শুক্লা পঞ্চমী এর কবিতাগুচ্ছ
বিপ্লব
এক চিলতে রোদ্দুরে তোমার অবয়ব
কবিতা লিখতে গিয়েই দেখি ভাসে বিপ্লব।
দেখি হেঁটে যাচ্ছে মিছিলের সারি, কলরব কি কলরব
আকাশে বাজ পড়ে ন্যুব্জ হয়ে পড়ছে বৃষ্টি, জবজব!
আমি আর কি করি উঠলাম তড়িঘড়ি, ঘড়ির কাঁটায় সময়ের রব
যাচ্ছে মিছিল বাড়ছে মানুষ, বলছে; বিপ্লব বিপ্লব ঐ দেখো যায় বিপ্লব।
আমি বলি বিপ্লব বুঝি খুব চেনা? সবাই বলে না না না কক্ষনো না
তাহলে বিপ্লব কি কোন তালবাহানা? সবাই বলে না না না কক্ষনো না,
তাহলে?
তাকে দেখতে হলে, বুঝতে হবে জমতে হবে ভাঙ্গতে হবে
কি? কি?
রাষ্ট্রের নমুনা
নমুনা?
ভাঙ্গা যন্ত্র বাসি মন্ত্র কুঁড়ে তন্ত্র
রুখতে হবে ঢাকতে হবে ভাঙ্গতে হবে
রাষ্ট্রের কারখানা!
সান্ধ্য আওয়াজ জনতার ডাক
বিপ্লব বলছে পড়ুক বাজ শিকল ভাঙ্গা দিচ্ছে ডাক
তোলো আওয়াজ তোলো আওয়াজ নড়বড়ে সব নিপাত যাক
আসুক সময়ের খেয়ালের ডাক ভিত কাঁপিয়ে মুক্তি পাক
নিপাত যাক মুক্তি পাক....
এইতো বিপ্লব, সামনে চলছে মিছিলের সারি
তার পিছনে কারি কারি নতুন গড়ার কারিগর
আমরাও ছুটছি পিছু পিছু বলছি সাথে বিপ্লব বিপ্লব
ঐ দেখো যায় বিপ্লব। ভাঙ্গা গড়ার কারিগর!
গান
সব অভিমান জমিয়ে রাখা যায় না
কিছু টা গলে যায় মেঘের আগমনে
সব প্রেম ধরে রাখা যায় না
কিছুটা সরে যায়
চোখের আড়াল হলে।
সব ব্যর্থতা বলা যায়না
কছুটা জমে যায় সযতনে
সব কষ্ট চাপা যায় না
কিছুটা বয়ে যায় আনমনে
আর কিছুটা সরে যায়
চোখের আড়াল হলে
তুমি যদি বলো, হবে আমার সেই
হারানো প্রেমের ফেরা গান
আমি তুলে নেবো দুহাতে আবার
না বলার সেই প্রথম দেখার টান।
তুমি আড়ালে গেলে সরে যায় সব
এলোমেলো কথা বলে।
ভাগ্যান্বেষণে
বলতে গেলে প্রতিদিন প্রোফাইল পাল্টাই কিন্তু
ভাগ্যের কোন পরিবর্তন দেখতে পাইনা।
জানি দালানগুলো অনেক আগেই খোলস ছেড়েছে
বাবুইয়ের অভিশাপে চড়ুইপাখির মত আমিও গৃহহীন।
আজকাল চোখ কাঁপে অকারণ অথচ বত্রিশ দাঁতে
দেখাতে পারিনা পরিবর্তনের প্রতিফলন।
কেন যে বুলবুলির লাল পাছা দেখে হেসেছিলাম সেদিন, আজ অনেকের পাছা দেখে হাততালি দেই।
পরিবর্তনের হাওয়া ভাবতে গেলেই চোখ ডুবে যায় শিশিরের ভিতর।
আমার এমন কেন হয়, নিজের হৃদয় খুঁড়ে চলার রাস্তা বানাই। ঝড়ের গন্ধে আগেই আছড়ে মরি চৌকাঠের উপর।
জানি নিশ্চিত কেউ আমাকে শেয়াল ভেবে, বায়ে ফেলতে চাইছে। ঠাকুমার প্রবাদবাক্যটি আজকাল
পকেটেই রাখি। জানিনা কখন গিলে খেতে হয়।
বলতে গেলে এটাই এখন আমার রক্ষাকবচ!
জন্মান্ধ প্রেম - ( পর্ব - এবং)
অসামান্য বলে এড়িয়ে গেলে,
পড়লে না শেষ পঙক্তিটা
এভাবে পাতার পর পাতা নিবেদন করেছি
চুম্বনে আঙুল ডুবিয়েছি পৃষ্ঠাজুড়ে।
তোমার প্রতিটা স্পর্শ, কতটা স্পর্শকাতর
তা জানলে না। অফ হয়ে গেলে অন লাইনে।
প্রেমের প্রথম অধ্যায়ে কোন মাত্রা ছিল না জগদীশ
নাম বিশেষণ নিয়ে এগিয়েছিলাম মাত্রাবৃত্তে।
তার পরের টুকু ভয়ানক তীব্র
কপালের ভাঁজে ভাঁজে স্পষ্ট দেখা গিয়েছিল ছায়ার মত।
কখনো রোদ এসেছে কখনো বৃষ্টি নেমেছে
কখনো ছাতা ধরেছে বিপরীতে।
এতো বৈপরীত্য নিয়ে কিভাবে কবিতা লিখি?
তবুও তো প্রতিদিন নিয়ম মেনে, দিয়ে যাচ্ছি উড়ন্ত চুম্বন!
জন্মান্ধ প্রেম ( পর্ব - এবং)
যেটুকু বাজানোর তা আগেই বাজানো হয়ে গেছে জগদীশ!
এখন শুধু অবলোকন
বিশ্বাসের খুঁটিগুলোর ভীত কতটুকু মজবুত হল
কতটুকু ভেতর থেকে জমা হলো শাদামন।
শুনেছি এখন নাকি শুষে নিচ্ছে সব ;আমাজন
পাখিদের কলরব আর তুষারের ছিটেফোঁটা যা আছে!
বৈশ্বিক রূপায়ণ আন্তঃনিষ্কাশন
গভীর রাতে ফেলে যাওয়া অর্ধ খাওয়া পাহাড়ের হাড়গোর
খোসা ছাড়া সমুদ্রের নীল ত্বক; সূর্যের সাদা চামড়া
ডাইনির কোচের ভেতর।
ছেঁড়া ছেঁড়া নক্ষত্রগুলো দিকচক্রবাল
সিংহের বানরজন্ম!
আমি মধ্যরাতে বসে থেকে দেখেছি ইঁদুর বাদুড়ের খেলা
চোখে চোখে তীর ছুঁড়ে পালিয়ে যায়।
তোমার চৌচির পিঠের কথা মনে করে এখনো আমার চোখ ভারি হয়ে আসে জগদীশ!
তবে কী এখন শস্য হারা হলাম?
সময় আমাকে ডেকে যায় বারবার অলস দুপুরে।
আমার হাতের কাজটা এখনো যে শেষ হয়নি
তোমার ক্ষত পিঠে হাত বুলিয়ে দেবো আদরে!
ভালবাসা নিয়ে আমি খেলতে পারিনা কখনো
ফিরিয়ে দিতে পারিনা ব্যর্থ চুম্বনে!