তোফায়েল হোসেন-র কবিতাগুচ্ছ
তোফায়েল হোসেন-র কবিতাগুচ্ছ

নিষেধাজ্ঞা 

আজ থেকে গোলাপ বাগান বন্ধ ঘোষণা করা হলো। আর কারো বাগানে গোলাপ ফুটবে না। যার বাগানে গোলাপ ফুটবে তাকে- খুন করা হবে।

প্রিয়তমার জন্য কীভাবে গোলাপের যত্ন নিতে হয় তা দেখে যেও আমার বাগানে এসে। পৃথিবীতে একটাই বাগান যখন অবশিষ্ট।।

বুকের গোরস্থান/ ১

প্রিয়ার বুকের গোরস্থানে মরলে থাকবো লাশ হয়ে
থাকলে বেঁচে থাকবো যে তার ঈষৎ উষ্ণ শ্বাস হয়ে
ওগো দয়াল......
এই ইচ্ছেটা করতে পূরণ একটা সুযোগ আমায় দাও
তারপর তুমি দুঃখ দিলে ইচ্ছে মত দিও
সবই যাব সয়ে.....

এইনা ভবে চাইনা আমি হীরে মানিক পান্না
চাইনা আমি বন্ধু বিনে দুই চোখেরই কান্না
পথেপথে দিন কাঁটাবো রাত কাটাবো বনে,
ও দয়াল...একটা চাওয়া তোমার তরে
বাঁচলে যেন তারই থাকি মরিলে তার সনে।
তারপর তুমি দুঃখ দিলে ইচ্ছে মত দিও
সবই যাব সয়ে.....

সেই বুঝে গো যার হয়েছে হৃদয় ফালা ফালা
বন্ধুহারা সাথীহারার মনে কত জ্বালা
প্রেমের আগুন পাগল মনে ধিকিধিকি জ্বলে
ও দয়াল... বাঁচি আমি কী করেগো
তারে পাব কী করেগো দিও আমায় বলে
তারপর তুমি দুঃখ দিলে ইচ্ছে মত দিও
সবই যাব সয়ে.....

ঘাসফড়িং


বাংলাদেশে
সবুজেরই সমাবেশে!
উড়ে চলে পাখিদের ঝাঁক সে অনন্য,
যুগেযুগে জন্মে কত শিল্পী কবি হলো ধন্য।
কবিতা ও গানেগানে ভালোবাসা তাদের জন্য,
ছবির মতো আঁকা দেখি সাজ- অনন্য !
জোৎস্না তাঁরা উঠে হেসে
স্বপ্ন বেশে!

হলদে মাঠে
দুরন্ত সব কিশোর হাঁটে।
উড়ায় ঘুড়ি- ঘাসফড়িং এর পিছু ছুটে
মায়ের আদর বাবার শাষণ কখনও যে ভাগ্যে জুটে।
দিনের শেষে ক্লান্ত শরীর তবু মুখে হাসি ফুটে
দাদীর কাছে গল্পগুলো ঘুম যে লুটে।
সূর্যিমামা গেলে পাটে
নদীর ঘাটে।

প্রভাত আলো
দেয় সরিয়ে রাতের কালো,
পুব আকাশে সূর্যকিরণ জ্বলার আগে
গাঁয়ের চাষীর লাঙল কাঁধে ছুটতে মাঠে- বেশ তো লাগে!
কুয়াশারই বুক চিরে যায়- মাঠে চাষী পৌষ ও মাঘে।
বসন্তেরই আগমনে সবুজ বাগে
ফুলের কলি জ্বালায় আলো
লাগে ভালো।

অসময়ের কথা


গণমানুষের কথা বলার মানুষ কি নেই আর?
আছে, তবে-
অধিকার নিয়ে বললে কথা রক্ষা যে নাই তার!
বলতে হবে-
বললে হবে-
দেশদ্রোহী বিদ্রোহী সে সন্ত্রাস কিংবা জঙ্গী
যাবেই ফেঁসে এমন হাজার কূটকচালে
তুলবে ছবি-
ছাপবে ছবি-
উঠবে রবি, পত্রিকাতে নানা ক্যাপশন, ভঙ্গি।

মানুষ কি নেই আর?
মানুষ আছে, তাদের কিছু দানেরও দরকার।
ওই যে কত অনাহারী-
পথের ধারে, উদ্যানেতে উদোম গায়ে খাচ্ছে গড়াগড়ি,
তাদের জন্য কে ই বা কোথায়
ঝড় তুলে আর জনসভায় বক্তৃতাতে হাত উঁচিয়ে মানুষ বলে?
কোমল হাতের পরশ দিয়ে-
লোভ ছাড়া লাভ না মিলিয়ে-
ভুখা থেকে শুকনো ঠোঁটে দিচ্ছে এনে স্বপ্নভরা হাসি?
খুনোখুনি হানাহানি-
তারচে যে ক্ষমতাটা অনেক বেশি দামী,
পাষাণ যেন বুকের ভিতর,
বাহির সেও আগুন জ্বলা
আগুনগোলা যায় ছড়িয়ে কথার- রাশিরাশি।।


সাবস্ক্রাইব করুন! মেইল দ্বারা নিউজ আপডেট পান