আজ ২৫ আগষ্ট। বহুল আলোচিত ও নির্বাসিত সাহিত্যিক তসলিমা নাসরিনের ৫৮তম জন্মদিন। তিনি ১৯৬২ সালের আজকের এই দিনে ময়মনসিংহ শহরে জন্মগ্রহণ করেন।
আশির দশকে একজন উদীয়মান কবি হিসেবে সাহিত্য জগতে প্রবেশ করেন তসলিমা। নারীবাদী ও ধর্মীয় সমালোচনামূলক রচনার কারণে আন্তর্জাতিক খ্যাতি লাভ করলেও ১৯৯৪ সালে বিতর্কের মুখে প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে দেশত্যাগে বাধ্য হন তিনি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসের পর বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন তসলিমা নাসরিন।
দুই ভাই দুই বোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়। তার মা ঈদুল ওয়ারা গৃহিণী এবং পিতা রজব আলী পেশায় চিকিৎসক ছিলেন। ১৯৭৬ সালে তিনি ময়মনসিংহ রেসিডেন্সিয়াল স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন। ১৯৭৮ সালে আনন্দ মোহন কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ১৯৮৪ সালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন তসলিমা। ১৯৮৬ সাল থেকে ১৯৮৯ সালে সরকারি গ্রামীণ হাসপাতালে এবং ১৯৯০ সাল থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত মিটফোর্ড হাসপাতালে স্ত্রীরোগ বিভাগে ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অ্যানেসথেসিওলজি বিভাগে চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন এই লেখিকা।
তসলিমা সাহিত্য জীবন শুরু করেন তেরো বছর বয়স থেকে কবিতা লেখার মধ্য দিয়ে। ১৯৮৬ সালে ‘শিকড়ে বিপুল ক্ষুধা’ নামে তার প্রথম কবিতা সংকলন প্রকাশিত হয়। ১৯৮৯ সালে ‘নির্বাসিত বাহিরে অন্তরে’ ও ১৯৯০ সালে ‘আমার কিছু যায় আসে না’ কাব্যগ্রন্থগুলো প্রকাশিত হয়। এই সময় তসলিমা ঢাকা থেকে প্রকাশিত খবরের কাগজ নামক রাজনৈতিক সাপ্তাহিকীতে নারী অধিকার বিষয়ে কলাম লেখা শুরু করেন। এই সময় ‘নির্বাচিত কলাম’ নামক তার বিখ্যাত প্রবন্ধসঙ্কলন প্রকাশিত হয়, যার জন্য ১৯৯২ সালে তসলিমা আনন্দ পুরস্কার লাভ করেন। ‘আমার মেয়েবেলা’ নামক তার প্রথম আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থে ইসলাম ধর্ম নিয়ে মন্তব্যের কারণে ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত হলেও ২০০০ সালে এই বইয়ের জন্য দ্বিতীয়বার আনন্দ পুরস্কার জয় করেন তিনি।
নির্বাসিত এ সাহিত্যিক বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় লেখালেখির পাশাপাশি দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সাময়িকী এবং পত্রপত্রিকায়ও নিয়মিত লেখালেখি করছেন।