
অনিতা পূজামণ্ডপে
পিছনের কাশবনে একা একাই প্রতি সন্ধ্যা কাটাই
কতজনকে স্বেচ্ছায় গায়েপড়ে কাশফুল অফার করি
কেউ সাড়া দেয়না আশা দিয়ে দিয়ে নিরাশায় ঠকায়
ঐ যে কাশবনের মাঝখানে কোনদিনও যাওয়া হয়নি
বোকাবুড়ো নিটোল শূন্যতায় কেউ হাত বাড়িয়ে দেয়নি
ছিঁড়াসুতোর ঘুড়ির মত টলতে টলতে এককোণে পড়ে থাকি
দেখি নাটাই হাতে অন্যদের ঘুড়ি উড়ানোর নান্দনিক দৃশ্য!
প্রেমে যে প্রেমিকের মুখে গন্ধ থাকেনা একদিন বলেছিলো অনিতা
মুখে উটকো গন্ধওয়ালা ছেলেটি এখন অনিতার স্বামী
ওরা তুমি আমিতে আমরা হয়ে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে কাশবনে
অনিতার বমি বমি ভাব দেখে শুধাতেই বল্লো-
আগামী বছর নতুন অতিথি নিয়ে আসবো তুই ও আসিস!
স্মৃতিবিজড়িত কাশবন ঘিরে কত গল্প আছে আমাদের
বারোয়ারি পসরা আর শারদীয় সাজে মন্ডপে বেড়ানো
অনিতাকে খুশি করতে গিয়ে কত মারধর খেয়েছি বাবার হাতে
মুসলিম হয়ে হিন্দুদের পূজামণ্ডপে কোনদিন ও মেনে নেয়নি
বাবা চলে গেছেন পরপারে অনিতাকেও মনের কথা বলিনি
আসলে ভালোই হয়েছে অনিতা কোনদিনও আমাকে ঐ চোখে দেখেনি
যেমনটা দেখেছিলো মুখে গন্ধওয়ালা তার ধর্মের ছেলেটাকে
অনিতার হিসেব মিলে গেছে সেই কবেূআমরা আজও মিলেনি!
তুমি রংধনুর অনিন্দ্য সেতু
আমার বিগত আগত অনাগত সময়ের সবকিছু তুমি
তোমাকে ঘিরে জ্যোৎস্নার মুখে বিজ্ঞাপন দিয়েছি
সারিবদ্ধ ভালোবাসার বৃত্তখোলা এক তিলোত্তমা পৃথিবীর
তুমি আমার এবং আমার অনন্ত টলমল জলের রঙ
তুমি আমার কপালের বিলবোর্ডে ঝুলন্ত আশার বিকিরণ
বানভাসি অসুখের তরঙ্গদৈর্ঘ্যে তুমি আমার প্রশান্তির খান্ডবদাহন।
তুমি দৃষ্টির নল বেয়ে বেড়িয়ে আসা মণিূঅস্তিত্বের আস্বাদ
সময়ের আকন্ঠ আশ্বাসে তুমি বেঁচে থাকার অফুরন্ত বাতাস
তুমি দূর বহুদূর লক্ষ্যভেদী উজ্জ্বল জীবনের পরিভাষা
তুমি রংধনুর অনিন্দ্য সেতুূঅবধারিত নিয়তির ভালোবাসা।
শেষ দেখাগুলো
শেষ দেখাগুলো গভীর অন্ধকারে লাইটের আলো
চোখের কোণে মমি হয়ে লুকিয়ে থাকে
যেনো পরিমার্জিত সূর্যের তাপ।
আজানুলুম্বিত বুকের মাঝদরিয়া
শেষ দেখাগুলো মিথ্যে মেকীূ যেনো চির রহস্যের অচিনপাখি।
শেষ দেখাগুলো কথার বিমুগ্ধ বিছানাূবিস্ময়ের উর্ধ্বে জিজ্ঞাসার উপশহর
নয়নাভিরাম আলোর শিকড়ের মতো স্থিত প্রশ্নবাঁক
শেষ দেখাগুলো কারুকার্যখচিত বয়েসী শব্দের আলপনা
আকাংখার অমোঘ অভিব্যক্তি যতিচিহ্নে আহত নির্বাক।
শেষ দেখাগুলো আবরণহীন তিলোত্তমা চিতকারের মৌনতা
নির্মেঘ বৃষ্টির শরীরে হেলান দেওয়া লাভার নিউরন
শেষ দেখাগুলো দহনঢলে জ্বলে পুড়ে ছাই
প্রগাঢ় প্রচ্ছদের নির্বাধ জানালা।
শেষ দেখাগুলো অনভিজ্ঞ দেহে শ্যাওলা পড়া নিঃসঙ্গতা
ইচ্ছের জলঠাসা বুকের অতলান্তে বিরহবিধুর জংধরা কবিতা।
ভালোবাসার জলরঙ
আকাশ সঙ্গমে চাঁদের অট্রহাসী দেখে
পৃথিবীময় রাতের জোছনার বিবদমান উল্লাস
হাতের মুঠোয় বসন্ত নিয়ে দন্ডয়মান যুবকের বুকে
ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে গোলাপের পাঁপড়ি ভালোবাসায় অপার
ক্ষণে ক্ষণে ডুবে আর উবে দ্যুতিময় অনিন্দ্য সুরের মূর্ছনা
সেখানে অনড়তা নেই কিঞ্চিত নেই শোকাবহ কোন বিরূপ আয়োজন
কেবল থরেবিথরে সাজানো গোছানো আছে
তোমার আমার ভালোবাসার জলরঙ
আকাশে জমে থাকা মেঘ
একটি ব্যথার গোটা দুনিয়া বুকে নিয়ে ঘুরপাক খাচ্ছি
রাতশেষে নিদ্রাহীন চোখে দিনভর আইটাই আইটাই করে ফুটপাত চষে বেড়াচ্ছি।
পূবের তারুণ্য ফিকে হয়ে ক্রমশ দৌড়ে পালাচ্ছে পশ্চিমমুখি
পূর্ব মানেই স্মৃতিবিজড়িত নানাবিধ হাস্যোজ্জ্বল ইতিকথা
অথচ কথারা আজকাল বড্ড নিশ্চুপ নীতিকথার বিপরীত এক্কেবারে পূব।
ধর্ম ধর্ম কানামাছি খেলায় কতিপয় ভিন্নধর্মাবলম্বী বন্ধুরা আমাকে কালেমা পড়ে শুনায়
তার মানে এই নয় তারা ধর্ম পরিবর্তন করে আমাদের কাতারে এসেছে
অর্থাৎ ওরা কালেমার মাধ্যমে আমাকে শিক্ষা দিচ্ছে যে
আমি মুসলিম হয়েও তাদের চেয়ে অধম তারা কালেমা জানে
কিন্ত আমরা জেনেশুনে ও না জানার ভান কতে
ভুলন্ঠিত করছি আমার আত্মমর্যাদার পবিত্র স্মৃতিসৌধ।
নগরে পিতার গুণকীর্তণের চেয়ে মায়ের প্ররোচনায় ব্যস্ত কিছু অশিক্ষিত অযবুক
ইতিহাস স্বাক্ষী আদিকাল থেকেই সৃষ্টিকর্তা পুরুষ বানিয়েছেন নিজ হাতে
রমনীদের কেবল পুরুষের ছোঁয়ায় দিয়েছেন রূপ
যুগে যুগে যত ওলি আল্লাহ্ গাউস কুতুব পীর মাশায়েখ দুনিয়ায় আসলেন
সর্ব ধর্মে সর্ব গ্রন্থে পুরুষই ছিলেন অদ্বিতীয় এক
রমনী সেতো সহধর্মিণী।বৃষ্টি হওয়ার আগে আকাশে জমে থাকা মেঘ।