চন্দনকৃষ্ণ পাল এর তিনটি কবিতা
চন্দনকৃষ্ণ পাল এর তিনটি কবিতা
অপেক্ষা

তোমার এই ছিদ্র খোঁজার স্বভাব দেখে
একদমই বিচলিত হই না তো আমি।

নিঃশব্দ নরকের কাছে চলে এসে বুঝে গেছি
ফেরার পথ নেই,বন্ধ হয়ে গেছে সিংহদ্বার
খিড়কি পথেও আজ প্রবল পাহারা।

কী যে কুক্ষণে এই স্থলভূমে রেখেছি দু’পা
চারপাশে নোনা জল হা করে গিলে খায়
স্বাদু মাটি আর যতো সব সবুজ চত্তর।

ভাঙনের শব্দ শুনে দুচোখের পাতায় আর ঘুম নেই
খোলা আকাশের বুকে তারাদের নিষ্পাপ চেহারায়
কোন উদ্বেগ নেই
নিজেকে শান্ত রেখে চোখ বুজতে গেলেই দেখি
বিভিষিকা মানে তুমি!

ভেসে যাবার অপেক্ষায় কাটে বর্ণহীন দিন।  

পথ


পণতীর্থের বিষণ্নতা নিয়ে আমি পথ হাঁটি
শিমুল বাগান ছেড়ে বড় ছড়া-বারিক্কা টিলার হাতছানিতে
চোখ পাতি না আর
আমাকে ডেকে নেয় হাওরের জল আর নীলচে সবুজ পাহাড়
এটাই আমার পথ,ভবিতব্যও বলা যেতে পারে
একটা জীবনে এ পাওয়া বড় পাওয়া
তোমার কাছে হতে পারে ভুল পথ ভুল পদযাত্রা
সবার কাছে সব কিছু শুদ্ধ হয় না তো
ভুল শুদ্ধ সব আপেক্ষিক শব্দবন্ধ হয়ে কেটে যায় একটা জীবন।

আমার বিলাস ছড়া

আমার বিলাস ছড়া করুণ তাকিয়ে থাকে সারা শীতকাল
শান্তনার সব ভাষা ভুলে যাই তার চর দেখে
সারাটা বুক জুড়ে বিষ ফোঁড়া জেগে আছে হাওর অবধি
তার গায়ে শিশুদের লাফ ঝাঁপ
সকাল দুপুর হয়ে সন্ধে অবধি
রাতের বুক জুড়ে বুনো শেয়ালের হাঁক ডাক আর
মাটি খুঁড়ে ঘর বাড়ি খেলা
মাঝে মাঝে সমবেত হাঁক ডাক
একাকীত্ব ঘুচানোর কথা বলে একাকীত্ব বাড়িয়ে দেয় যেনো...

রাত গভীরে,পশ্চিমে হেলে পড়ে ক্ষয়িষ্ণু চাঁদ
আবছা কুয়াশা মাখা্ আলোতে নিরব অশ্রু নামে
বিলাসের চোখে,যখন সে গোপলা ছিলো
সেই স্মৃতি রোমন্থনে বিরহী হয়ে ওঠে একান্তে, নিরবে।

শেষ রাতের ট্রেন সেতু বেয়ে দৌড়ে যায় সিলেটের পানে
সেই শব্দ কানে নিয়ে চোখ বুজে বিরহী বিলাস
আমার দুঃখ নদী,
চরপড়া শরীরের কষ্ট নিয়ে
এলিয়ে পড়ে তার পুরনো শরীর।

সাবস্ক্রাইব করুন! মেইল দ্বারা নিউজ আপডেট পান