চলছে করোনা মহামারি। শতাব্দীর চরম মানবিক বিপর্যয়। সম্প্রতি তার উপর যোগ
হয়েছে বন্যার ভয়াবহ দুর্যোগ। দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও
মধ্যাঞ্চল মিলিয়ে অন্তত আঠারো জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চল টানা চার সপ্তাহ ধরে
বেনোজলে ভাসছে। কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, শেরপুর, বগুড়া, রংপুর,
টাঙ্গাইল, নওগাঁ, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, মানিকগঞ্জ ও মাদারীপুরসহ বেশ কয়েকটি
জেলার মানুষ দফায় দফায় বন্যার শিকার হচ্ছে। বন্যা ছড়িয়ে পড়েছে রাজধানী
ঢাকার আশপাশেও। বন্যায় এ যাবৎ প্রাণ হারিয়েছেন ১০৩ জন এবং নানা ধরনের
পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়েছে লক্ষাধিক মানুষ।
ভৌগোলিক অবস্থান,
ভূতাত্ত্বিক গঠন ও জনসংখ্যার ঘনত্বের কারণে বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে
দুর্যোগপ্রবণ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। বাংলাদেশের
মধ্যে দিয়ে ছোট বড় প্রায় ২৩০টি নদী বয়ে গেছে। মূলত এজন্যই অন্যান্য
প্রাকৃতিক দুর্যোগের তুলনায় বাংলাদেশে বন্যার প্রকোপ বেশি। প্রতিবছরই এই
প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হয় দেশের মানুষ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এবারের
বন্যা আরো দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। প্রতি বছর বন্যার সময় দেশের বিভিন্ন
রাজনৈতিক দল, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং
ব্যক্তি উদ্যোগে ত্রাণ তৎপরতা চলে। এতে দুর্যোগগ্রস্ত মানুষরা কিছুটা
উপকৃত হয়। কিন্তু এ বছর করোনা দুর্যোগের কারণে বন্যার ভয়াবহতা সামনে আসছে
না। বানভাসী মানুষের দুর্ভোগের কথা সর্বত্র পৌঁছাচ্ছে না, কোথাও দেখা
যাচ্ছে না কোনো ধরনের ত্রাণতৎপরতা। সবাই কেমন নির্বিকার। কোথাও কোনো মানবিক
উদ্যোগ নেই।
আপনারা জানেন যে, বাংলাদেশের লেখক সমাজের একটি অংশ
২০১৬ সাল থেকে বন্যাদুর্গত মানুষদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করে আসছে। লেখক,
পাঠক, প্রবাসে অবস্থানরত বাঙালি এবং দেশের সর্বস্তরের মানুষ এই উদ্যোগে
অংশগ্রহণ করে। বিগত বছরগুলোতে আমরা সিরাজগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, শরিয়তপুর,
মানিকগঞ্জ অঞ্চলে ত্রাণ বিতরণ করেছি। খাদ্য নয়, দিয়েছি নগদ টাকা। কারণ,
মাঠপর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে আমরা দেখেছি,
চাল-ডাল-চিড়া-গুড়-মুড়ি-মোমবাতি-বিস্কিট―এসব ত্রাণসামগ্রী বন্যার্তদের বিশেষ
কোনো উপকারে আসে না। তার চেয়ে নগদ টাকা পেলে তারা অনেক বেশি উপকৃত হয়।
বিগত বছরগুলোতে আমরা পরিবারপ্রতি কখনো এক হাজার, কখনো দুই হাজার করে
অর্থসাহায্য দিয়েছি। নগদ টাকা দেয়ার এই উদ্যোগ বন্যার্তদের কাছে প্রশংসিত
হয়েছে।
এবারও আমরা ত্রাণ বিতরণের একটি উদ্যোগ গ্রহণ করলাম। বন্যায়
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত একটি এলাকা নির্বাচন করে আমরা পরিবারপ্রতি দুই
হাজার টাকা করে দিতে চাই। শুধু লেখক নয়, দেশ-বিদেশের যে কোনো পেশার যে কোনো
নাগরিক এ উদ্যোগে অংশ নিতে পারবে। জানি, করোনার কারণে মানুষ এখন সংকটে।
আবার এও জানি, দেশে ও প্রবাসে উদার হৃদয়ের বিস্তর মানুষ রয়েছে, যারা
আর্থিকভাবে স্বচ্ছল, মানুষের বিপদে যাদের এগিয়ে আসার সামর্থ রয়েছে।
বন্যাকবলিত মানুষের পাশে আর্থিক সাহায্য নিয়ে দাঁড়ানোর জন্য আমরা আপনাদের
আহ্বান জানাচ্ছি। সংকটে মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমাদের সামাজিক দায়। যার যার
সামর্থ্য অনুযায়ী বন্যার্ত মানুষদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবেন, এই
প্রত্যাশা। আপনাদের সহযোগিতায় এই উদ্যোগ সফল হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
২০২০
সালের ৭ আগস্ট পর্যন্ত আমাদের তহবিলে অর্থসাহায্য পাঠানো যাবে। চারটি
ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও সাতটি বিকাশ নম্বর দেয়া হলো। যথারীতি আমরা প্রত্যেক
অনুদানদাতার ছবিসহ টাকার অংক উল্লেখ করে ফেসবুকে পোস্ট দেব। কেউ যদি নাম,
ছবি বা টাকার অংক প্রকাশ করতে অনাগ্রহী হন, আমাদের জানালে আমরা তা অবশ্যই
প্রকাশ করব না। সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
শুভেচ্ছান্তে
দুর্যোগকবলিত মানুষদের পাশে লেখক-শিল্পী সমাজ
উপদেষ্টামণ্ডলি:
হাসান আজিজুল হক, নাসির উদ্দিন ইউসুফ, সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, নাসরীন জাহান,
জাকির তালুকদার, আহমাদ মোস্তফা কামাল, প্রশান্ত মৃধা, চঞ্চল আশরাফ, শাহেদ
কায়েস।
সমন্বয়ক: স্বকৃত নোমান, মোফাজফ্ফর হোসেন, অরবিন্দ চক্রবর্তী,
আশরাফ জুয়েল, হামিম কামাল, সিপাহী রেজা, আহমেদ শিপলু, মাহবুব ময়ূখ রিশাদ,
ফরিদ ছিফাতুল্লাহ, জাহরা জাহান পার্লিয়া, আশান উজ জামান, তানিয়া হাসান,
মোহাম্মদ জসিম, অপর্ণা হালদার, অপু মেহেদী, সাদ্দাম হোসেন।
ব্যাংক একাউন্ট:
Sakrito Noman
1503202739897001
Brac Bank, Mogbazar branch, dhaka.
Mojaffor Hossain
Dutch bangla bank
16815132388
Md. ashraful haque
DBBL 147-103-19739
Sakrito Noman
Dutch bangla bank
137.101.72952
বিকাশ (পার্সোনাল) নম্বর:
স্বকৃত নোমান: 01818238320, 01972238320
মোজাফ্ফর হোসেন: 01717513023
আশরাফ জুয়েল: 01712080215
অরবিন্দ চক্রবর্তী: 01681468554, 01768179995
সিপাহী রেজা: 01794691878
আহমেদ শিপলু : 01301261407
হামিম কামাল : 01760238433
অর্থসাহায্য পাঠানোর শেষ তারিখ: ৭ আগস্ট, ২০২০