বই পড়ার চমৎকার কিছু উপকারিতা !
বই পড়ার চমৎকার কিছু উপকারিতা !


জীবনে সফলতা অর্জন করতে হলে বেশ কিছু গুণাবলির প্রয়োজন পড়ে, হোক সেটি ব্যক্তিগত জীবন কিংবা চাকুরীজীবন। এমন অনেক সফল ব্যক্তিত্বের উদাহরণ রয়েছে যাঁরা নিজের চেষ্টায় বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করেছেন। Warren Buffett, Bill Gates, Mark Cuban, Elon Musk, Mark Zuckerberg তাদের কে না চেনে! তাঁরা রয়েছেন পৃথিবীর সবচেয়ে সফল ব্যক্তিদের তালিকায় শীর্ষ স্থানে। তাদের সবার মধ্যে একটি সাধারণ গুণাবলি রয়েছে। অনেকেই অনেক উত্তর বলবে কিন্তু সঠিক উত্তর কি জানো? সঠিক উত্তর হচ্ছে তাঁরা সবাই নিয়মিত বই পড়েন। তাঁদের মধ্যে জ্ঞান এর প্রতি যে অসীম তৃষ্ণা রয়েছে তা মেটানোর জন্যই হচ্ছে বই পড়া। Warren Buffett তাঁর পেশা জীবনের শুরুতে প্রতিদিন ৬০০-১০০০ পৃষ্ঠা নিয়মিত পড়তেন। Bill Gates প্রতিবছর ৫০ টি বই শেষ করেন। Elon Mask রকেট সায়েন্স এর বিদ্যা বই পড়ার মাধ্যমেই অর্জন করেছেন। Mark Cuban প্রতিদিন ৩ ঘণ্টার বেশি বই পড়েন।প্রতিদিন বই পড়ার উপকারিতা কতখানি এটা যদি আমরা জানতে পারতাম তবে নিজের জন্যে আলাদা করে সময় বের করে আমরা ঠিকই প্রতিদিন কয়েক পাতা করে বই পড়ার চেষ্টা করতাম। যার বই পড়ার অভ্যাস নেই, সে জগতের অনেক কিছু থেকেই বঞ্চিত। বই পড়ার আছে দারুণ সব উপকারিতা জানাচ্ছেন-
অরণ্য সৌরভ

মন এবং মস্তিষ্ক সচল রাখে

গবেষণা করে দেখা গেছে, বই পড়লে মস্তিষ্ক উদ্দীপিত হয়, যা মস্তিষ্ককে সচল রাখে। এতে করে আলঝেইমারের ঝুঁকি কমে। শরীরের জন্য যেমন শারীরিক কসরত দরকার, মস্তিষ্কের জন্যেও তেমনি ব্যায়াম দরকার। মস্তিষ্কের এই ব্যায়াম হয় বই পড়ার মাধ্যমে।

মানসিক চাপ কমায়

দৈনন্দিন জরুরি চাপে আপনি যতই জর্জরিত হন না কেন, একটা গল্পের ভেতর যখন ঢুকে যাবেন, এসব কিছুই আর মনে আসবে না। সকল দুশ্চিন্তা এবং বর্তমানের ঝক্কি-ঝামেলা থেকে মুক্ত করে বই আপনাকে নিয়ে যাবে অন্য এক জগতে।

জ্ঞান আহরণ এর উৎস

অভিজ্ঞতা অর্জনের পাশাপাশি জ্ঞান আহরণের সবচে’ বড় উৎস হচ্ছে বই। আপনার মাথা তথ্যে ভরপুর হবে বই পড়তে পড়তে, মনে উঁকি দেয়া নানা প্রশ্নের উত্তর মিলতে পারে কেবল বই পড়ার মাধ্যমে। যতো প্রশ্ন, ততো উত্তর, ততো জ্ঞান।

শব্দ-ভাণ্ডার সমৃদ্ধ করে

সন্তানকে গাইড বই কিনে দিতে হবে না, শুধু বই পড়ার অভ্যাস গড়ে দিন। কারণ- বই শব্দ-ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করে। যে যত বই পড়ে, তার শব্দ-ভাণ্ডার ততো উন্নত।

স্মৃতিশক্তি প্রখর করে

একটা বই পড়ে তার ভেতরকার তথ্যগুলো বা গল্পটি আমরা মনে করার চেষ্টা করি। মজার ব্যাপার হল, প্রসঙ্গ আসলে চট করে সেসব মনেও পড়ে। এর অর্থ হল, প্রতিবার আপনি যখন মস্তিষ্কে নতুন মেমরি যোগ করছেন, কিছু পুরনো মেমরি হারালেও, আপনার মস্তিষ্কের সৃতিকোষগুলো আরও সমৃদ্ধ হচ্ছে এবং কোষগুলোর মাঝে নতুন নতুন সংযোগ (সিনাপ্স) তৈরি হচ্ছে। মানে, আপনার স্মৃতিশক্তি বাড়ছে।

 মনোযোগ বৃদ্ধি এবং বিশ্লেষণী ক্ষমতা তৈরি করে

অনেক সময়ই দেখা যায়, একটা উপন্যাস পড়তে পড়তে কাহিনীর শেষটা কী হবে তা আমরা অনুমান করার চেষ্টা করতে থাকি। এই প্রক্রিয়াটি বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। আবার, যখন আমরা তথ্য বা কাহিনীটা পড়ি, বোঝার স্বার্থে সেদিকেই  সমস্ত মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করি। এভাবে, বই আমাদের মনোযোগও বাড়ায়।

 সর্বোত্তম বিনোদন

বই হতে পারে বিনোদনের সবচে’ ভালো মাধ্যম। এই বিষয়টি তারাই কেবল উপলব্ধি করতে পারবেন, যাদের বই পড়ার অভ্যাস আছে। একটা গল্প পড়তে পড়তে তার চরিত্রগুলোর সঙ্গে মিশে যাওয়া, তাদের সুখে হেসে ওঠা, তাদের দুঃখে কেঁদে ফেলার মতো এতো অন্যরকম অনুভূতি পৃথিবীর আর কোন কিছুতেই হয়তো নেই। তাহলে বইয়ের চেয়ে ভালো বিনোদন আর কী হতে পারে?

লেখার দক্ষতা বৃদ্ধি

বেশী বই পড়লে যেমন আপনার শব্দ ভান্ডারের ঝুলি ভারী হয়ে যায়, ঠিক একইভাবে আপনার লেখালেখির উপর দক্ষতা চলে আসে। যত বেশী শব্দ জানবেন আপনি, তত বেশী লেখার ক্ষেত্রে হাত ভালো হয়ে উঠবে আপনার।

অতএব, নিজে বই পড়ুন এবং অন্যকে বই পড়তে উৎসাহিত করুন।


সাবস্ক্রাইব করুন! মেইল দ্বারা নিউজ আপডেট পান