অধ্যাপক-নাট্যকার মমতাজউদদীন আহমদ আর নেই
অধ্যাপক-নাট্যকার মমতাজউদদীন আহমদ আর নেই

ছবি - অধ্যাপক-নাট্যকার মমতাজউদদীন আহমদ


নাট্যকার, নির্দেশক ও অভিনেতা অধ্যাপক মমতাজউদদীন আহমদ আর নেই। রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার বিকেল ৩টা ৪৮ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি (ইন্নালিল্লাহি...রাজিউন)। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, প্রখ্যাত এই নাট্যকার কয়েক দিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। সম্প্রতি শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।

স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের নাট্য আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ মমতাজউদদীন আহমদ ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ জানুয়ারি চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার হাবিবপুর থানার আইহো গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দে নাট্যকার হিসেবে একুশে পদক লাভ করেন। তিনি বিভিন্ন সরকারি কলেজে বাংলা ভাষা সাহিত্য ও নাট্যতত্ত্ব নিয়ে দীর্ঘদিন পড়িয়েছেন।

এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের খণ্ডকালীন অধ্যাপক ও তৎকালীন সরকারি জগন্নাথ কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। এছাড়া জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচি প্রণয়নে কাজ করেছেন। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরিচালকও ছিলেন তিনি।

১৭ বছর বয়সে রাজশাহী সরকারি কলেজের ছাত্রাবস্থায় ভাষা আন্দোলনে যোগ দেন মমতাজউদদীন। বায়ান্নর ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজশাহী সরকারি কলেজে ইট কাদামাটিতে যে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছিল, তাতে মমতাজউদদীনও ভূমিকা রেখেছিলেন।

মমতাজউদ্‌দীনের লেখা নাটক 'কী চাহ শঙ্খচিল' এবং 'রাজার অনুস্বারের পালা' কলকাতার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্য তালিকাভুক্ত হয়েছিল। তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার, শিশু একাডেমি পুরস্কার, আলাউল সাহিত্য পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন। তার রচিত নাটকের মধ্যে 'নাট্যত্রয়ী', 'হৃদয়ঘটিত ব্যাপার স্যাপার', 'স্বাধীনতা আমার স্বাধীনতা', 'জমিদার দর্পণ', 'সাত ঘাটের কানাকড়ি' অন্যতম।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, মমতাজউদদীন আহমদকে তার চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার হাবিবপুর থানার গ্রামের বাড়িতে বাবার কবরের পাশে চিরশায়িত করা হবে। তার আগে ঢাকার রূপনগরের বাসায় প্রথম নামাজে জানাজা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা সম্পন্ন হবে।
 
হাসপাতাল থেকে এই কিংবদন্তির মরদেহ গুলশানের আজাদ মসজিদে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে তাকে গোসল করানো হবে। এরপর বাদ এশা তার মরদেহ রূপনগরের বাসার পাশে মদিনা মসজিদে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে তার প্রথম নামাজে জানাজা সম্পন্ন হবে। 
 
এরপর সোমবার (৩ জুন) সকাল ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে মরহুমের দ্বিতীয় নামাজে জানাজা সম্পন্ন হবে। সেখান থেকে তাকে চাঁপাইনবাগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার হাবিবপুর থানার গ্রামে নিয়ে গিয়ে বাবার কবরের পাশে চিরশায়িত করা হবে। তার শেষ ইচ্ছে ছিল, বাবার কবরের পাশেই যেন দাফন করা হয়।



সাবস্ক্রাইব করুন! মেইল দ্বারা নিউজ আপডেট পান