কেউ কথা রাখেনি
অধিকারের সংগ্রামে রক্ত ঝরে
খুলে গেল মুক্তির দরজা
সিঁড়ি বেয়ে নেমে এলো একাত্তর
স্বাধিকার হয়ে গেল স্বাধীনতা
দাসত্ব নয়, মুক্তি চাই শ্লোগানে শ্লোগানে
সবুজের বুকে উঠেছে রক্তিম সুর্য
পাকিস্তান ভাঙার যুক্তির দেয়াল ভেঙেছে
এক বুক রক্তে
মুক্তির জয়গানে
বন্দুকের নলের মুখে ভেসে ওঠে
মায়ের মুখের প্রতিচ্ছবি
নেমে এলো মুক্তিকামী জনতার স্রোত
দেশজুড়ে প্রতিবাদ প্রতিরোধ সংগ্রামে
গণসংগীত বিদ্রোহী গানে
উজ্জীবিত হলো বঞ্চিত বাঙালিরা
উত্তাল বাংলার প্রান্তরে
কালো রাতের গণহত্যা
দমাতে পারেনি স্বাধীনতার দাবি
নয় মাসে রক্তাক্ত মুক্তিযুদ্ধে
অজস্র শহিদের রক্ত বীরঙ্গনার ইজ্জতের বিনিময়ে
পেলাম স্বাধীনতা
ঝলছে যাওয়া রুটিতে লাল সবুজ রঙে
একটি দেশ এবং একটি মানচিত্রে
অঙ্কিত হলো বিজয়ের পতাকা
স্বাধীনতা তুমি
মুক্তির সাধে চার বাক্যের অক্ষর পেলেও
পাওনি তুমি অধিকার
তোমায় দেয়া কথা খেয়েছে লুটোপুটি
স্বার্থের বাজারে আজ তোমায় বানিয়েছে পণ্য
কারিগরের তালিকা
বার বার কেটেছেঁটে
তৃপ্তির ঢেকুর তুলে
সময়ের রাজাকার হয়েছে ধন্য
স্বাধীনতা তুমি
কেজির ধরে হয়েছো বিক্রি
তাই, বিজয়ের তৈলচিত্রে
বিজিত ফানুসের খোলসে
সেজেছে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ
লজ্জায় মুখ লাল হলেও
বলতে পারোনা তোমার কথা
তুষের আগুনে পুড়লেও
গাইতে পারোনা বিদ্রোহী গান
মুক্তবুদ্ধির চর্চা উঠেছে শিকেই
বাক স্বাধীনতার পায়ে পড়েছে শিকল
মিথ্যা স্বপ্ন বুকে নিয়ে
তবুও আমি গাই শিকল ভাঙার গান
কথা রাখবে বলে কথা দিয়েছিল সবাই
মুক্তবাকের সমঅধিকার
মিনিট ঘন্টা দিন মাস
পেরিয়ে গেছে বছরের পর বছর
কথার পসরা সাঁজিয়ে
সভা সেমিনার মাঠে ময়দানে
হয়েছে শুধুই গলাবাজি আর ফাঁকা বুলি
মাকে দিয়েছিল কথা,সাধের স্বাধীনতা
৪৮ বছরেও ৪৮ শব্দও রাখোনি কেউ
স্বাধীনতা তুমি ডুকরে কাঁদো বুকফাটা আর্তনাদ
স্বাধীনতা তোমায় কথা দিয়েছিল
কথা রাখেনি কেউ
সারথী
কথা অসমাপ্ত থেকে গেল
ভেঙ্গে গেল গল্পের স্বপ্ন
কবিতাও শুক্রবার বাড়ী গেছে বিনা নোটিশে
অদৃশ্য ভুতের মতো।
নীল খামে লেখা চিঠি, মেঠো ফোনের বাটন টিপে খুদে বার্তা, চোখাচোখি দেখাদেখি, হয়নি কখনও মুখোমুখি
ইশ্বরের ইচ্ছায় তবু পরিচয়।
পরিচয়ের যুগ সুত্র কবিতার পংক্তিমালায়
পাশাপাশি কাছাকাছি এসেছি দু'জনে
কবিতার মেলবন্ধনে।
মাঝখানে সীমান্ত রেখা
বন্দুক তাঁকে করে থাকা শকুনী চোখ
আর কাঁটাতারের বেড়া মানেনি বন্ধন
অদৃশ্য মায়ায়।
অবশেষে এসেছে বাঁধ ভেঙ্গে
পাতার বাঁশির সুরে সুরে
আলাপনে আলাপনে কথামালায়।
দুজনেরই বন্ধু সন্ন্যসী নেশায় মত্ত এক কবিকে নিয়ে
স্বপ্ন বুনেছি সারারাত
কথার কথক নাচে
চোখে চশমা,হাতে মোবাইল
কথার ঢেউ খেলা শরীরে
ঘুমিয়ে পড়েছিলাম
ওপারে সারথী.. কে জাগিয়ে
কথার প্রতিমা
কথা ছিল।
কে বলবে সেই কথা!
কথা নিয়ে টানাপোড়েন;
কথাতে জয়, কথাতেই ক্ষয়
কথাতেই সব হয়।
কথার পিঠে চড়েছি
চাবুক মেরেছি ঠোঁটে
একবিন্দু শব্দবাক্য
রুপান্তর হয়নি কথায়।
আমায় কথারা কথা দিয়েছে
কথা আসবে
দখিনা হাওয়ায় চড়ে
জানালার ফাঁক গলিয়ে
কথা আসবে
সোনালি ধানের শিষ দুলিয়ে।
কবি কলম হাতে ডায়েরি নিয়ে বসেছে
ঝাউগাছের তলে,
কথার প্রতিমা সামনে রেখে
লিখবে কালজয়ী কবিতা।
কথা আসেনি, কবিতারও জন্ম হয়নি তাই।
তবু আশায় বেঁধেছি বুক
কথা আসবে কথার নৌকায় চড়ে
কাশবনের পাশ দিয়ে
অ আ ক খ ধ্বনি তুলে।