রীভা মিত্র সিরিজ ।। মো. আরিফুল হাসান
১.
রীভা মিত্রের জগতে
শরৎ আকাশের শাদা মেঘ রীভা মিত্র
কাশফুলগুলো রীভা মিত্রকে খুঁজছে
কুল উছলানো নদীটি বয়ে চলে রীভা মিত্রের নামে
রীভা মিত্রের সাথে দোয়েলের সখ্যতা খুব
বুলবুল তাকে প্রতিদিন গান শোনায়
আর বসন্তে কৃষ্ণচূড়া ফোটে তার ওষ্ঠের রঙে
রীভা মিত্রের প্রোফাইল পিক পাল্টালে
পাল্টে যায় সমাজ--সংসার
গণতান্ত্রিক সংবিধানের অধিকাংশ ধারাই পাল্টে যায়
২
রীভা মিত্র শুধু আমার
রীভা মিত্র কানে কানে বলেছিলো, সে শুধু আমার। সাক্ষী তার নিষ্পাপ দুটো ঠোঁট, লাল লিপস্টিক, আর কোকিলের মতো কন্ঠস্বর। সে বলেছিলো।
রীভা মিত্র বলেছিলো আমাকে ছেড়ে কোথাও যাবে না। আমরা ছিলাম
আলিঙ্গনাবদ্ধ, প্রতিশ্রুত। তখন চারটা চল্লিশের সূর্য পশ্চিম-দক্ষিন কোন
থেকে ঢালছিলো তীর্যক রোদ।
রীভা মিত্র ও আমার মাঝে এখন শুধু একটিমাত্র লাল পর্দার ভেদ। আমরা একে
অপরের কল্যানার্থে প্রতিদিন রোপন করে যাচ্ছি অসংখ্য চারাগাছ। কে জানে, কোন
গাছটায় একদিন গোলাপ ফুটবে?
৩.
রীভা মিত্রের সাথে
রীভা মিত্রকে আর দ্বিতীয়বার দেখার দরকার নেই
যে একবার এক পলক দেখেছে
সে কখনো ভুলতে পারে না রীভা মিত্রকে
রীভা মিত্র একটি লাগাতার উজ্জ্বল দুপুর
ঝকঝকে জ্যোৎস্নায় স্বচ্ছ সরোবরের টলমল জল
রীভা মিত্র নিজেই একটি পরিশুদ্ধ প্রেম
রীভা মিত্রের সাথে কথা হয় কোনো ফাল্গুনের
প্রকৃতি ঝলমল করে উঠে
প্রতিটি প্রেমিক হৃদয়ের ভাষা হয়ে থাকে রীভা মিত্র
৪.
রীভা মিত্রের আকাশ
রীভা মিত্রের কাছে আমার এসব কবিতার কোনো মূল্য নেই
সে সামান্য OMG দিয়ে ইনবক্স থেকে বের হয়ে যায়
শুনেছি পারস্যের হাফিজ তার বাগানের মালী ছিলো
আর শেলী প্রেমিকার বুক থেকে বুকে খুঁজেছে আশ্রয়, -তার বিরহে
রীভা মিত্র আমাকে বললো, রংধনুটিকে তার কণ্ঠহার করে দিতে
আমি বুকের রক্ত দিয়ে রঞ্জিত করে দিলাম মেঘলা আকাশ
৫.
রীভা মিত্র ও একটি অসম্পূর্ণ বিন্যাস
রীভা মিত্র, তুমি কি করে জানবে যে দুটো হৃদয়ের সম্মিলন না হলে প্রেম
হয় না? রীভা মিত্র, আমার হাত দুটো কাঁপছে। রীভা মিত্র, তোমাকে লিখছি।
এ সন্ধ্যাটা তোমার পায়ের কাছে লুটোপুটি খেলে। এ শরৎ সন্ধ্যা, তোমার অনুগ্রহ পেতে কেমন কাঙাল হয়ে বসে আছে দেখতে পাচ্ছো, রীভা মিত্র?
রাত গভীর হবে। তুমিও ঘুমিয়ে যাবে একটি সময়। শুধু নিস্তব্ধ রাতের
তারকাজি থেকে মুখ ফিরিয়ে, প্রেমিক জপতে থাকবে, রীভা মিত্র রীভা মিত্র...
৬.
রীভা মিত্র এখোন আর কথা রাখে না
পাঠকেরা রীভা মিত্রকে ভুলেনি। রীভা মিত্র আমাকে ভুলে গেছে। আজ তার নাম লিখতে গিয়ে ভুল করে বসলাম।
একসাথে কফিশপে, চুমুকের পর চুমুকের বিলম্ব বেড়ে যেতো মিষ্টি হাসির উচ্ছল আড্ডায় যেমনটি আমার রীভা মিত্র
রীভা মিত্র এখোন আর কথা রাখে না। তাই, একা একা লাভলেনে চিৎকার করে উঠে বিরহী বিকেল, অক্টাভিউ পাজ।
৭.
রীভা মিত্রকে দেয়া একটি মন খারাপ করা চিঠি
ইনবক্সে পাঠাইনি, লোকে প্রেম প্রেম ভাবে। কিভাবে আমাদের সম্পর্কের
ব্যাখ্যা দেয়া যায় সে বিষয়টিই ভাবছি। ভাবছি অবহেলায় একটি জীবন বিফলে গেলে
কার কী?
গোলাপ তার সৌন্দর্য হারাবে, ঝর্ণাজল শুকিয়ে হবে মরু। আরেকটি ফাগুনে
পৃথিবীতে আগুন ধরে গেলে কার কী? আরেকটি ভাদ্রে আমি ঠিক নিস্তব্ধ নিঝুম
জোনাকি
ভাবছি আরেকটি বার দুঃখ দেবো তোমাকে, অজস্রবার দুঃখ দেবো তোমাকে। তোমাকে ক্ষত বিক্ষত করে আমি নেবো আমার ভালোবাসার চূড়ান্ত প্রতিশোধ
৮.
হঠাৎ দেখা রীভা মিত্র
আজ অনেকদিন পর রীভা মিত্রকে দেখলাম। সে আমাকে হাত ধরে তার কলকাতার বাড়িটিতে নিয়ে গেলো।
রীভা মিত্রের পরনে ছিলো জেব্রাকাটা টি শার্ট, বুকের একপ্রান্ত ছুঁয়ে নেমে গেছে ফোনব্যাগের ফিতে।
লালচুলে রীভা মিত্রকে বুদ্ধিদীপ্ত দেখাচ্ছিলো। সে বললো– একটু বসো, আমি ড্রেসটা চেঞ্জ করে আসি।
আমরা দুজন ছাদে দাঁড়িয়ে আছি। রীভা মিত্রের পেছনে লাল ইটের দেয়াল, আমার পেছনে শুধুই আকাশ