১
কী ভেবেছো মরে যাবে?
কী ভেবেছো মরে যাবে?
না। পাথরকুচির মতো জেগে উঠবো-
শত জন্ম নিয়ে।
লজ্জাবতীর মন্ত্রণা নিয়ে-
তোমার বুকের আবডালে মিশে যাবো
খুচরো-আধুলির মতো।
কী ভেবেছো মরে যাবো?
না। স্বর্ণলতার মতো জেগে উঠবো-
হাজার পাতায় পাতায়।
২
গোলাপেরক্রন্দন
বুকটা ছুঁয়ে গেলো তোমার ভূ-কম্পন-----
হঠাৎ হু হু করে বেজে ওঠলো
অচেনা সাইরেন।
মুমূর্ষ গোলাপের ক্রন্দন বিঁধে গেলো একটানা-
হয়তো একটা রাত শেষে ভোরে প্রথম ছোঁয়া
ভেজা চুলে লেগে থাকা----
কিছু ভালোবাসার মন্ত্রণা।
চোখাচুখির অব্যয় ছুঁয়ে
জেগে থাকা কিছু ঠোঁটকথা
অনেকটা স্বপ্নের মতো।
জানি স্বপ্নটা তুমি---জলের তোড়ে ভেসে যাও
যদিও জলটা আমি----
পারতো অবেলায় আমাকেই সারথি করে নাও
আমার নষ্ট চোখে দেখবো ' তুমি শুধু তুমি'
৩
ঘাস এবং তুমি
যদিও চাঁদের মুখে সোনামুখো আলো
আলোয় রঙিন মন কিম্বা ধূসর পৃথিবী।
ঘাস হয়ে শুয়ে পড় আমার সবুজ বুকে
চোখ মুদে সুখ নাও-সূয়ো পোকা হয়ে
ঠোঁট চেপে দাও অনন্ত চাওয়া
যদি পারো বিলোও দীর্ঘশ্বাস তপ্ত রোদে
মরুময় বুকের তক্তপোষে......
এই প্রেম অপ্রেম লিখে নাও
আজ তোমার নতুন কবিতাতে।
আজ ঘাস হয়ে শুয়ে পড়
আমার সবুজ বুকে।
আমি হবো ঘাসফড়িঙ.......
অতঃপর চুমো এঁটে দেবো
তোমার শরীরে....
অধরে চিবুকে কিম্বা বুকে।
এখানে নদী ও পাহাড় তোমায় ডাকে
যত্রতত্র জোছনা বিলিয়ে চাঁদ খুঁজে নিরবতা।
এই প্রেম অপ্রেম লিখে নাও
তোমার নতুন কবিতাতে।
খুঁজি তোমায় মরুর প্রান্তে..........
ধূসর মৃত্তিকায়..........
তবুও বলি ঘাস হয়ে শুয়ে পড়
আমার অবুজ সবুজ বুকে........
৪
দিনান্তেরগল্পো
তোর কাছে শব্দ বিক্রি করবো-কিনবি?
না না দাম নিয়ে ভাবিস না-
সত্যি বলছি পুষিয়ে নেবো অন্য শরতে
যে শরতে তুই আর আমি হেঁটে যাবো দক্ষিনে
মলয় সাগর থেকে ঝিনুক কুড়িয়ে গাঁথবো মালা
তোর উচ্ছ্বল হাসি থেকে অক্ষর কেড়ে লিখবো কবিতা।
তোর কাছে শব্দ বিক্রি করবো-কিনবি?
না না দাম নিয়ে ভাবিস না-
সত্যি বলছি পুষিয়ে নেবো অন্য শরতে
জানি থোকা থোকা কাশফুল উড়িয়ে তুই আসবি
ভোরের রুপোলি শিশিরটুকু মুছে দিতে-
তোর ধানী রংয়ের শাড়ির আঁচলে আঁক কষবো দিনান্তের গল্প-
তোর কাছে শব্দ বিক্রি করবো-কিনবি?
না না দাম নিয়ে ভাবিস না-
সত্যি বলছি পুষিয়ে নেবো অন্য শরতে
সুঁতোর গহনে এঁকে দেবো চড়ুই পাখির প্রেম
কটির ভাঁজে খুঁজে নেবো তোর মায়াবী শরীর।
৫
চল যাই মেঘের দেশে।
চল যাই মেঘের দেশে।
লতা পাতা ফুলের ভীড়ে
ভ্রমর বিনে যেই দেশেতে মধু ঝরে।
চল যাই মেঘের দেশে।
তোমার শহর তোলপাড় হানাহানি
রক্ত পিপাসু হায়েনার ছোটাছুটি
নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে-হাজার বিভৎসতায়।
শুনেছি মেঘের দেশে মেঘের পলে পলে নাকি
তোমার গান হয়!
হলুদ হবার গান।
রাত পাহাড়ে ঘুমিয়ে যাওয়ার গান।
ছেলেবেলার পথ হারাবার গান।
আরো কত হরেক রকমের গান।
চল যাই মেঘের দেশে।
মেঘের 'পরে শক্ত আকাশ
শক্ত বাড়ি ঘর
লৌহদন্ড সত্য মাপেন সত্যকারিগর।
তিনি নাকি একা দেশে একলা থাকেন
একলা যতো কর্ম তাহার একলা ঘোরান রাজদন্ড।
এই যেমন জীবন পঠন
গঠন
সৃষ্টি সুখের উল্লাস মাতম।
চল যাই মেঘের দেশে।
মেঘ দিয়েছে চিঠি আমায়-সঙ্গে নিতে তোমায়
তোমার শহর মৃত এখন ট্রাংক লরিতে ভাবায়
আমার শহর কালো পথে রক্ত যখন তখন
চলো মেঘ পাড়াতে বসত গড়ি-গড়ি সবুজ প্রাঙ্গণ।
৬
বেনারসী ও ধর্মযুদ্ধ
আডার্ম স্মিতে সমষ্টির গণ্ডিটা আজকাল
ম্রিয়মাণ যোজন রেখায়--------
ক্রমশঃ ডংকার ধ্বণি বাজে----- ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিকে
তবুও মাঝে মাঝে সরলরেখায় নিস্প্রাণ হয়ে আসে মানবিক রণতূর্য।
পার্থিব সমকোণের সমন্তরালে সমুদ্রের হিল্লোল।
ঋষির অমৃত গণ্ডুসে------
শুধু-ই রেখেছিলে উজ্জিবনী মন্ত্র।
ইদানিং সমকাম মন্ত্র আদালত হয়ে-----
ছুঁয়ে গেছে বেশ্যাপাড়ার রংমহলে।
অথচ সমরেখায় বৃত্তরা
এক এক করে খেলে কনডমহীন
লাল নীল বেগুনী রঙের অসম কামনায়।
হলুদ জীবনের রংতা কাগজগুলো
উজ্জ্বল হতে হতে একদিন----
স্তনের সমীকরণ মেলে মরুর আখ্যান।
যদিও ধর্মযুদ্ধ আমার তোমার
লাগাম ধরা ধর্মের নপুংসক গ্রন্থে----
তবুও আবডালে ধ্বণিত চৌরাশিয়ার বাঁশি।
পুস্পিত শয্যার সমীকরণ আলোকিত বেনারসী
প্রথম চুম্বন ছুঁয়ে আসে উপপাদ্যের সমন্তরাল
অথচ পশ্চিমের সমকাম------
তথৈবচ
সংসারহীন আরক্ত সংসার।
৭
বকুলরেতুই
দূর বনে ওই বকুলরে তুই
সবুজ ঘাসের বুকে
সেখানটাতে লুটিয়ে পড়িস
হাসিস মহা সুখে।
নিত্যদিনের আসা যাওয়া
নিত্য বলা কথা
এইতো জীবন রুধির পরে
ব্যাকুল হওয়া ব্যাথা
বস না আজ পথের কোণে
বল না কিছু মনের বনে।।
৮
বিদায়
যাবার বেলায় ডাকলে পিছু
দাওনি বিদায় তুমি
শেষ কথাটি দাওনি বলে
যা ভেবেছি আমি।
সাত সাগরের ওপার হতে
আসবে যখন ডাক
আমার হয়ে তোমার মাঝে
বাজবে না আর শাঁখ।
যাবার বেলায় শেষ কথাটি
বলছি, তুমি শোনো
তোমার মাঝে আমার আমি
যেমন করে মানো।
হৃদয় দিয়ে তোমায় চুমি
সাজাই আজি আমার তুমি।।
৯
ভোর এবং তোর জন্য
সতত দুঃখ জেনে কী হবে
এই সংসারে তোর?
আমিতো আর সুখ খুঁজি না
খুঁজি শুধু ভোর।
দোয়েলের শীস্ রঙিন ভোর
শিশির ছড়ানো দূর্বা।
উদিত সূর্য সোনালী আলোয়
রাঙানো দিগন্ত পূর্বা।
আমিতো আর সুখ খুঁজি না
খুঁজি নীল আঁচল।
দেখো আমি হাসতে জানি
চোখে দেখো কাজল।
শুধু ভোর আমি শুধু ভোর
শিশির কণা শুধু যে তোর।।
১০
যে আমায় ডাকে
যে আমায় ডাকে
নাম ধরে
যে রাখে বুকে
অনাদরে
তবুওতো বলি
তার নাম
যে করে আমার
বদনাম।।
যে আমার দিকে
তাকিয়ে হাসে
যে আমায় উড়ায়
মলয় বাতাসে।
তবু বলি তার নাম
তবু ধরি তার গান।।