দ্বিতীয় প্রজন্মের ময়না পাখি - আনোয়ার রশীদ সাগর।
দ্বিতীয় প্রজন্মের ময়না পাখি
"কালো জলে, গুজলা তলে,
ডুবলো সনাতন
আজ চার আনা, কাল চার আনা,
পায় যে দরশন"।
দূর কোথাও থেকে ইথারে গানটির সুর ভেসে আসছে। ময়না আর ইদ্রিস আলি কে ঘিরে শুরু হয়েছে সাতসকালে হৈচৈ।
দুপুর লাগাদ দেখা গেল, ওদের দু'জনের গলায় সুঁতায় বাধা কটি ছেড়া জুতা ঝুলতে। বানরের পিছন পিছন যেভাবে কিশোর-কিশোরীরা আনন্দে দৌড়াই, সেভাবে ছেলেমেয়ে গুলো দৌড়াচ্ছে। ওদিকে ইদ্রিস আলি ও ময়নার মনে ওই গানের সুর বেজে চলেছে। ওদের ঠিক মনে নেই গাঁয়ের মণ্ডলরা কী বিচার করেছে। তবে বৃদ্ধ রবিন ঠাকুর হেসে হেসে বলছে,আমি তো জীবনভর একঘরেই থেকেছি। এমন বিচারের মুখে লাথিই মেরেছি। চল্ আমার ঘরে থাকবি।
খপখপ-খপ পায়ের শব্দ। অল্প পানিতে প্রথমে একটু দ্রুত, তারপর ধীরে ধীরে পা ফেলছে ইদ্রিস আলি। পানির উপরে কচি ধানের আগা বেরিয়ে আছে। এখনো ঘন সবুজ হয়ে গড়ে ওঠেনি উপরিভাগ। তবে ধানের মাঠটি ত্রিভুজ আকৃতির। কিশোরী ধানগুলোর উঠতি বয়সের কারণে পানি যতটা বাড়ে ধানগুলোও পাল্লা দিয়ে ততোটাই বড়ো হতে থাকে। বন্যার পানি আর কচিধানের নীরব প্রতিযোগিতা চলমান মাঠের খেতে।
সন্ধ্যার পাখিদের কোলাহল ছাড়িয়ে জল প্রপাতের স্রোতধারা চারিদিকে। টিপটপ বৃষ্টির মিষ্টি আমেজে টাকি মাছেদের মাঝে চলছে সঙ্গমের খেলা এবং দাড়কি মাছেরাও নিষিক্তকরণের মহা উৎসবে মেতেছে,মেতেছে ব্যাঙ প্রজাতির প্রাণিরাও। ঘ্যাঙঘুঙ-প্যাঙপুঙ ডাকাডাকির সাথে ঝিঁঝি পোকার এক টানা চ্যাঁ-এ্যাঁ বা ঝ্যাঁ-এ্যাঁ অথবা চুঁ-উ শব্দে ত্রিভুজ মাঠ বড়ো ব্যস্ত হয়ে রয়েছে।
বাড়িটা নর্দমা বা ডোবার ধারে। বাড়ি থেকে বের হয়ে,আধভেজা অবস্থায় ইদ্রিস মাজায় গামছা বেধে ও মাথাল মাথায় দিয়ে আধহাটু পানির মধ্যে চোখ ঠিকরে তাকাতে তাকাতে সামনে এগুতে থাকে। মাছেদের ঝাকানাকা দৌড়াদৌড়ি দেখে পাগল হয় সে। দল বেঁধে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছগুলো মৃদু জ্যোৎস্নায় এদিকে ওদিকে ছুটাছুটি করছে। আজ মাছেদের আনন্দ উল্লাস ধানগাছের গোড়ায়। কীভাবে মাছগুলো ধরা যায়, কীভাবে গামছার আঁচলে আটকাবে সে চিন্তায় গভীর মনোযোগী ইদ্রিস আলি। বাড়ির পাশের বিধবা দস্যি মেয়েটাও কম কীসে। সেও হাটুর মাঝে পরনের কাপড় গুছিয়ে গিট মেরে নেমে পড়েছে ধানের মাঠে। কিন্তু অর্ধভেজা শাড়ি-ব্লাউজ ছাড়িয়ে উঠতি বুকের মাংসপিণ্ড উতালপাতাল ঢেউয়ে ঢেউয়ে বেরিয়ে আসতে চাচ্ছে মাছেদের বাগানে। দৌড়াদৌড়ি করতে চাচ্ছে খোলামাঠে।
ময়না পাখি এখন ময়না খাতুন। রবিন ঠাকুরের মেয়ে সে। হতভাগির জন্মের এক বছর পর মা চলে যায় রবিন ঠাকুরের একভক্তের সাথে। সেখানেই দ্বিতীয় বিয়ে করে ঘরসংসার করে।
রবিন ঠাকুর মাথার চুল বড়ো বড়ো রেখে পিছনে ঝুঁটি বেঁধে ঘুরে বেড়ায়। ছোটবেলা থেকে ভাবুক স্বভাবের রবিন। মাথায় চুল রেখে ঝুঁটি বেঁধে ঘুরে বেড়ানোর কারণে তাকে ঠাকুর বলে ডাকতো গাঁয়ের মানুষ। সেই থেকেই রবিন ঠাকুর নামে পরিচিত হয়ে যায় সে। মাঝে মধ্যে ডুগিতবলা বাজাতো বিভিন্ন অনুষ্ঠানে। এলাকায় স্কুল-কলেজে বা ক্লাবে কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হলে রবিন ঠাকুরের ডাক পড়তো ডুগিতবলা বাজাতে। খুশী মনে যেতোও রবিন ঠাকুর। কিছু টাকাও পেতো, পেতো ভালো ভালো খাবারের সুযোগ। তারপর একটা রোমাঞ্চকর সুযোগ পেতো,উঠতি বয়সী গায়কী বা গায়কের সাথে আড্ডা দেওয়ার সুযোগ । এ রকম নিত্যদিনের ঘটনার মাঝে পরিচয় হয় এইচএসসি তে পড়ালেখা করা সাবিনার সাথে। সাবিনা ভালো লোকসংগীত গাইতে পারে। সাবিনার বাবা পাড়ায় লন্ড্রির কাজ করে। কোনো রকমে টেনে-টুনে সংসারটা চলে যায়। এর মধ্যেও সাবিনা নিজেকে শিল্পী হিসেবে দাঁড় করাতে পেরেছে এলাকায়। তবে লেখাপড়ায় অমনোযোগী সে। তাই সাবিনার বাবার ইচ্ছে, মেয়ের বিয়েটা দিয়ে দেওয়ার।
এদিকে বিভিন্ন দিবসে যেমন মঞ্চ মাতানো গান করে তেমন জাতীয় শিক্ষাসপ্তাহে জেলা ও বিভাগ পর্যন্ত গান গেয়ে পুরস্কারও পায়। একবার জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষে রবিন ঠাকুরও সাবিনার সাথে বিভাগীয় শহর খুলনাতে যায়। ট্রেন ভ্রমণে যায় এবং অনুষ্ঠান শেষে বাড়ি ফেরে ট্রেনেই। এ সময়ই রবিন ঠাকুরের সাথে সাবিনার সখ্যতা গড়ে ওঠে। সখ্যতা থেকে ধীরে ধীরে প্রেমের আমেজ তৈরি হয়। সাবিনার দরিদ্র বাবাও বাঁধা দেয় না। বরং বিয়েটা দিয়ে দেয়।
তিন বছর সংসার করার পর সাবিনার কোল জুড়ে আসে ময়না পাখি। লাল টুকটুকে মেয়েটির মিষ্টি মিষ্টি কথায় মন ভরে যায় রবিন ঠাকুরের। কিন্তু গাঁজা খেয়ে খেয়ে রবিন ঠাকুরের স্বাস্থ্যচিকণ হয়ে যায়। মেজাজও খিটখিটে হতে থাকে। এভাবেই ওদের মধ্যে দূরত্বের সুত্রপাত বাড়তে থাকে।
এ সময়ও কয়েকজন ছেলে রবিন ঠাকুরের কাছে ডুগিতবলা বাজাতে শিখতে আসতো। এই শিক্ষার্থীরা মাসিক কিছু টাকাও দিতো রবিন ঠাকুরকে। তবে বেশিরভাগ টাকা সাবিনায় নিজ হাতে নিতো। রবিন ঠাকুর ও সাবিনার সংসার ছিলো অভাব অনটনে খাখা। যে টাকা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পেতো তাই দিয়ে কোনোমতে চলতো সংসার।
সংসারের কেনাকাটাও করতো সাবিনা। সংসারের প্রতি কোনো খেয়াল থাকতো না রবিন ঠাকুরের।
এই অবস্থায় সাবিনার প্রতি অবহেলাও বাড়তে থাকে। নেশা নেশায় বড়ো নেশাখোর হতে থাকে রবিন ঠাকুর।
নেশা করে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে থাকতো রাতদিন।
ঝরতে থাকে শিক্ষার্থীরাও।শিক্ষার্থী কমে যাওয়ার সাথে সাথে অভাব বাড়তে থাকে
শুরু হয় জীবনের বাকবদল।
এদের মধ্যে ইকবাল নামক একজন ঝরে পড়া ছেলেও এসেছিলো শিক্ষার্থী হিসেবে। বয়সও ২২/২৩ বছর হবে। ছেলেটি গল্পবাজ ও আমোদে। গল্পে গল্পে উচ্চস্বরে হোহো শব্দ করে হাসলে যেন গাছপালায় ঝড় ওঠে। কেঁপে কেঁপে ওঠে উপস্থিত সকলের হৃদয়-মন। দুঃখহীন সুডাম দেহের ঢাঙর ছেলে। তবে গাঁজা খাওয়ায় চরম অনীহা। যখন ডুগিতবলা বাজাতে বাজাতে গাঁজায় টান দেয় রবিন ঠাকুর ও শিক্ষার্থীরা, তখন ইকবাল সাবিনার কাছে গিয়ে গল্প করে। হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়ে কখনো কখনো সাবিনার গায়ের উপর। সাবিনাও হাসতে হাসতে মাটির ঘরের মেঝেতে গড়িয়ে পড়ে। শরীর তো,আচ পেলে জেগে উঠবেই। সাবিনার শরীরও ভরাট মাংসে পুরা। জেগে জেগে মাঝে মাঝেই। কাঁপন ধরায় মনেও।
বৃষ্টির মিষ্টি ঘ্রাণে মুগ্ধ হয় ইকবাল। হঠাৎই আওলা মেঘে এক পশলা বৃষ্টি হয়ে যায়। শুকনো মাটিতে বৃষ্টি পড়লে প্রথমে ধুলো ছড়িয়ে পড়ে। তারপর এক ধরনের মিষ্টি ঘ্রাণে এলাকায় গুমোট ভাব গড়ে ওঠে। সে গুমোট ঘ্রাণের আমেজে সাবিনা আর ইকবালের মনে মাদকতা সৃষ্টি হয়। এদিকে গাঁজার গন্ধে ডুগিতবলার পাঠশালা তপ্ত হয়ে উঠেছে। যৌথ কণ্ঠে গলা ছেড়ে চিৎকার করে গান ধরেছে রবিন ঠাকুর ও শিষ্যরা।
অথচ রবিন ঠাকুর ও তার একজন শিষ্য মেতে উঠেছে লালনলীলায়। লালন ভক্তদের মাঝে এ সব ছোটখাটো বিষয় হিসেবে ধরা হয়। ছোটো বিষয়ই সমাজে বা ব্যক্তিজীবনে বড়ো বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। তবে ইকবাল এবং সাবিনার জীবনে খুব বড়ো বিষয় হয়ে দাঁড়ায়নি। কারণ কিছুদিনের মধ্যেই দু'জন নিরুদ্দেশ হয়। অজানাই হারানোই শেষ হারানো হয়ে যায়। রবিন ঠাকুরের কোনো অভিযোগ ছিলো না। তবে রবিন ঠাকর পড়ে যায় একধরনের বাক্সবন্দী জীবনে।
ময়না পাখিটাকে খুবই ভালোবাসে সে। তার একমাত্র মেয়ে এই ময়না পাখি। স্বামীস্ত্রী মিলে আদরে ও স্নেহে ভরিয়ে রাখতো। মেয়েটি ময়না পাখির মতো টকটকিয়ে কথা বলতো। মাকে হারিয়ে অনেক কেঁদে কেঁদে চোখ ফুলিয়ে ফেলেছে ছোটো ময়না পাখিটা।
রবিন ঠাকুর নেশায় বুদ হয়ে থাকলেও ময়নার কান্নার চিৎকারে সে জেগে ওঠে। তার হৃদয় হুঁহুঁ করে কেঁদে ওঠে। কিন্তু কিছুই করার নেই। মা'হীন ময়না পাখিটাকে মানুষ করার দায়িত্ব তাকেই নিতে হয়।
শুরু হয় রবিন ঠাকুরের আর একজীবন। ডুগিতবলা বাজানো ও গান শেখানো শুরু করে নতুনভাবে। অন্তত শিক্ষার্থীদেরকে গাঁজা খাওয়া থেকে দূরে রাখা শুরু করে এবং নিজেও শিক্ষার্থীদের সামনে গাঁজা খাওয়া বন্ধ করে দেয়। পাঠশালাতে আর গাঁজার গন্ধ পাওয়া যায় না।
জীবনের শুরু কোথায় অথবা শেষ কোথায় জানা থাকে না কারো।
মানুষের জীবনের সমাপ্তি টানাটায় সার্থকতা।
ধীরে ধীরে ময়না পাখি বড়ো হয়ে ওঠে। ১৪/১৫ বছরেই ময়নার বিয়ে দেয় এক শিষ্য'র সাথে। শিষ্য রোকন পাশের গাঁয়ের গৃহস্থ বাড়ির ছেলে। রোকনের বাবা-মা এ বিয়ে মেনে নেয় না। রোকন বাড়ি ছেড়ে রবিন ঠাকুরের বাড়িতেই থাকা শুরু করে। এ সংসারে অভাব রয়েছে জেনেও রোকন তেমন কাজ কাম করে না। শুরু করে গাঁজা খাওয়া। গাঁজার সাথে সিমান্ত দিয়ে পার হয়ে আসা বিভিন্ন নেশাদ্রব্যেও সে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। রোকনের হাতে নেশা করার মতো টাকা না থাকলে, ময়নাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে। কঠিন এ জীবনের চলার পথে একদিন গলায় দড়ি দেয় ময়না। রবিন ঠাকুর পুলিশের কাছে যায়। রোকনের নামে লিখিত অভিযোগ দেয়। পুলিশ রাতে রোকনকে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় থানায় নিয়ে যায়।
এদিকে ময়না কেঁদে কেঁদে বুক ভাসায়। কিছুই করার থাকে না তার। গলায় রশির দাগ রয়েই গেছে। মৃত্যু যে কঠিন তা ভালোভাবেই জেনে গেছে,নিজে নিজে মরা অতো সহজ নয়।
সুযোগ হয়েছে ভেবে,রোকনের বাপ-মা কোর্ট থেকে জামিন নিয়ে রোকনকে বাড়িতে নিয়ে আসে। ভেবেছিল বাড়ির ছেলে বাড়ি আসলে ভালো হয়ে যাবে। তা হয়নি। বরং উল্টো হয়েছে। নেশার টাকা না দিলে বাড়ির হাঁড়িপাতিল ভাঙা শুরু করে। এমনকি মাকেও শারীরিক ভাবে নির্যাতন করতে থাকে। বাজারঘাটে বন্ধুদের কাছে টাকা ধার নেয়। সে ঋণ আর পরিশোধ হয় না।দিনের পর দিন জীবনের প্রতি রোকনের মায়া কমতে থাকে। ক্যানেলের ধারে নেশা করে পড়ে থাকে। রাত কখন সকাল হয় টের পায় না। দু একমাস রোকনের বাবার চোখকে আড়াল করে গভীর রাতে ছেলেকে বাড়ি নিয়ে আসে তার মা। কিন্তু সে মায়ের শান্তি থাকে না। বাবার নির্যাতন ও ছেলের নির্যাতনে অতিষ্ট হয়ে যায়। দিন যতো যায় ততোই রোকনের খোঁজ কেউ আর রাখে না।
একদিন ঝড়বৃষ্টির রাত পেরিয়ে সকাল হলে গাঁয়ের মানুষ জানতে পারে রোকনের লাশ ক্যানেলে ভাসছে।
শুরু হয় পুলিশের অভিযান। দুপুরের মধ্যে রবিন ঠাকুর ও ময়নাকে পুলিশ তুলে নিয়ে যায় থানায়। তারপর গাঁয়ের তরুণদের নিয়ে যেতে থাকে। গাঁয়ের ঘরে ঘরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশের ভাষ্য,পাকা কাঁঠাল পেতে হলে গাছের সব কাঁঠালের শরীরে লাঠি মারতে হয়। সপ্তাহ যেতে যেতে মাস চলে যায়। বিষয়টি এলাকার সংসদ সদস্যের কান পর্যন্ত পৌঁছে যায়।
সামনে জাতীয় নির্বাচন। সুতরাং সুযোগ বুঝে এমপি সাহেব গাঁয়ের লোকজনকে ডেকে ঐক্যবদ্ধ করে। চলমান এমপির ভোট করার প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে সব মামলা ও ধড়-পাকড় শেষ হয়।
বছর ঘুরে শ্রাবণের ধারায় ঝরো ঝরো ঝরতে থাকে বৃষ্টি। মেঘের আনন্দে মেঘ ভেসে যায় রেখে যায় শরীরের উত্তাপ। সে উত্তাপে শান্তির ঠিকানা খুঁজে পায় ইদ্রিস আর ময়না। কাঠাঁল গাছের তলায় উঁচু ঢিপায় জ্বালামুখ থেকে মধুর শব্দ হয়,খপখপ-খপ। বেরসিক মেঘে মেঘে বিদ্যুৎ চুমকায়,দেখা যায় ত্রিভুজ মাঠের ছোট ছোট ঘন বা পাতলা ধানের আগা। দাঁড়কি মাছের ঝাকগুলো আঁশটে গন্ধ সঙ্গে নিয়ে বেরিয়ে আসে দড়াদড়্।।