একাকী স্বত্ত্বা
তুমি আমায় ছেড়ে যাওয়ার পর, আমায় ছেড়ে গেছে নীল আকাশ,
স্নিগ্ধ শিশির, সজল ভোর,-
অন্ধকারে ডুবে গেছে অভিসপ্ত ঘর - বাসর।
ঘুম ভেঙ্গে দেখি বিষন্ন মন,
বুকের ভেতরটা বষা' নদী,-
চোখ দুুটো জলে টলমল,
একলা বয়ে চলি জীবনের কোলাহল।
তুমি চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর,
পিছু ফিরে দেখি, আমায় ছেড়ে গেছে নীল খাম, নীল দিগন্ত কানন,-
ঘন সবুজ ঘাস, জলপাই বন।
ছেড়ে গেছে সহস্র নক্ষত্রপথ,
রাত জাগা তারার অপেক্ষা প্রহর।
একাকী রাতে তোমাকে ভেবে হয় অশ্রুবিসর্জন!
তুমি আমাকে ছেড়ে যাওয়ার কিছুদিন পর,
সহসা দেখি বদলে গেছে, গ্রীষ্ম, বষা', শরতের রঙ,
বদলে গেছে ইঁদারার স্বচ্ছ জল,-
তুমি নেই, কবিতা আজ অচেনা অক্ষর।
আবেগের মৃত্যু
আমি খুঁজি অরণ্যের সন্ধ্যায়
অসীম আকাশের পরতে পরতে,
রাতের দ'পনে স্মিত হেসে
মুখ দেখে শান্ত নীলিম চাঁদ
খুঁজে ফিরি নিঃসীম, নিজ'ন আবেগ,
জ্যোৎস্নাস্নান সমুদ্র অবগাহনে-
যা হারিয়েছে সিন্ধুর গভীরে,
তৃষ্ণার টানে, তৃপ্তির অস্ফুট প্রলাপে।
যেখানে নিঃশব্দ ঝরনার ঢল,-
ধুয়ে নেয় চোখের স্নিগ্ধ কাজল,
শুদ্ধ হৃদয়ে জাগে, বিক্ষত যন্ত্রনা।
আমি হারিয়েছি -
নিষিদ্ধ চোরাবালিতে মায়াবতী মন,
ব্যস্ত নগর থেকে একটু দূরে,-
নেই কোলাহল,
পরিনত স্বপ্ন ডানা মেলে,-
প্রাণবন্ত চেতনায় জাগে মুগ্ধ প্রহর।
ক্লান্ত রোদ চোখমেলে নিরবে,
বিবণ' ছবি টানানো স্যাঁতস্যাঁতে দেয়ালে
উচ্ছিষ্ট সত্ত্বার করুন কটাক্ষে,-
আমি একটি আবেগের মৃত্যু দেখি।
স্মৃতির ঠিকানা
স্মৃতির জানালা খুলে কেন হাত বাড়াও?
আমিতো হাত বাড়ালেই তোমাকে ছুঁতে পারি না,-
মরতে পারি না বলে কি বাঁচতেও দেবে না?
ভুলে যাও সেই জীবিত কোলাহল
চাপা কান্নায় আমাকে না পাওয়ার দাবি ভুলে-
আবার বেঁচে ওঠো
নিশুতি রাত যেমন সবুজ ভোরের পর দিনের আলো ফোটায়,
তেমনি অন্তরে সূযে'র আলো ধারন করো, বেঁচে ওঠো।
তুমি নেই,-
রাত প্রভাত হলো আজ, দিব্যি বেঁচে আছি,-
সাজাই স্বপ্নকানন হোক অকারন,
হোক মৃতের আদলে আমার রঙহীন জীবন।
কখন যে কন্ঠজুড়ে বিষাদ নামে,
আমি আহত হই কেবল।
চিলেকোঠার পাশেই দেখি ঘুড়ি নাটাই ছিঁড়ে পড়েছে,
সাথে বিবর্ন চিঠি আসে পুরুনো অভ্যাসে,-
খুলে দেখি বিরহগাঁথা, তপ্ত শোক।
বিচিত্র নিয়মে ভিজে উঠে চোখ।
আজও অচেনা লাগে জীবন তুমি ছাড়া,-
আমার কেউ নেই, তুমিই আছো আমার—
সেই নীল ঠিকানা।