কথাসাহিত্যিক আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
আখতারুজ্জামান ইলিয়াস বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক। একজন স্বল্পপ্রজ লেখক। বাংলা সাহিত্যে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ এর পরেই তিনি সর্বাধিক প্রশংসিত বাংলাদেশী লেখক। তার সম্পর্কে পশ্চিমবঙ্গের প্রখ্যাত সাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবী বলেছেন, ‘কী পশ্চিম বাংলা কী বাংলাদেশ সবটা মেলালে তিনি শ্রেষ্ঠ লেখক।’
আজ তার শুভ জন্মদিন। ১৯৪৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি গাইবান্ধা জেলার গোটিয়া গ্রামে মামার বাড়িতে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাক নাম মঞ্জু। আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের লেখনিতে বাস্তবতার নিপুণ চিত্রণ, ইতিহাস ও রাজনৈতিক জ্ঞান, গভীর অন্তর্দৃষ্টি ও সূক্ষ্ম কৌতুকবোধ প্রকাশ পেয়েছে।
আখতারুজ্জামানের পৈত্রিক বাড়ি বগুড়ায়। তিনি বগুড়া জিলা স্কুল থেকে ১৯৫৮ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষা এবং ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৬০ সালে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। এরপর ১৯৬৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় অনার্স ও মাস্টার্স পাস করেন।
আখতারুজ্জামান মোহাম্মদ ইলিয়াসের জগন্নাথ কলেজে প্রভাষক পদে যোগদানের মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু হয়। এরপর তিনি মিউজিক কলেজের উপাধ্যক্ষ, প্রাইমারি শিক্ষা বোর্ডের উপ-পরিচালক, ঢাকা কলেজের বাংলার প্রফেসর ও বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ইলিয়াস মফিজউদ্দিন শিক্ষা কমিশনের সদস্য ছিলেন।
আখতারুজ্জামানের প্রতিশোধ, অন্য ঘরে অন্য স্বর, খোঁয়ারি, মিলির হাতে স্টেনগান, অপঘাত, জাল স্বপ্ন স্বপ্নের জাল, রেইনকোট প্রভৃতি গল্পে পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধপরবর্তী রাজনৈতিক এবং সামাজিক বাস্তবতা উঠে এসেছে।
আখতারুজ্জামানের উপন্যাস প্রসংগে কথাসাহিত্যিক ও নাট্যকার ইমদাদুল হক মিলন বলেন, গত ১৫-২০ বছরের মধ্যে তার চিলেকোঠার সেপাই ও খোয়বনামা নামক দুটি উপন্যাস বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ উপন্যাস।
১৯৮৩ সালে আখাতারুজ্জামান ইলিয়াস বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান। ১৯৯৬ সালে তিনি আনন্দ পুরস্কারে ভূষিত হন।
১৯৯৭ সালের ৪ জানুয়ারি আখতারুজ্জামান ইলিয়াস ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা কম্যুনিটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। ১৯৯৯ সালে এ কথাসাহিত্যিককে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত করা হয়।