
কথার বাটারফ্লাই।
কথাটা শুনতেই পারেন।
বলা যায় শুধু আপনাকে।
'তবে কাছে আসুন, শুনুন,
-এত কথা আর বইলেন না।'-
জানেন তো-
কথাগুলোরও একটা আয়ু আছে
ফিনফিনে শাড়ির মতো
ম্যাচবাক্সের মতো।

আগুন চিবুক
পাড়ায় পাড়ায় ঘুরব।
শহরে শহরে দেখবো সিনেমা।
আকাশ অব্দি উঠিয়ে দেবো
দরোজা-জানালা, সীমানা প্রাচীর।
ঘুমের পাহারা টপকে চলে যাবো
জলেদের ঘুমে, অসুখ-বিসুখে।
তবুও যাবো না তোমার কাছে।
শুধু চুমো খাবো আগুন চিবুকে…

অভিমান
কিছুই বলিনি আজ।
চুলের মানচিত্র এঁকেছি
উপুড় করে আকাশ।
ডুব দিয়েছি ভেতরে ভেতরে
এখানে ওখানে।
ঘাড় তুলে দাঁড়িয়েছিল
অভিমান।
অভিমান! হা-হা-হা।
অভিমান!
সিঁড়ি দিয়ে ওঠে,
সিঁড়ি দিয়ে নামে।
অভিমান!
ঘরে-বাইরে ব্ল্যাকআউট।
পুরোনো শরীরে ব্ল্যাকআউট।
অভিমান!
বুকের বাম পাশে বিরলপ্রজ নীল ঘুণপোকা।
ঘুমের শহরে যান্ত্রিক ত্রুটি।
(এই) অভিমান
আসলে পথ চিনে না।

সাবস্ক্রাইব করুন! মেইল দ্বারা নিউজ আপডেট পান