উপমহাদেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক ও ছোটগল্পের বরপুত্র হাসান আজিজুল হকের ৮২তম জন্মদিন উদযাপন করা হয়েছে। রবিবার বিকালে রাজশাহী নগরীর চৌদ্দপায় এলাকায় বিহাস কমিউনিটি সেন্টারে তার জন্মোৎসব পালন করে কবিতা সংগঠন কবিকুঞ্জ।
জন্মদিনে কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক বলেন, কখন, কোথায় কীভাবে জন্মছি, কবে কখন শেষ মায়ের কোলে বসেছি। এখন আর খুব মনে পড়ে না। জীবনের রাস্তার অনেক দূর এগিয়ে পড়েছি। প্রায়ই মনে হয়, অযথা দীর্ঘ সময় মানুষের বাঁচার কোনো অর্থই নেই আমার কাছে। আমিও চাইব, যেদিন আমার একেবারেই কোনো কাজ থাকবে না, সেদিন উপস্থিত না থাকতে।
তিনি বলেন, আর তো কিছু করিনি। যদি আমার কাজের দ্বারা কোথাও কিছু ভালোর দিকে পরিবর্তন হয়, কোথাও যদি একটু বুদ্ধিবৃত্তিক উন্নতি হয়। যদি আমার কাজ কোনো কাজে আসে, তাহলে আমি নিজেকে কৃতার্থ মনে করবো। আমি তাহলে ধরে নিব যে, আমার সারাজীবনের কাজ এক অর্থে যথার্থ হয়েছে। আর আমি অসাধারণ একটি জীবন যাপন করেছি।
অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা। তিনি বলেন, আমাদের এই উপমহাদেশে অনেক রাজনৈতিক দুর্ঘটনা ঘটে গেছে। তার ধারাবাহিকতা চলছে। এ সময়ে এসেও হাসান আজিজুল হকের লেখা, কথা আমাদেরকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তিনি তার লেখনি অব্যাহত রাখবেন। এই সমাজের যে অবক্ষয়, প্রতিকূলতা সৃষ্টি হয়েছে তা অপসারণ করার জন্য হাসান আজিজুল হকদের মতো মানুষের কোনো বিকল্প নেই।
কবিকুঞ্জের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল হক কুমারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সাবেক অধ্যাপক ও প্রাবন্ধিক সনৎ কুমার সাহা, মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শাহিন আক্তার রেণী, রাবির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক সাইদুর রহমান খান, কবি ও গবেষক অনীক মাহমুদ প্রমুখ।
এর আগে বিকালে অনুষ্ঠানের শুরুতে হাসান আজিজুল হককে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন কবিকুঞ্জের সদস্যরা। পরে একে একে রাজশাহীর সামাজিক, সাংস্কৃতি, রাজনৈতিক অঙ্গনের ব্যক্তি ও সংগঠন এই লেখককে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। কথাসাহিত্যিকের জীবনী পাঠ করে শোনান অধ্যাপক চন্দন আনোয়ার। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন কবিকুঞ্জের সভাপতি অধ্যাপক রুহুল আমিন প্রামাণিক।