নজির আহমেদ এর পাঁচটি কবিতা
কবি : নজির আহমেদ
এই তুমি
দায়িত্ব ও কর্তব্য বোঝ
তুমি মানবিক
তোমার সাধ অসীম সাধ্য সীমিত,
অনুরাগ আণবিক!
তুমি সবাইকে কম-বেশী বোঝ
তবু ভীষণ একা
তোমাকে কেউ বুঝতেই চায় না
সকলের দৃষ্টি বাঁকা!
জংশন
এইখানে,ঠিক এইখানে
এই বুকের ভিতর রেখেছি পোড়াদহ জংশন।
গন্তব্য যদিও ভিন্ন এবং বিভিন্ন
কিন্তু সকলেই রেখে যায় পদচিহ্ন এক ও অভিন্ন।
বজ্রপাতে ছড়িয়ে পড়ে অাগুন ও ত্রাস
জ্বালাও পোড়াও শ্লোগান
বাতাসও আগুন উস্কে দিয়ে পতিতার ঠোঁটে বসে...
আগন্তুক দর্শক তাপ পোহান।
প্রেমচাঁদ
এক হৃদয় ভেঙে
যখন তুমি আরেক হৃদয়ে যাও
এক নদীর দুঃখ
এক পাহাড়ের কষ্ট দিয়ে কী সুখ তুমি পাও?
কষ্টবোধের কষ্ট নিয়ে
পার হই খাল বিল নদী নালা ঝিল
এযেন মরিয়মের জন্য
অবিরত যুদ্ধরত আদম সন্তান হাবিল কাবিল।
পর্যাকুল
তুমি চোখে চোখ রাখলে
রাত ভোর হয়
প্রস্ফুটিত হয় ফুল,সব কিছু ভুলে তখন
তোমাতে হই মশগুল।
তুমি আলতো ছুঁয়ে দিলে
আমার রুদ্র কঠিন স্বরও নরম হয়ে আসে
কৃষ্ণ পক্ষের জঠর থেকে
খুঁজে আনতে পারি ফাল্গুনের ঋতুবতী চাঁদ।
তুমি বুকের সামনে এসে দাঁড়ালে
তোমাকে নদী মনে হয়
ভেতরে ভেতরে ক্রমাগত ভাঙতে থাকে স্বত্বা
এ ভাঙন থামবার মত নয়।
তুমি হাসলে সূর্য উঠে
কথা বললে,খুলে যায় কন্ঠ সুধার আকর
আর ঠোঁটে রাখলে ঠোঁট
অধরের ওপর অধর যেন এক মধু সরোবর।
ইচ্ছে
ইচ্ছে করে__
ইচ্ছেমত উড়াই মম স্বপ্ন ঘুড়ি
ছেড়ে সুতো
শক্ত হাতে ধরতে মনের সাধ পুরনের নাটাই।
ইচ্ছে করে___
কন্যা দায়গ্রস্ত পিতার পাশে বুক টান করে দাঁড়াই
অভাবগ্রস্ত'র অভাবগুলো যথাসম্ভব তাড়াই।
ইচ্ছে করে___
অসহায় পিতা-মাতার সন্তান হয়ে হাত বাড়াই
অনাথ ও পথ শিশুদের
বুকে নিয়ে দায়িত্ব ও কর্তব্যপরায়ন পিতা হয়ে যাই।
ইচ্ছে করে___
নিরক্ষর মানুষের মাঝে
অক্ষর-জ্ঞান বিলাই
অশিক্ষার অন্ধকারে শিক্ষার আলো ছড়াই।
ইচ্ছে করে____
মন ঢেলে রোগীর সেবায় সেবক হই
মানবতায় বিলীন হতে ভাই
অবক্ষয়ে ক্ষয় ধরিয়ে শুভবোধে সমাজ ভাসাই।
ইচ্ছে করে____
বদলে দিতে,বদলে নিতে আপন বলয়টাই
ইচ্ছে করে সবার মুখে
ফুল ও শিশুর মত হাসি ফোটাই।
ইচ্ছেগুলো ইচ্ছেমত
লাফায় তিড়িংবিড়িং,হয়না পূরণ;একেমন
ইচ্ছে তবু ঘাসফড়িঙ!