মোহাম্মদ হোসাইন এর কবিতা
গুডবাই
থাকো
আরও কিছুদিন। বেলা পড়ে আসুক, ঠাণ্ডা ঠাণ্ডায় যাওয়া যাবে, ধীরে, সুস্থে।
চায়ে চুমুক দিতে দিতে দিতে, পাশের পিয়ানো বা গিটারে টুং টাং তুলে নাও
হাছনের কিংবা লালনের কিংবা মরমী কবির কোনো গান। মাটি থেকে তুলে নাও মাটির
মমতা আরও কিছুদিন, ফুলঝুরি থেকে ফুলের সুঘ্রাণ। কেন এত উতলা হয়েছ?
বেলাবেলি, হবেনে সব সব!
এখনোতো
ছোটটিই রয়েছো, যদিও গায়ে গতরে বেড়েছো সটান, তবুও, তবুও স্নেহধারা হয়নি
নিঃশেষ। আরও কিছুকাল হাসাহাসি করি, জোরেজোরে দম নিই।চলো প্রিয় যারা রয়েছে
দূরে কিংবা কাছে, তাদের সমুখে বসাই, পুলি পায়েস খাই, সমুচা, সিঙারা শেষে হৈ
হৈ রৈ রৈ করে সময়ের কাঁধে হাত রেখে বলি, গুডবাই, গুডবাই!
সময় নাড়ি টিপে দিচ্ছে
মানুষ বাড়ি কেনে, বীমার দরকার
মানুষ গাড়ি কেনে, বীমার দরকার
মানুষ জমি কেনে, বীমার দরকার
বীমা কোম্পানীগুলো ইনিয়েবিনিয়ে
বীমার মাহাত্ম্য তুলে ধরে
'ইহকাল, পরকালও বীমা ছাড়া চলেনা'
আমি মাথা নাড়াই, দেখি নারকেল গাছের পাতা ঝিরঝির বাতাসে দুলছে
শ্যামাঙ্গী মেয়ের ধরনে চেয়ে আছে জুঁইফুল। বীমার কাগজগুলো তখন বেশ নাদুসনুদুস লাগে, চারুচারু লাগে!
একদা
মায়ের নাকফুল চিকচিক করতো ভোরের আলোয়
এখন দুঃখ চিকচিক করে
একদা বাবার হাসিটিকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ মনে হত
আজ সবই বেদনা বেদনা লাগে
বীমা কোম্পানীর কাছে বন্ধক রেখেছি আমার প্রাণ
এখন নির্ভার সাঁতার কাটছি
দুঃখরা ফিরে যাচ্ছে
মৃত মানুষগুলোও ফিরে যাচ্ছে
আমি বীমা কোম্পানীর কাগজ নিয়ে বসে আছি। কালোপাখনায় উড়ে যাচ্ছে দাশমাছি
আর সময় আমার নাড়ি টিপে দেখছে!