কবি : মানিক বৈরাগী
দ্রোহ মিছিলের ডাক
মোগল দিনের পরিত্যাক্ত ইট সুরকির দালানে
একটু ভালো শোবার ঘর।
ধুলিমাখা মেঝ,সিগারেটের ছাই-পাশ,তরকারি-ডিমের খোসা,মাকড়শার জালে ঘেরা ভাঙা জানালা
রঙপোড়া ভাঙ্গা খাটে ছেঁড়া বিছানা
অগোছালো জামা কাপড় আ-ধোয়া
যত্রতত্র বই,পত্র-পত্রিকা,খাতা-কলম সবখানে
এমনি নোংরা পরিবেশে
তুমি এসেছো আলতা রাঙা নগ্ন পায়।
ভ্যাঁপসা, পুতিগন্ধে নাকে টিস্যু রেখে
ছারপোকার দখলকৃত বিছানায় বসেছো
সামন্ত কুমারী অনায়াসে।
রম্য করে,চপল চাহনিতে,টুকটুকে লাল ঠোঁটে বলতে পারো
অগোছালো, বিশৃঙ্খল, পুতিগন্ধময় শোবার ঘরখানি মনেহয়
সুন্দর
মনোরম
ভালোবাসায়
বিপ্লবী চেতনায়।
নির্জনে বাসকরে আগামীর চে গুয়েভেরা
এখানে কবিতা লিখে হোচিমিন
এখানে গল্প লিখে তলস্ত
এখানে বসে পাঠচক্র, পরিকল্পনা হয় শ্রেণী যুদ্ধের।
কমরেড
এই কারণে তোমায় ভালোলাগা,ভালোবাসা
শার্টের বোতাম খুলে লোমশবুকে
হলুদরাঙা মুখটি রেখে ফিসফিস শব্দমন্ত্রের উচ্চারণে
কোমলে কঠিনে
যদি আমায় পেতে চাও
গণমিছিল শ্রেণী সংগ্রামে
তবে একটু আলস্য ঝেড়ে,পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হও
বিপ্লবে
সুস্থ সবল,যোদ্ধার প্রয়োজন।
এনজিও ফড়িয়া
ঠিক
ডানা খোলার সময়, বাতাসি জানেনা সময়ের রুচিবোধ আছে কিনা! রোদ্রের সাথে সময়
উড়ে আসে ভেঁপু বাজায়,আমপাতা জোড় করে বৃষ্টির গান বাজাতে ভাল্লাগে।ইদানিং
বৃষ্টিরা কোন নিয়ম মানেনা।সময়,বৃষ্টি-রোদ,এদের শৃঙ্খলিত করা
প্রয়োজন।হিমালয়ের বরফ অতিমাত্রায় গলছে,নূহের প্লাবন হবে।
এই সব বিষয় সাংসদ মন্ত্রী মহোদয়কে অবহিত করা প্রয়োজন।পাহাড় নদী প্রাণীকুল, আদিবাসী, দেশীবৃক্ষ,উদ্ভিদ আন্তর্জাতিক সেমিনার দরকার।
মাননীয়
মন্ত্রী মন্ত্রী মহোদয় আপনার নির্বাচনী এলাকায়,আমি এলজন আত্ম উন্নয়ন
সেবী,উপরোক্ত বিষয়ে আপনার গোবর মস্তিষ্কে প্রতিস্থাপনের জন্য হরিণ, দুটি
বালিহাঁস আপনার উপাদেয় খাবার হিসাবে---।মহোদয় এই ক্ষুদ্র উপঢৌকন দয়া করে
গ্রহণ করুন।জনাব আগামী সংসদ অধিবেশনে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে জীববৈচিত্র
সংরক্ষণের লক্ষে একটি বিল উত্থাপন করুন।দেখবেন রাতারাতি দেশিবিদেশি মিড়িয়ায়
তুলপাট সৃষ্টি হয়েছে,বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ,এডিবি কোটি ডলার ঋণ দিয়ে দেবে।
স্যার,আপনার
শালাবাবুর দ্রবণ সংস্থা ও আমাদের মর্দন সংঘের যৌথ উদ্যোগে লাগসই প্রকল্প
প্রস্তাবনা এনেছি।কর্ম এলাকা আপনার মনখীরা সংসদীয় আসনে আর সচিব মোহদয়ের
ধনখোলায়।অত্র এলাকার দরিদ্র জনগণ আমাদের উপকারে আপনার ভোট বাড়বে।
জলবায়ু
পরিবর্তনের প্রভাবের ফলে এখানে দারিদ্যতা বাড়ছে,ডানাখোলা মৈথুন সময়ে
আপনাদের উন্নয়নের লক্ষে দ্রুত সঞ্চয় করুন।আগামী বর্ষায় উন্নয়নের জোয়ারে
ভাসবে স্বদেশ।
অভিমান
এ ক'দিন বইয়ের মলাটে জমেছে ধুলো
পিচ্ছিল মেজেতে পা ফেলা দুস্কর
হাত ফস্কে ভেঙ্গেছে চশমাটি
চিকা, ইদুর, তেলা পোকার দখলে রান্নাঘর
শৌচালায়ে যায় না ঢুকা,রি রি করে গা
এক বেলা খেলে দুই বেলা অবহেলা
এখন বুঝি, তুমি ছাড়া যাপন চলে না
থাক যখন, হই হুল্লোড় হতো ঝগড়া
দরোজা জানালা,আলনা ও ছাটে
মাকড়শা'র রশি ঝুলছে
মাথায় পড়ে টিক টিকি, তক্ষকের বিস্টা
কেমন যেন মনটা মরা,দিন চলে না,রাত কাটে'না।
কত দিন হলো আয়নার কাছে যাই'না
দাড়ি গোপে জঙলী মানুষ,এসেই দেখো
পাগল ভেবে ভয় পেয়োনা যেনো
কসম করে বলছি,আর হবেনা ঝগড়া
কোন
কলম খানি কোথায় ছিল,কোন খাতা টি কোথায়
হয়নি লেখা একটিও বাক্য,গীত হয়নি সুর
থাকো তুমি পাশে,হইযে রাবন, রাধার কানু।
২৭ডিসেম্বর ০১৭
রাজনীতি
এসেছে শীত
ব্যথায় কন কন,ভঙ্গুর হাড় কড় কড়,পেশি ঠন ঠন
শৈল্যবীদের উদার প্রেস্ক্রিশন
সবুজ চায়ের সাথে দুই টেবিল চামচ ওয়াইন মিশ্রন
বিধি ও বিধানে হালাল ও হারামের নেই পরিমাপ
অন্য পৃষ্টায় লেখা আছে জীবনের মাপ ঝোক
আমি,ঔষুধি কবিরাজের নাতী
উত্তরাধিকার সুত্রে তা জানি
আল কেমির সাগরেদেরা নিম রাজী
মাদুলি বিহিন পকেটে
শুভার্থিরা আসে না নিকটে
ব্যথার যন্ত্রনা সয়ে যাই নিরবে
জানি আমি, জানে আমার দেহ
জেগে থাকে রাত,পড়েনা পলক চোখে
চার দেয়ালের জেল খানায়,ফি বিহিন
নিরব হজমের, প্রশিক্ষণ কোর্সে
আমিই চৌকশ শিক্ষার্থি
খিল লাগাও দাঁতে দাঁত
মগজ সচল যতক্ষণ
নিশ্বাস বন্ধ,প্রতি বাড়ি প্রতি ক্ষণ
পেশি করো টাইট,মুষ্টিবদ্ধ হাত
আঁধার চোখের ঘোলাটে চাহনি
নিথর দেহে আমি কিছু বুঝিনি
বেশ নিয়ে নিলো জবান বন্ধি
আদর্শ অলিক বাস্তবতা
নীতি, নৈতিকতা সুদুর পরাহত
সুগন্ধি আতর মাখা কালো কোট
জরির নকশা আঁকা কাশ্মিরি শালে
অনুদানের ট্রেড়মার্ক সিল জ্বল জল করে
পা নাচায় মঞ্চে বিজিত শকুন,নেতার আস্কারায়
ধুর শালার মান্দার চুত রাজনীতি