আমরা নির্বোধ নিশ্চিন্তে তাই ওরা নির্মম অনায়াসে
আমাদের জেগে থাকারই কথা ছিলো
অথচ আমরা জেগে ছিলাম না
ছিলাম এক আচ্ছন্ন তন্দ্রায় বুঁদ হয়ে অহর্নিশ
তাই স্বভাবতই আমাদের স্বাভাবিক বোধগুলো
নিস্তেজ নির্বিকার কুম্ভকর্ণের সাথী হয়ে ছিলো।
যারা সুযোগের অপেক্ষায় ছিলো- তাদের পোয়াবারো ,
ইচ্ছে মতো হানা দেয় যত্রতত্র, যেমন আমাদের
অরক্ষিত ধানি জমি গোলাবাড়ি, গরুর বাথান
দুর্বল-চিত্তদের বুক পাঁজরের বেড়া ডিঙ্গিয়ে অবলীলায়
ইন্ধন জ্বেলে জ্বেলে তৈরি করে বিভীষণ
অতঃপর তাতিয়ে তুলে মেকী পুঞ্জিভূত অভিমান।
আর আমরা? এই ভেবে নিশ্চিন্ত ছিলাম যে -
ওরা হয়তো আমাদের অনুর্বর জমিগুলোতে
ফলন বাড়ানোর চেষ্টায় দিচ্ছে উর্বরা উপকরণ,
অথচ ওরা কুটিল গুছিয়ে নিচ্ছিলো নিজেদের আখের
আমাদের নাকের ডগায় বসে, টের পাইনি
কেনো না- আমরা তখোন অঘোরে ঘুমিয়ে।
আসলে আমরা মূলত অর্বাচীন দলভুক্ত, তা’না হলে
বার বার কেনো আমাদের সাথেই এমন হবে?
যেমন- আমরা তখোনও সুখ সুখ ভাব নিয়ে নির্বোধ
নিশ্চিন্ত ঘুমে, যখোন ওরা সদর দরোজা দিয়ে এসে
নির্মম অনায়াসে আমাদের পিতাকে হত্যা করেছিলো।
তারপরও কিভাবে- আমরা
এতোটা বোধহীন আয়েসি হতে পারি? কেনো বুঝি না কেউ
আমরা নির্বোধ নিশ্চিন্তে- তাই ওরা এতো নির্মম অনায়াসে?
অপেক্ষায়- অস্থির উপায়হীন দিন গুনছি তাই
লেলিহান হবে তাই আগুনের লকলকে জিহ্বা ছুঁয়েছে বারুদের স্তূপ
ভয়াবহ বিস্ফোরণ যেনো সময়ের ব্যাপার কেবল
পৃথিবী গোলোকটি ভীষণ এক স্পর্শকাতর সময়ে আজ
জগতের শেষের শুরুটা বুঝি শুরু হয়েছে এবার!
পেরেস্ত্রোইকা খেয়েছে গিলে সোভিয়েত- পৃথিবীর ভারসাম্য ক্ষমতার
অভিবাসী প্রতিরক্ষা দেয়াল কি ভাঙবে তবে সম্মিলিত রাষ্ট্রের বিশ্বাস
পুব থেক পশ্চিম, উত্তর থেকে দক্ষিণ
অবিশ্বাস আর ঘৃণাই এখোন উৎস ক্ষমতার
হয়তো দজ্জাল শৃঙ্খল মুক্ত হবে অচিরেই- হাতে নেবে পৃথিবীর শাসনের ভার।
অপেক্ষায়- অস্থির উপায়হীন দিন গুনছি তাই ইমাম মাহদী ও ঈসা মসিহার।
অনুরাগ বিভ্রম
কি অসাধারণ ফোটে থাকে ফুল
পুষ্পরেণু পরাগায়ন
অদৃশ্য আয়োজন
যেমন মহাবিশ্ব রূপায়ন
অভিনব নিখুঁত একটি কবিতার নির্মাণ।
অথচ জাগতিক ভুলভালে উদ্যত মনন
কেবল ইচ্ছে অনুকূল
এক খোঁজ বিকল্প
জানেনা প্রেম বুঝেনা বিরহ
কামনায় দগ্ধ এক অনুরাগ বিভ্রম।
বিপ্রতীপ নয়
তুমি বললে অনধিকার,
আমি বললাম অধিকার বোধ বিভ্রাট
আর বিভ্রাট অবশ্যই ক্ষমাযোগ্য অপরাধ!
তুমি বললে বিভ্রম,
আমি বললাম ইনোসেন্ট ইলোশন
আর ইনোসেন্ট ইলোশন মানে নিষ্পাপ মায়া।
তুমি বললে চালাকি,
আমি বললাম ইন্টেলেকচুয়াল এপ্রোচ
আর বুদ্ধি খাটানো কখনো নিন্দনীয় হয় না।
যদি বলো অদ্ভুত সমীকরণ,
আমি বলবো সদ্ভাব উপাত্ত প্রাক্কলন।
আর সদ্ভাব সম্পূরক যখোন সংলগ্ন হৃদয়।
এবার আকাশটা দেখো,
তুমি নিশ্চয়ই বলবে দূর নীলিমা,
আমি বলবো খুব কাছে-
একেবারেই আমাদের চোখের কর্নিয়া ছোঁয়ে
তাই বন্ধ চোখে তুমি আকাশ দেখতে পাওনা।
যদি হৃদয় না খোলো, কি করে জানবে বলো
কতোটা প্রেম নিষিক্ত তোমার বুকের গভীরে।
বুদ্ধিভ্রষ্টদের হাতে পৃথিবী সুরক্ষিত নয়
যখোন তুমুল বিপর্যস্ত জলে স্থলে উদ্ভিদ প্রাণীকুল
প্রকৃতি ধুকছে নিযুত ঘাতক ব্যাধিতে
যেনো দুরন্ত ক্যান্সারে আক্রান্ত পৃথিবী নিজে
গলছে গ্রিনল্যান্ড জ্বলছে আমাজন
হয়তো আয়ু ফুরিয়ে এসেছে জগত সংসারের।
অথচ মনে হয়- যেনো ভ্রুক্ষেপ নেই কারো ,
চলছে চারিদিকে যথারীতি নিয়ম অনিয়মের খেলা
চলছে অরাজক হীনমন্য প্রতিভাবনা আধিপত্য চক্রান্ত
চলছে অধিকার হরণের মতো ঘৃণ্য অনধিকার চর্চা
বিকৃত মানস প্রসূত, চলছে সবাই যেনো যে যার মতো,
এই যখোন পুড়ছে পৃথিবীর ফুসফুস খ্যাত আমাজন
বীতশ্রদ্ধ পৃথিবী- হতবাক দেখতে পেলো
এই দাবানল নিয়েও চলছে দেদার কুটিল কানামাছি ভোঁ,
ক্লাউন যারা গাছের মগডালে বসে ভাবছে
গোঁড়ায় আগুন লেগেছে তাতে তাদের কিসের ভয়?
লুটতে চাইছে এভাবে যেনো বিকৃত সম্ভোগ আনন্দ?
অথচ জানলো না- হায়!
আগুনের লেলিহান তাদেরও স্পর্শ করবে অচিরেই।
বস্তুত তাদেরইতো সবচেয়ে বেশি ভয় পাবার কথা!
আর আমার ভায়- বুদ্ধিভ্রষ্টদের হাতে পৃথিবী সুরক্ষিত নয়।
(নিউ ইয়র্ক, ২৯ আগস্ট ‘২০১৯)