Biography of Mohammad Rakibul Hasan
Mohammad Rakibul Hasan is a documentary
photographer, visual artist and writer. He is currently pursuing an MA in
Photography at Falmouth University. Hasan holds an Undergraduate Certificate in
Higher Education in History of Art from Oxford University, pursued a Postgraduate
Diploma in Photojournalism from Ateneo de Manila University and also graduated
in Film & Video Production from UBS Film School at the University of
Sydney. He was nominated for many international awards and won several photographic
competitions worldwide such as Lucie Awards under Discovery of the Year 2018
category. His photographs have been published and exhibited internationally. He
is based in Dhaka, Bangladesh and represented by Redux Pictures, and ZUMA
Press, USA.
www.mrhasanphotos.com
লাল গোলাপ
খুন হলো একদা এক যুবক
কোনো মোটিফ নেই, কোন চিহ্ন নেই
বুকের যে পাশে হৃদয় থাকে
তার আশে পাশেও কিছু নেই,
বুকটা ফাঁকা, খোলা শার্টের ভেতর
হাওয়া ঢুকে যাচ্ছে
গড়নটা নির্লিপ্তি, ওঠা নামা নেই,
পাষানের বুক
কতকাল যেনো ভালোবাসায় পায়নি
চোখের কিনারায় কোনো জল নেই,
কান্নার কোনো চিহ্ন নেই, সাহারা মরুভূমি,
শুষ্ক, উশর, অনুর্বর
দেহের জমিনে কোনো কারুকাজ নেই,
ছুরি, চাকু, অথবা খঞ্জরের নিশানা
না, সেসব কিছুই নেই
আপাদমস্তক নিষ্পাপ, যেন বলির শিশু
ময়নাতদন্ত শেষ
কোনো ক্লু নেই হত্যার,
নেই কোনো সন্দেহজনক তথ্য
শুধু একটা গোলাপ ধরা ছিল ডান হাতে
এটা কি কাউকে দেবার জন্যে ছিল ?
অথবা কেউ দিয়েছিলো মৃত্যুর পূর্ব মুহুর্তে ?
না—কি যাকে দেবার কথাছিলো
সে আর আসেনি ?
না—কি এই রক্ত গোলাপ ছিল
সুন্দরের সাথে মুখোমুখি হবার ?
সুন্দর কি, অসুন্দরের বিপরীত ?
কথা গুলো ঘুরপাক খাচ্ছে আকাশে-বাতাসে
কি ছিলো এই হত্যার রহস্য ?
লাশকাটা ঘরে নিস্তব্ধতা, সময় মন্থর হয়ে গেছে,
ডোম কিছুই পেল না
কোন মা র বুক হলো খালি,
ভালোবেসেই হয়তোবা খুন হলো যুবক,
যুবতী জানলো না এক হাতে তার গোলাপ আর
বুকে ভালোবাসা ছিলো
স্বপ্ন ছিলো, ডানা ভাঙ্গা স্বপ্ন,
মন ছিলো, ফিক ফিকে তার রং
খুন হলো যুবক,
যার হাতে একটা গোলাপ ধরা ছিল,
শার্টের বোতাম খোলা ছিলো
হৃদয়ের মাঝ খানটায়
বেওয়ারিশ লাশ, কারো দাবিদবা নেই
একটা যুবতী এল দাফনের পর,
বলল ওই গোলাপটা আমার জন্যে ছিল
এই বলে
গোলাপটা নিয়ে ধীরে ধীরে মিলিয়ে গেলো,
আগরের গন্ধ চারদিকে,
কিন্তু কেউ তাকে আর খুঁজে পেল না
ঠান্ডা খুনের কাহিনী হয়ে পরে রইলো যুবকের ফাইল,
ধুলো পড়ে গেলো ।
একদিন এক যুবতী —
ডিটেক্টিভ ;
ফের ধুলো ঝেড়ে
ফাইল খুলে দেখে তাজা একটি গোলাপ
একত্রিশ বছর আগের
বিবরণ লিখা অনেকগুলো কাগজপত্র,
ময়নাতদন্তের রিপোর্ট
খুন হয়েছিল একদা এক যুবক !
মা
কিছু করার নেই, মা ঘুমিয়ে লাইফ সাপোর্টে
বার্ধক্যের ধকল ;
মানুষ জন্মায়, মরে, অবধারিত লিখন,
প্রকৃতি নিশাচরের মতন নিয়ে যায় শবদেহ
মিশে যায় ধূলিকণা হয়ে,
এভাবেই অস্তিত্ব টিকে থাকে ;
মা, শেষবার কি কথা হয়েছিল তোমার সাথে ?
খুব উদ্বিগ্ন থাকতে আমাকে নিয়ে,
আমি ভেসেছিলাম বহুকাল
কতকাল তোমার হাতে ভাত খাইনি,
বিদেশে বিদেশে থেকে কতকাল
তোমার মুখ দেখিনি
দেখিনি স্বদেশের চেহারা
শুনেছি গ্রেনেড হামলা হয়েছে,
কিছু পুরোনো শকুন
মা আমার শরীর কেঁপে উঠেছিল
আমি রাজনীতি করি না, সেটা আমার পেশা নয়
বাংলা ভাই অথবা পাকিস্তান ভাই, এরা কারা,
কি চায় মানুষ খুন করে ?
মা তুমিও কি ভাবছো জীবন সন্ধিক্ষণে,
মানুষের কিসের তাড়া, কিসেরএতো বাড়া বাড়ি ?
নিজেদের ভেতর কলহ নিয়ে
কেউ কোনোদিন জেতে না
তাহলে এই গৃহযুদ্ধের কি হেতু ?
আমি জানি না বাবা,
একটা কথা শুনবে?
একটা মেয়ে তোমার কাছে আসতো না
তোমরা গল্প করতে নানান বিষয়ে
সাহিত্য, সমাজ, রাজনীতি
আমি চুলা ধরতাম চায়ের জন্য
কখনো বসতাম তোমাদের সাথেই,
মেয়েটা কথা বলতো খুব গুছিয়ে,
একবার একটা গল্প শুনিয়েছিল
কিভাবে আন্দোলনের দিনে
নির্ঘাত গুলির হাত থেকে বেঁচে এসেছে
ইউনিভার্সিটিতে,
তুমি সেদিন নাকি ওর প্রাণ বাঁচিয়েছিলে
ও কি এখনো তোমার কাছে আসে,
কাঁদে কোনো কিছুর জন্যে ?
না মা, বড় অভিমান নিয়ে চলে গেছে
পিছু ডাকিনি কোনোদিন
তাই আর ফেরেনি হয়তো
কি হবে এসব আর জেনে ?
নার্স এসে বললো, ডাক্তার বাবু ডাকছে
কিডনি ফেল করেছে,
হার্টে তিনটা ব্লক, কোমায় চলে গেছে আপনার মা
আমার বিশ্বাস হচ্ছিলো না কোনো কথাই
ঘোড়ের ভেতর আছি মনে হচ্ছে
একমাত্র মা ই ছিল শেষ অবলম্বন
বাবা চলে গেছে অনেক আগে,
একদিন হঠাৎ চলে গেলেন কিছু না বলেই
সবাইকে এভাবেই চলে যেতে হয়
এভাবেই শেষ হয় প্রতিটা অধ্যায়
এভাবেই এক এক করে চলে যাবে
মহারাজা থেকে তুচ্ছ কেউ
কে: কে: ওখানে কে ? মা !
উঠে এলে কখন, কিভাবে ?
আমার আর বাঁধা নেই, আমি মুক্ত ।
অবিনাশ বাবু, অবিনাশ বাবু,
কে জানি দেখা করতে এসেছে আপনার কাছে
একজন ভদ্র মহিলা !
অবিনাশ করিডোরটা পেরিয়ে ওয়েটিং রুমে
দাঁড়িয়ে ছিলো, অপর্ণা !
এতকাল পর ?
মা নেই, অপর্ণা, মা আর নেই,
আমিতো আছি, অবিনাশ
ফিরে এসেছি তোমার কাছে
চিরদিনের হয়ে ।
ছবি
একটা ছবি, জেল থেকে ছাড়পত্র পাওয়া
এক কবির, যে কি না
কবিতা লিখে দেউলিয়া হয়েছে
জব্দ হয়েছে সব সম্পদ,
কবিতার খাতা গুলোও নিয়ে গেছে,
ফেরত পায়নি যাকে দিয়ে ছিলো হৃদয়
ফিরে আসেনি যাকে দুহাত বাড়িয়ে
ডেকে ছিলো কাছে
অন্ধকার হয়ে গেছে সব আলো ।
আরেকটা ছবি, বহু পুরানো,
কাকের বাসায় কোকিল ডিম পেড়েছে,
ফেরত দেয়নি ছানা গুলোকে
ধরে নিয়ে গেছে যুবককে ইসরায়েলি সেনা,
ফেরত দেয়নি
সিভিলিয়ান মরেছে অনেক,
কল্যাটেরিয়াল ড্যামেজ বলে চলছে যুদ্ধ
কবি যুদ্ধে যাবে,
তিন কূলে তার আর কেউ নেই,
প্রতিবাদ হবে এবার বুলেটে
সব কলম কিনে নিয়েছে বেনিয়ার জাত
কাগজের দোকান লুট হয়েছে, টিভিতে দেখায়নি
মরে যাওয়া ভ্রূণ গুলি জেগে উঠে বলল,
আমার অপরাধ কি ছিল?
কবি নীরব, কবির মুখে রা নেই,
যেনো কেউ মুখবন্ধ লিখে গেছে
দেশে দেশে ছবির বাজার বেড়েছে,
এখন টোয়েন্টি ফাইভ সেন্টে ছবি পাওয়া যায়,
কোকিলের মিতালি হয়েছে কাকের সাথে,
ছানা ভাগ করে নিয়েছে ।
বিপ্লবী সাম্রাজ্যবাদীরা ছবির মেলা হাতিয়ে নিচ্ছে,
টাকায় টাকা আনে, ক্রীতদাস প্রথার পুনঃপ্রচার
অরুন্ধতী, দায়ানিতা
কেউ জানে না কিভাবে ভালোবেসে
অন্যের অধিকার কেড়ে নেয়া যায়
সব খেলা, খেয়ালি কবির বোধের বাহির
কবিরা খেপেছে,
বড় কবি, মাঝারি, পাতি আর সেয়ানা
চলছে লড়াই, কলম ভেঙে গেছে,
কালিতে ভিজে গেছে কবিতার পাতা,
লড়াই চলছে ...
এসব অন্যরকম ছবি
পুরস্কারতত্ত্ব বলে, লাভ নেই এসব তুলে তুলে
নিন্দুক বলে তবুওতো কিছু হলো,
দৃশ্যের ইতিহাস লিখে কেউতো বড় হবে,
ভালোটা নাই বাসলো ।
একেকটা ছবি
একেকটা জানালায় বসে এঁকে চলা জীবন,
একেকটা নগর ও মানুষের ইতিহাস,
বিদগ্ধ কিছু কবিতার খাতায়
নিঃশ্বাস নেবার ফুরসৎ
মাফিয়ারা নিয়ে যায় নতুন মফিজ,
পুরোনো ক্রীতদাস হাসে নতুনেরে দেখে,
জনতা তালি দেয় সাবাস, সাবাস
সব চলে তলে তলে,
বাজায় বগল, নাচে কিম্ভুতকিমাকার
গরাদের পাগল
সাময়িক বিরতি ছবির,
দর্শক খোঁজে শৌচাগার ।
দৃশ্যপট
তোমার কাছে আমার কিছুই নেই,
খোলা জানালায় বসে ভেবে দেখো
উত্তুরে হাওয়া এসে যেন চোখে মুখে লাগে
আর কিছুই নেই বাকি
যা ছিল এতদিন !
বোশেখের নবান্ন আয়োজনহীন,
জনপদ জানে জনমানব ভালো নেই,
হাসি নেই কৃষকের ঠোঁটে
অন্ধকার যামিনী জানে
আলোর রেখার প্রতীক্ষা কি
আর জানে যুদ্ধে যাওয়া সৈনিকের মা;
তোমার কাছে আমার কিছুই নেই,
না আত্মা, না মন, না আয়না,
তোমার কাছে থেকেও
না থাকার মতন হয়তো আছে
একটা হারানো বিজ্ঞপ্তি
মরে যাবার আগে মিনতি,
চলে যাও, আর এস না
কাছে, পাশে আর বসো না,
বেসো না ভালো;
ভালোবাসলে পাশের বাড়ির
নেড়ী কুকুরটাও আপন আপন লাগে
মনে হয় তুমিও কত চেনা জন্মজন্মান্তরের
ব্যক্তিগত মালিকানা ;
অথচ ভেঙেগেলে প্রেম,
দূরসম্পর্কের সাথে বিবেকহীন প্রতিশোধ
এক মহাকালের শত্রুতা
এক রাবণের সাথে রামের যুদ্ধ ।
তোমার কাছে আমার কিছুই নেই,
না আছে প্রেম, না আছে শান্তনা,
না আছে সম্ভবনা;
আমাদের আর কিছুই নেই,
না আছে আর কোনো কথা, শব্দ,
নিরর্থক বাক্যালাপ ।
এভাবেই রয়ে যায় প্রেম অধরা,
দিন গোনে অজানার,
কেউ কেউ ফিরে আসে, কেউ আর ফেরে না
কোনোদিন
মরে যায় আশা, গোলাপের পাপড়ি,
রেখে যায় উদাসী বাউল,
পাখি উড়ে যায়, পেঁচা ডাকে রাতে
পোড়া চাঁদ ক্ষয়ে পড়ে, রুটি ভেবে খেয়ে নেয়
কোনো এক নাম না জানা ক্ষুধাতুর
রাতজাগা ভবঘুরে
স্মৃতিরা মিছিল করে,
একে একে ঝড়ে বিন্দু বিন্দু জল
নয়নে নয়নে
তোমার কাছে আমার কিছুই নেই
মিথ্যে বলা ছাড়া ।
শুটিং শেষ, আলোগুলো নিভিয়ে দাও,
কাল আবার নতুন দৃশ্যের রেকর্ডিং হবে
নায়িকাকে বলে দিও ভালোবাসার দৃশ্যটা
ভালো করে শিখে আসতে ।