একদিন বেহায়া বসন্ত আমারো ছিলো!
উদ্বাস্তু-উদ্বায়ু সন্ধ্যার বিবস্ত্র গন্ধও ছিলো
আমার একগুঁয়ে-স্বঘোষিত যৌবনের
থ্রি কোয়ার্টার করিডোরে!
আজ আমি সেই তিরিশি যৌবনের খোয়াব দেখি
রুগ্ন শিশির ভেজা কোনো এক গাঁয়ের পথে
বিড়ি ফুঁকা কালো ঠোঁটে নাজিমুদ্দির টং দোকান
বেহুদা সময়ের মূল্যবান অপচয়
বন্ধুদের চায়ের কাপে উদ্ধত 'স্মার্টনেস'!
তালি দেয়া জিন্সের ' জিপার' খোলা কোলাহল!
যুক্তিহীন বঞ্চিত যৌবনের বিতর্কিত অনুমান!
মনে পড়ে মাটির দেয়াল-ছনের চৌয়াড়ি
বিজলিহীন সভ্যতায়-'লেমের' আলোয়
আমার বেড়ে ওঠা কৈশোর!
মাটির হাঁড়িতে মাটির চুলোয়
আমার বলকানো যৌবন
অনাড়ম্বর বর্ণহীন শোষিত কাল!
আমার অদীক্ষিত কৃষ্ণ দেহে সাতপুরুষের
বিচ্ছিরি ঘামের গন্ধে ভেজা শার্টের পকেটে
ছেঁড়া সভ্যতা!
ফের মনে পড়ে সমকালে আমার তিরিশি পায়ে
তারের সেলাই দেয়া ছাল ওঠা খানদানি 'স্যান্ডেল'!
বৈরাগী সন্ধ্যা থেকে সন্ন্যাসী মহানিশার মধ্যাঞ্চল
যৌবনি বিড়ির লেলিহান মশাল ঠোঁটে
আবারো নাজিমুদ্দির টং!
তেল চিটচিটে বেঞ্চ
আমার নিরক্ষর নোংরা নিতম্ব
সুবাসিত দূষিত সময়
কাটতো না আমার
গোখরা রাতের আঁধার।
আমার হাতে আমারই মহানন্দ শরীর
সুবর্ণ কৈশোর হাঁটতে শেখেনি কোনো বিলাসী
তারুণ্যের তারাস্তীর্ণ জমিনে।
একদিন এই আমি নিরবদ্য অতি নিম্নবিত্ত চাতালে
ফিকে চায়ের ভেতর ডুবে যাওয়া বিস্কিটের মতো সাম্প্রদায়িক বিদগ্ধ সভ্যতার প্রমিত স্বাদ নিতাম
নিরন্ন সময়ে চুমুকে চুমুকে-যা আজো নেই !
আমার ছিলোনা কোনো মূল্যবান
নীল রক্তের ইতিহাস
যা ছিলো - যা আছে
তা একেবারেই 'ইন্ডিজেন্ট'-'ইনডিজিনাস'
এক গেঁয়ো যৌবনের পাণ্ডুলিপি!
আমি এখন কাষ্ঠতে কুষ্ঠলিপি চিত্রার্পিত করি
অতীতের ক্ষয়ে যাওয়া কোনো এক এতিম নদির
পাড় ভাঙ্গা শরীরের ঝিম ধরা
কাঙ্গালি যৌবনের গলিতে!
এখন নদী আর আমি বিবর্ণ ঝরা পাতায়
আচানক হলুদ সভ্যতা গিলে খাই
রক্তাক্ত বিবস্ত্র সূর্যের আড়ালে।