পুনঃপুন আলিঙ্গনে
আমাকে দুহাত ভ’রে নিস্তব্ধ কবরের মত
একটা রাত্রি দাও
আমি পুনর্জন্ম নেবো
নির্জন মৃত্যুর পুনঃপুন আলিঙ্গনে
একসূর্য ওম জমে আছে আদরের মুখে
নিস্তব্ধ রাতে আদরের রাজদরজা সহসা খুলে যায়
পুনর্জন্মের জন্য আলিঙ্গনের মৃত্যু খেলায়
রাতের কবরের কাছে দু’হাত পেতে বসে আছি
একটা সূর্যভোর রাতের কানে এসে
কুয়াকাটার মত ডাক দিয়ে যায়।
বায়োস্কোপ
লিঙ্গহীন একটা বাক্স একদিন
আচমকা এক নির্বাক বায়োস্কোপ হয়ে গেল
সবাক শিশুরা নির্বাক দৃশ্য দেখতে দেখতে
বয়েসীদের দিকে বিস্ময়ে তাকালে
আচম্বিত আকাশ কেঁপে
বজ্রপাত ঘটলো বয়েসীদের শরীরে!
বয়েসীরা পুড়ে যাওয়া শরীরে
এক একজন নিজ নিজ লিঙ্গ খুঁজতে
এক’শটা করে হাত কাজে লাগালো!
শিশুরা হো হো করে হাসছে আর হাসছে
বায়স্কোপওয়ালার চোঙ্গা থেকে বেরিয়ে আসছে
বিকৃত শব্দের হাসি
বেতালে বাজছে তার ঝুমঝুম খঞ্জনি।
বায়স্কোপওয়ালাও জানে না
কত যুগ আগ থেকে
তার লিঙ্গটা জাদুঘরে রাখা আছে।
ফেরিওলার ডালা
শহরের ফেরিওয়ালা উত্তরে গেলে
মৌসুমি চাঁদ ওঠে দখিন আকাশে
চাঁদের শরীর বেয়ে নেমে আসে বিশীর্ণ তর্পণ
মানুষের আঙ্গিকে বিপন্ন ঢল নামে দৃষ্টিহীন রাতে
আকাশের বিষণ্ণতায় বেজে ওঠে অতিমারী দুখ।
ফেরিওয়ালা, ফেরিওয়ালা কই
শহর পুড়ছে জ্বরে!
কাচে ঘেরা শহরে কত না দেয়াল
কত না অসুখ!
কখনও কী ফিরবে সুখ ফেরির ডালায়?
ও ফেরিওয়ালা... ফেরিওয়ালা
কবিতা প্রেম চায়
একটা কবিতাকে
শ্রাবণের বর্ষায় ভাসিয়ে দিলাম
দেখি, অবিরাম জলের ঘুর্ণিতে
সে পানকৌড়ে হয়ে গেলো।
কবিতা এখন জল চায়
জলেপূর্ণ বিল চায়
শাপলাপূর্ণ রঙ চায়।
গোটা জল, বিল খলখল
পানকৌড়ি শুধু বর্ষা চায়
বর্ষা কবিতা চায়
কবিতা প্রেম চায়
ও প্রেম, তুমি বর্ষা হও
তুমি পানকৌড়ি হও।
পানকৌড়ির টুপ করা ডুবে
জলের ঠোঁটে টোল ফেলে
এবার না হয় শরৎ হয়ে যাও।
চঞ্চল ইঁদুর
একা একা। দুর্বোধ্য রাত। মৃতপুরী সিঙ্কহোল।
মৃত্যু নিথর রাত। স্বপ্ন নয়, জাগ্রত নয়।
চঞ্চল ইঁদুর। কুট-কুটুস হৃদমাত্রা।
ক্ষুধার্তের হাহাকার। চাবুকের শপাং শপাং।
বেদনাহত শুশ্রূষাহীন। লাশকাটা ঘর।
কালো কালো অসংখ্য বিড়াল।
অশরীরী রেডিয়াম চোখ।
জোহা হল। নারীর তীব্র চিৎকার!
টর্চার সেল! আলোহীন বদ্ধঘর।
গোঙানি কাতরানো। কালাপানি স্বর।
সারমেয় কুকান্না। অতৃপ্ত নিঃশ্বাস।
শ্মশানের বাতাস। দানবীয় শিস। পোড়া গন্ধ।
একা। একা রাত। ঘুমহীন, বিভৎস অপেক্ষা।