নিদ্রাভঙ্গে ভুবন
নদীর ঢেউয়ে নৃত্য করে রঙিন মাছের যৌবন,
মাঝির বৈঠায় তার সুরের ছন্দ
খেলে যায়,
ঈশ্বর নেচে নেচে তার সাথে দ্রিম দ্রিম --
ঢোল বাজায়,
ঢেউয়ের বুকে বসে জলপোকা গায়
আদি খেয়াল,
জলে ভাসা শ্যাওলার বহর উপভোগ করে
এই জলজ সঙ্গীত লহরী,
মনে হয় প্রকৃতি চাষ করা সুরের মিছিল,
মনে হয় বহুকাল পর -----
ঈশ্বরের ঘুম ভাঙ্গা ভৈরবি রাগের বাদনে
জেগে উঠছে নিদ্রামগ্ন ভুবন ।
ক্রন্দন
নদীরা কখনো মরে না
যতই পলির ঢল ঢেলে
পাহাড় বানাও,
এ কূল ভেঙ্গে
ঐ কূল গড়ো,
এই সব তান্ডব দেখে
নদীরা কেবল হাসে ।
নদীরা আসলে ঈশ্বর,
কোথায় তাদের বেদনা
কিসে তাদের উজ্জ্বলতা,
কেউ তা জানে না,
তা জানে ঈশ্বর জননী ।
নিঃস্ব করে দাঁও
বীভৎস্য এক দানবীয় নখরের তান্ডবে
কেঁপে উঠছে পৃথিবীর বুক,
প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুর হানা,
এ কেমন অসুরবাজী ?
কালো থাবায় নিঃস্ব করতে চায়-
মায়াময় মানবিক সমাজ।
রুখো, হে মানুষ রুখে দাঁড়াও
অদৃশ্য আজরাইলের
জান কবজের খেলা,
কঠিন আঘাতে ধ্বংশ করে দাও
এই নিরব ঘাতক,
ধ্বংস করে দাও,
নিঃস্ব করে দাও, বিনাষ করে দাও ।
স্বর্গের মতো মনে হয়
পথের মতো দরদী মিত্র
একান্ত আপন কেউ নেই,
যতবার মৃত্যু এসে
জান কবজের নামতা শোনায়,
ততবার নির্মল, সাহসী পথই
বাঁচার সাহস রেখে যায় ।
মানুষ রুপের হোক,
হোক প্রকৃতির অদৃশ্য কেউ,
ছায়া-প্রচ্ছায়া কিংবা
মায়াহীন সময়ের ঢেউ,
জেনে রাখো, সত্য মাটির মায়া,
যতই আঘাত দাও,
তবুও, ঢেলে দেবে ছায়া ।
বিমার
বলছি তো
একদম নিশ্চিহ্ন হয়ে যান,
না হয়
মুগুরের আঘাতে হবেন
খান খান,
যে পথ দিয়ে ঢুকেছেন
এই ভুবনে,
জান কবজের খেলা ছাড়েন,
আপন পথের দিকে বাড়েন ।
বলছি তো
বালাই তুমি যতই
শক্তিমান হও,
মানুষের ভালবাসার মত
পরাক্রম নও,
ধ্বংশ হওয়া চাই তোমার
ঘাতক বিমার,
তুমি যাও, পালাও
না হয় করে দেব চুরমার।
মহামারি ২০২০
পৃথিবীকে এতোটা অসহায় আর কখনো দেখিনি,
প্রতি মুহূর্তে এর অন্তর কাঁদছে,
সর্বত্র হু হু কান্না,
অবিরাম বেদনাময় বিলাপে
কেঁপে কেঁপে উঠছে প্রতিটি দেশের মৃত্তিকা,
প্রতিটি পতাকার বুক,
কি এক ঘাতকের অসহনীয়
থাবায় চলছে মানব নিধন,
এতো মৃত্যু এতো ধ্বংশ
কত আর সহনীয় হয়।
পৃথিবীকে এতো নিঃস্ব হতে আর কখনো দেখিনি,
থরে থরে অবিরাম কেবল জীবনহানি ঘটছে ।