তিনি নিভৃতচারী এবং জনবিচ্ছিন্ন লেখক।বাংলাদেশের গল্পধারায় গল্পের ভাষা এবং নির্মাণে তিনি ভিন্নমাত্রার অন্যতম কথাসাহিত্যিক। মেধাবী লেখক হয়েও তিনি অনেকাংশেই অপঠিতই থেকে গেছেন। তারপরও বিগত তিন-চার দশকে ১৩টি গল্পগ্রন্থ, ৪টি উপন্যাস ও তিনটি গদ্যগ্রন্থ রচনা করেছেন। এই স্বল্পপ্রজ লেখক মামুন হুসাইন। তাঁকে নিয়ে সাহিত্যের ছোটকাগজ ‘জলধি’ বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠান ‘সমকাল সংলগ্ন কথাসাহিত্য’ এর আয়োজন করে। গত ২০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাঁটাবনে কবিতা ক্যাফেতে ‘জলধি-সন্ধ্যা’র কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন কথাশিল্পী মামুন হুসাইন। ‘সমকাল সংলগ্ন কথাসাহিত্য’ বিষয়ে তিনি বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য ছিল মামুন হুসাইনের কাছ থেকে কিছু শোনা এবং তাঁকে লেখক ও পাঠকের প্রশ্নের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো। মূল অনুষ্ঠানের শুরুতেই মামুন হুসাইন এর সাহিত্য নিয়ে আলোচনা করেন কথাসাহিত্যিক পাপড়ি রহমান। তিনি মূলত মামুন হুসাইনের সাহিত্যের প্রবণতাগুলো চিহ্নিত করেন এবং তাঁর রচনার মৌলিকত্ব, বৈচিত্র্য, উপমা ও দৃশ্যকল্প বিষয়ে আলোচনা করেন।
এরপর কথাশিল্পী মামুন হুসাইনের নিজের লেখালিখি নিয়ে বক্তব্য রাখেন।প্রায় দেড় ঘণ্টা আমন্ত্রিত অতিথিরা ঘোরগ্রস্ত হয়ে তাঁর কথা শোনেন। মামুন হুসাইন শুধু শক্তিশালী লেখকই নন। নির্দ্বিধায় তাঁকে একজন দারুণ বাগ্মী বলা চলে। তিনি বলেন- বরেন্দ্রভূমি থেকে তিলোত্তমা নগরীতে তাঁর আগমন প্রসঙ্গে।তারপর বাংলা সাহিত্য এবং বিশ্বসাহিত্য নিয়ে কথকতার অনুষঙ্গ হয়ে আসে দর্শন, ইতিহাস, চলচ্চিত্র, চিত্রশিল্প, মনস্তত্বসহ বহু কিছু। তিনি বলেন- “শব্দ বাক্য ধ্বনি কোথা থেকে যে বীজ উড়ে উড়ে আসে আমি নিজেই জানি না।”
প্রশ্নোত্তর পর্বটিও তত্ত্বে ও তথ্যে ভরপুর ছিল। বিশেষ করেন নবীন লেখকরা প্রশ্নের ঝাঁপি খুলে বসেন তাঁর কাছে। কথাসাহিত্যিক মামুন হুসাইনকে প্রশ্ন করেন- গল্পকার ড. ইশরাত তানিয়া, প্রাবন্ধিক ড. শামস আলদিন, কবি জাকির জাফরান, শিশু সাহিত্যিক ও প্রকাশক হুমায়ুন কবির ঢালি, মিডিয়া কর্মী তাহমিনা শিল্পী, কবি ও ঔপন্যাসিক সাফিয়া খন্দকার রেখা এবং গল্পকার শাহেদুজ্জামান লিংকন।
অনুষ্ঠানটির সার্বিক পরিকল্পনা ও পরিচালনায় ছিলেন জলধি পত্রিকার সম্পাদক ও সংগঠক নাহিদা আশরাফী এবং সঞ্চালনায় ছিলেন রাঢ়বঙ্গ পত্রিকার সম্পাদক অনুপম হোসেন। বিশিষ্ট কবি, লেখক, সম্পাদক, প্রকাশকসহ সাহিত্যের বিভিন্ন শাখার গুণীজনের সমাগমে অনুষ্ঠানটি ছিল সফল ও সমৃদ্ধ।