বিতস্তা ঘোষাল এর কবিতাগুচ্ছ
কবি - বিতস্তা ঘোষাল
একান্ত গোপন
কিছু কিছু ব্যথা একান্তই গোপন
শখ করে আনি, কিছু সোনালী রোদের প্রত্যাশায়
ডানা মেলে, কিছু জামাকাপড়ের ভাঁজে বন্দী
পায়ে পায়ে পথ খোঁজে , হৃদয়ের গভীরে
ঢেউ তোলে,
শাল পিয়ালের বনে যেতে যেতে
সেই ব্যথাগুলো দেখেনি একবার
তারপর হেঁটে যাই দিগন্তর দিকে।
মান-হুঁশ
আমার কোনো দেশ নেই
আমার কোনো ধর্ম নেই
নেই কোনো জাত
নেই মান নেই হুঁশ
আমি গাছের তলায় দাঁড়িয়ে
বৃষ্টি ভিজি, গলা খুলে গান গাই
চাঁদের আলোয় স্বপ্ন দেখি
শীতে কাঁপি , গরমে ঘামি
হাত পা ছড়িয়ে রাস্তায় শুয়ে ভাবি
ভাবতে ভাবতেই ভোর হয়. .
আমি জেগে উঠে হাঁটতে থাকি
নতুন গ্রহের সন্ধানে. . .
ত্যাগ
আকাশের মত উজ্জ্বল হোক
এই প্রেম
মেঘের আড়ালে ঢাকা থাক
জাগতিক চাওয়া -পাওয়া
প্র়থম বৃষ্টির কদমফুলের
রেনু ছুঁয়ে নেমে আসুক
কান্নারা
তারপর পৃথিবীতে জন্ম নিক
হিরন্ময় ভালবাসা
প্রত্যাশা
অবশেষে অন্ধকার গলি শেষ করে
আলোকজ্জ্বল পথে
পথটা সোজা ছিল না
এই পথেই শুনেছি ধর্ষিতার কান্না
দেখেছি নগ্ন পিঠে ক্লান্ত শরীরের হুম্ না
বুঝেছি মানবতা বলে কিছু হয় না
বস্তা পচা প্রেমের গল্প থাক এখন
আমি- তুমি ছেড়ে আলো মাখি
পুড়িয়ে দিই মনের মলিনতা
তারপর না হয়...
পরিযায়ী
প্রতিটি মুহূর্তে ভেসে চলেছি
এক ঘর থেকে অন্য ঘর
এক উঠান থেকে অন্য বারান্দা
এক পাড়া থেকে অন্য পাড়া
ঘুরে চলেছি উত্তর থেকে দক্ষিণ
পশ্চিম থেকে পূর্বে . . .
ভাসতে ভাসতে বিদ্রোহ ঘোষণা করি।
কলম তুলে নিই হাতে।
লিখতে চাই -
একদিন ঠিক
ফিরে আসব তোমার কাছে
কত কথা কত বিষাদ কত অভিমান
অভিযোগ
জমে আছে বুকের বাঁ পাশে
বাদামি তিলের মতো সেখানে
উজ্জ্বল হাজিরা তোমার
তুমি হাত ধরলেই
থিতু হতে পারি।
ভীতু কলম লেখে -
নিয়তি কেবল ভেসে যাওয়া
উজান থেকে ভাঁটায়
নদী থেকে সমুদ্রে
এদেশ থেকে পরদেশ
আমি কলম ছেড়ে চোখ
বুজে নিই
নিশ্চিন্তে সেখানে
তুমি অপেক্ষায়