আইভি হোসেন এর গুচ্ছ কবিতা
আইভি হোসেন এর গুচ্ছ কবিতা
সংসার

বধু বরণে তোমার মায়ের একগুচ্ছ নিঃশ্বাস চাই?

কন্ঠস্বর-

পুরাতন নামে ডাকো আমায়?

ছায়াময় আশ্রয়ে নির্জনে একা হেঁটে যাবো তোমার মনের মন্দিরে!

সেই ছায়াময় বনতলে বহু বসন্ত জন্ম দিবো

তোমায় ভালোবাসার জন্ম মুহুর্তে,

সবুজ পাতায় মুখ রেখে তোমায় দেখবো

রৌদ্রতাপে জর্জরিত দেহ স্নানে বর্ষা নামাবো!

লুকোচুরি খেলতেখেলতে তোমার সাথে এক জীবন পারি দেবো

একটি বার ডেকে দেখো৷

তরু বলে!

 

 

একাকি

 

বড্ড একাকী মুহুর্তে,

বন্ধুর  রাশিরাশি রসমালই আড্ড আমাকে কড়া চায়ের তিতা'তে পরিনিত করে

বড্ড একাকী সময়ে,

শেষ বেলায় অস্তিতের অবসরে

আমি  জীবন কে একা লাগে

আমার একটি হাতের মতন একা লাগে জীবন

মাঝে মাঝে

কথার সাথে কথা নেই!

তা-ও সেই অনেকদিন!

কথারাও বেড়াতে যায়;

নেচে বেড়ায় তাধিন ধিন!

সিঁড়ি বেয়ে ছাদে ওঠে;

দুষ্ট হাসে মিষ্টঠোঁটে!

ডুবসাঁতারে সাগরে যায়

যেথায় খুশি সেথায় ধায়!

 

প্রয়োজন

 

আমি দীর্ঘসময় জুড়ে ক্যালকুলেটারে হিসাব করে

আমার প্রতিটা নিঃশ্বাসের বয়স খুঁজতে গিয়েছিলাম,

হিসাব মেলাতে পারি নাই৷

নিঃশ্বাসের বয়স বের করা আমার বড্ড প্রয়োজন!

কত নিঃশ্বাস,

এ পৃথিবীর বুকে ফেললে নিজেকে মৃত ভাবা যায়!

সে হিসাব বের করাটা আমার বড্ড প্রয়োজন৷

 

 

বিষণ্ণ

 

তোমার নিঃশ্বাসের শব্দ বেশ অপরিচিত এবং অপরিচ্ছন্ন

যা আমার বুকে আঘাত করে

মন আহত করে,

কাঁদায় চোখ

জীবনকে ভাবায়৷

 

শহরের কান্না

 

স্বপ্ন চোখে নাচে,

মাটির চোখে স্বপ্ন কাঁদে

ব্যক্তিগত কোন আঘাতে সবাই এ শহরের সবাই কাঁদে৷

 

 

 

এবং তুমি

কবিতায় বানান ভুল হতে পারে!

কিন্তু দিগন্তের মাঝে এক গুচ্ছ শ্বাস হয়ে,

আমার বুঁকে যে নাম বেঁচে আছো!

সে নামের বানান কখনো,কোনদিন ভুল হবে নাহ৷

 

বিরহ

মনের বসবাস আজকাল কোমায়,

শ্বাস নেই, প্রশ্বাস নেই

 

 

মৃত্যু কথা

 

গভীর এই রাতে,

আযানের শব্দের মতন সু-উচ্চ শব্দে ভেসে আসলো

অপরিচিত মৃত্যু-সংবাদ

কার কূলই যে শূণ্য হলো,

হয়তো সে কোন,

পদবীযুক্ত সরকার বা চৌধুরী!

বিষণ্ণ মৃত্যু সংবাদের আগে

হয়তো সে,

বাহাদুরী স্বভাবের  ছিলো!

অথচ,

আজ সে শুধু মাটিতে শুয়ে মৃত পোকার মতন স্থির হয়ে শুয়ে আছে

আজ সে,

একখন্ড পুরাতন অচল মুদ্রার মতন মূল্যহীন হয়ে আছে!

অথচ মুদ্রার জন্য এই একজীবন জুড়ে কত মাথা খাটিয়ে মুদ্রা অর্জন করেছে৷

কিন্তু,

সে আজ মৃত!

সে আজ লাশ!

 

আড়াল

 

কুয়াশার সাথে আড়ি করে নিঃশ্বাসরা ঝগড়া করছে!

অনেক দূরে বিষণ্ণ ঘরে,

তুমি একা দাঁড়িয়ে এ দৃশ্য দেখছো,

আর হয়তো অন্ধকারে মাকড়ার ঝালের মতন অজস্র বার আমায় নিয়ে ভাবছো

আমি আজও ভুলিনি তোমায়,

বকুলপাতার নিরবতায় তোমাকে আজও বুঝতে পায়৷

 

 

সংযোগ

 

সঙ্গী,সংসার,সংযম,সংগ্রাম,

সংঘাত!

অতঃপর সর্বনাশ

সমাজ গড়তে আমি পায় ভয়,

সমাজের সকল ঘটনা আজকাল

প্রথম কোন প্রেমের মতন ভয়ষ্কর

আমি সমাজের কেউ নাহ

 

 

 

 

অমিত

 

অমিত শুনলাম,

তোমার বাবা কাগজের ব্যবসা শুরু করেছে?

তুমি তো ডাক্তারী পড়ছো?

তোমার কোন এক অবসরে

তোমারি প্রিয় রঙের মলট আঁকা কিছু কাগজ দিয়ো আমায়

দিয়ো!

সে কাগজে রবীন্দ্রনাথ আঁকবো, নজরুল আঁকবো

হেলাল হাফিজকে,

প্রিয় ভেবে প্রেমপত্র লিখবো

যে পত্র তোমার পাবার কথা ছিলো,

তোমার দেওয়া  কাগজে "শেষের কবিতার" অমিত রায়কে ঠিটি লিখবো আমি লাবণ্য বলে!

কিন্তু তোমার তো নাটোরের বনলতাকে পছন্দ!

তোমার দেওয়া কাগজে,

লাবণ্য, বনলতার মুখ আঁকবো,

মিল-অমিল, গন্ধ,রঙ, বর্ণের চাহুনীর,আকুতির তফাৎ খুঁজবো

এভাবে হলেও তোমার বনলতার মুখোমুখি দাঁড়াবো


সাবস্ক্রাইব করুন! মেইল দ্বারা নিউজ আপডেট পান