শামীম আহমদ ।। পাঁচটি কবিতা
শামীম আহমদ ।। পাঁচটি কবিতা
ফ্রস্টের কবিতার মতো

জীবন জীবনের মতো বয়ে যায়
দিনের শেষে হিজলের ঝালর বেয়ে নামা রাত্রি
যেমন জেগে ওঠে অন্ধকারে! ঠিক রাতের মতো ।
নিসর্গ সঙ্গি করে পথে নামি
ফ্রস্টের মতো -
পথে যেতে যেতে যখন পথ দ্বিখণ্ডিত হয়
বেছে নেই পথ,যে পথ জনস্রোতের বিপরীতে হাঁটে ।

রাত্রির বীজ

ইন্দ্র পালক ছড়িয়েছেন নারাঙ্গি বনে
আকাশ খামচে ধরেছে তাঁর সন্তানের লাশ !
বহুকাল আগে কে যেনো রাত্রির বীজ বুনেছিল
মেরুঅঞ্চলে
এ খবর রাখেনি কেউ লিখে
দিনের শেষপ্রান্তে আমাদেরও ঘর ছিলো একদিন
এখন আঁধারের সাথে যুদ্ধ করে মানবতার যবনিকাপাত …

মৃত্তিকার , অন্ধকার চাষ

যে পাতাটি ঝরে গেলো আজ
রেখে গেলো সে পৃথিবীর কাছে তার,
আবার ,পল্লবিত হবার অধিকার ,নতুন আয়োজনে ;
এই পাতা-ঝরা হেমন্তে
বৃক্ষগুলো লাল হলো লাল থেকে ধূসর ,
বিচ্ছেদ বেদনায় ।
যে পাতাটি ঝরে পড়ে
মৃত্তিকা বুকে নেয় পরম মমতায় ।
নাড়ী ছেঁড়া টান কিঞ্চিত আছে’তো শোক
কিন্তু আমিতো দেখেছি
শোকের মূর্তমান সেই নৈসর্গিক লাবন্য ধরা
চক্রবাল ভরে ওঠা সোনারঙ,দিগন্তহারা ভিউকার্ড
প্যারালাল ছবি ! সারিসারি বৃক্ষ
গোধূলির মতো ঈষৎ লাল ,নিষ্কলঙ্ক রূপ ।
যে পাতাটি ঝরে পড়ে ,বৃক্ষের বিসর্জনের বেদনাই হোক
তবুও বৃন্তখসা পল্লব রক্ষিত রেখেছে পৃথিবীর কাছে
শতগুণে ফিরিয়ে দেবে এটাই অঙ্গীকার প্রকৃতির ।
প্রকৃতি আপন খেয়ালে চলে ,মাটির তৃষ্ণা পেলে -
মত্ত বাদল খুলে ধরে দ্বার,মৃত্তিকার ,অন্ধকার চাষে …

অন্তহীনের অন্তমিলে

কবিতারাও ক্ষুধার্ত ,চাতকির মতো তৃষ্ণা যেনো ভিড়ের পথিক ,
চোখভরা আশা যার ,অন্তহীন অন্তমিলে ছুটোছুটি দিগ্বিদিক ।
আমি চাই শুদ্ধ কিছু ,এই রুগ্ণ সন্ধ্যায় সুপ্রসন্ন এক-দ্যুতি ,
অসীম আকাশ জুড়ে ,প্রস্ফুটিত হয় যদি অপরূপ অরুণদ্যুতি ।
চাইনি’তো কিছু ভুল ,চাওয়াই সত্যি হোক মানুষের প্রয়োজনে ,
পাষাণ জরায়ু ভেঙে ,জেগে উঠুক আত্মারা সময়ের সন্ধিক্ষণে ।

তরী

হাওয়ার মাঝে দোদুল্যমান তরী
মাস্তুল ধরে কাঁপছে মাঝির হাত
ছায়ার মাঝে ভাসছে পুরা নদী
নদীতো নয়
যেনো জীবনের স্বচ্ছ ধারাপাত।


সাবস্ক্রাইব করুন! মেইল দ্বারা নিউজ আপডেট পান