কবি : সূর্য পলাশ
কবিদন্ড
কবির ভাবনা কি উদ্ভট
চোখে খোঁজে চিত্রপট
কবি চোখে ছবি আঁকতে চায়
কবির নেই কোন ঠিক
কখন যায় কোন দিক
তবু অবিরাম ছুটে শব্দের ইশারায়
ভেঙে দাও কবির ঘর
করে দাও তারে পর
একটা ঝড় উঠুক ওর কলমের নিবে
তাকে করো সমাজচ্যুত
হোক সে চুড়ান্ত অচ্ছুত
তবেই ঐ নিঃস্বের কাছে কিছু পাবে
শব্দের পিঠা
এই শীতে আমার খেজুর গাছটা রসে রসে টয়টম্বুর
দুই-আড়াই ইঞ্চির একটা হাড়ি বেঁধে দাও না কেউ!
রস ঢালবো পিঠা খাওয়াবো সকাল-দুপুর
ভেঙে ভেঙে অবিরাম গড়বো আনন্দ ঢেউ!
দুরুদুরু
পাছে আবার ক্ষেত মনে করবা
মনে করবা মফিজটার কোন কান্ড জ্ঞান নাই
দু দিনের পরিচয়েই কেমন দেওয়ানা দেওয়ানা ভাব দেখায়
পার্সোনালিটির একটি পার্টসও নেই আবালটার মধ্যে
শালারে ব্লক না মারলে হচ্ছে না,
ভাবতে ভাবতে হঠাৎ যদি ব্লক মেরেই ফেলো
এই ভেবে,এই একটি ভয়েই
রোজ রোজ সকাল,দুপুর,সন্ধ্যা, রাতে
শত-সহস্র অনুভুতির হয় অকাল মৃত্যু
আমার পৃথিবী জুড়ে বিরাজ করে
সার্বক্ষণিক শোক
তবু শুধু এতোটুকুই চাওয়া
আমাদের দূরত্ব এর বেশি না হোক
দৌলতদিয়া
কোন গণিতের হিসাবে মিলাবে,
রোজ রাতে গণিকার অশ্রু ফোটা!
ঘুম ভেঙে যে শিশু পাশে চেয়ে দেখে,
খদ্দেরের দাঁতে 'মা'র স্তনের বোটা!
ক্ষুদে বার্তা
এ সময়ের সন্ত্রাস বিচারক ও পুলিশ!
কোথায় দিবে অভিযোগ,করবে নালিশ?
যে তোমার প্রতিনিধি সেই বড় চোর!
তোমাকেই আনতে হবে সুদিনের ভোর!
সকালের শয্যা থেকে বলছি
তুমি এসো!
আমার ঘুমন্ত সকালে অচেতন শয্যায়!
প্রাতঃস্নান শেষে-
ভেজা চুল ঝেড়ে শুকোবে গামছায়!
চুল ছেড়ে আসা জল কণা যত
সুরভিত হিম বাষ্পের মত
আমার মুখমণ্ডলের সমস্তটা জুড়ে
সকালটা শুরু হবে একটা স্নিগ্ধ আড়মোড়ে
তারপর, চুমুকে কেন্দ্র করে হতেপারে,
ফিসফাস কথা কাটাকাটি!
শেষমেশ দুজনেই আবার স্নান,
আমাদের সারাদিন পুরো ফাটাফাটি!
সুপুত্রের স্বীকারোক্তি
আম্মা কইছে
"যা কিছু ঘডবে - চুপচাপ দেগবে
কোন কতা কবে না!"
আব্বা কইছে
"বাবা তুৃমিই তো একমাত্র - শত আশার পুত্র
একটি টাকাও হারালে মোটে কিছু থাকে না!"
আমিও তাই চুপ!
অনেকের মতো আমার মুখেও কুলুপ!
অনুকাব্য
যেদিন তোমার ঠোঁটের অধিকার পাবো
সেদিন দেখবো চুমুর উপর ভ্যাট বসিয়েছে কেউ
নিম্ন বিত্ত পকেটে শুকনো ঠোঁটে ফিরবো বাড়ি
বুকের মধ্যে ভাঙবে কেবল দীর্ঘশ্বাসের ঢেউ
তোমাকেই মনে পড়ছে
(জীবনানন্দ দাশ স্মরণে )
তোমাকে খুব মনে পড়ছে,মনে পড়ছে কেন!
তোমার সাথে তো কখনো কোন কথা হয়নি,
কথা হবে কোত্থেকে দেখাই হয়নি,
ভুলেও কখনো তোমায় স্বপ্নেও দেখিনি!
তবু কেন তোমাকেই মনে পড়ছে আজ?
অভিধান ঘেটে শব্দ কুড়িয়ে কোন মতে কেটে যায় দিন,
গতানুগতিক একাডেমির চাপিয়ে দেয়া দাসত্বের কৌশলে,
দু মুঠো ডাল ভাতের নৃশংস যাঁতাকলে,
পিষ্ট বিবেক,তবুও, যাই নির্জনতায় এতোটুকু সময় পেলে!
হৃদয়ের আনাচে কানাচে কাঁচা হাতে করি কতো কারুকাজ
অথচ কিচ্ছু নয় শুধু তোমাকেই মনে পড়ছে আজ!
মুখটাকে লুকিয়ে কাঁদবার মতো বুক নেই বলে,
ব্যাথাতুর চোখ দুটো অশ্রুহীন,
রক্তের মাঝে তোলপার করে নিকোটিন,
চলে যায় সময় যেন পৃথিবীর কাছে থেকে যায় ঋণ!
গুমোট মেঘ,তুমুল বৃষ্টি,নিঃশব্দে পড়েপড়ে পুড়ে যায় বাজ,
সব কিছু ছাপিয়ে শুধু তোমাকেই মনে পড়ছে আজ!
অসম অদ্বিতীয়াকে
হাত জোর করে চাই ক্ষমা!
দাড়িটাকে মুছে ফেলে,
ছোট্র করে দাও কমা!
সেদিন তার চোখে পড়েছি যা
ঠিক আছে তবে তাই,
আর কিছুই শোনার নাই!
ভালো থেকো আলোতে,ভালো আঁধারে,
ভালো থেকো বাস গৃহে,ভালো বাহিরে!
ভালো থেকো কিন্তু প্রতি মুহূর্তে,
ভালো থেকো ভালোবাসা যে কোন শর্তে!
একটি সরল সমীকরণ
যতবার কারো প্রেমে পড়ি,
ততোবার শুদ্ধ স্নিগ্ধতায় জুড়ায় অন্তর!
তোমাদের দেয়া চরিত্রহীনতার কলঙ্ক,
মনে হয় তাই অযৌক্তিক, অবান্তর!
গতানুগতিক
যেই ভোর,
সেই দৌড়!
দৌড়ে গিয়ে দুপুরের ঘার মটকে,
বিকেলের রক্তে মেশাই সুধা!
সন্ধ্যায় আঁধারে আটকে,
রাত হয়ে ওঠে জটিল ধা ধা!
আর আমরা গাধার মত,
আবারো ভোরের আশায়!
ছুটে ছুটে ক্লান্ত অবিরত,
তবু রক্তের ঋণ থেকে যায় সময়ের স্রোতধারায়!