বিমল গুহ বাংলা ভাষার অন্যতম কবি। স্বাধীনতা-উত্তরকালে বাংলাদেশের কবিতা যাঁদের হাতে নতুন বোধ ও জীবনোপলব্ধিতে ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে, সময়কে গেঁথে রাখার শিল্পকৌশল নতুনভাবে নির্মিত হয়েছে--বিমল গুহ তাঁদের অন্যতম। চিত্রকল্প-উপমা-রূপক সৃষ্টির মধ্য দিয়ে তিনি মানুষের স্বপ্ন আর জীবন বাস্তবতাকে উন্নীত করেছেন কাব্যশিল্পে এবং শব্দের চাতুর্য ব্যবহারে নির্মাণ করে চলেছেন জাতিসত্তার চিরন্তন শিল্পরূপ। তাঁর কবিতার আত্মার স্বরূপ বহুমুখী আলোকছটায় উদ্ভাসিত। নিজে যা উপলব্ধি করেন--কবিতার শৈলীপ্রকরণে তা হয়ে ওঠে সার্বজনীন এবং তা সমকালকে ডিঙিয়ে যায় শাশ্বতের কাছে।
বিমল গুহের গ্রন্থ সংখ্যা ৩২; তম্মধ্যে কাব্য: ১৩টি, কিশোর কাব্য: ৭টি ও অন্যান্য গ্রন্থ: ১২টি। সাহিত্যে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ১৯৭৯ সালে লাভ করেছেন দেশের শ্রেষ্ঠ তরুণ কবির সম্মান। এ ছাড়াও দেশেবিদেশে তিনি সম্মানিত ও বিভিন্ন সংস্থা কর্তৃক পুরস্কৃত হয়েছেন।
বিমল গুহের জন্ম: ২৭ অক্টোবর ১৯৫২, চট্টগ্রাম জেলার বাজালিয়া গ্রামে। পিতা প্রসন্ন গুহ ও মানদাবালার জ্যেষ্ঠ সন্তান। পড়াশোনা: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও যুক্তরাজ্যের নেপিয়ার ইউনিভার্সিটিতে। বাংলা সাহিত্যে পিএইচডি। যুক্তরাজ্য ও ফিলিপাইন থেকে মুদ্রণ ও প্রকাশনা বিষয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেছেন। ভ্রমণ করেছেন পৃথিবীর বহুদেশ। দায়িত্ব পালন করেছেন ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রকাশনা সংস্থা’র পরিচালক হিসেবে, ও পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক হিসেবে। বাংলাদেশে প্রকাশনা বিষয়ে উচ্চশিক্ষার তিনি পথিকৃৎ। তাঁর চিন্তা, সময়োপযোগী উদ্যোগ ও প্রচেষ্টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ‘প্রিন্টিং এন্ড পাবলিকেশন স্টাডিজ বিভাগ’। বর্তমানে তিনি উক্ত বিভাগে শিক্ষকতা করছেন। সাহিত্যচর্চ্চার পাশাপাশি সম্পাদনা করেন সাহিত্যপত্রিকা ‘পান্থজনের সখা’।