৫টি কবিতা ।। ওয়াহিদ জালাল
৫টি কবিতা ।। ওয়াহিদ জালাল
হয়তো তুমিও ভালোবেসেছো

আজ বুকের কলসে কাঁপে যাচিত দুঃখের হাহাকার
শিউলিঝরা আলোড়নে সাহসা হলে বিনীত,
মোমের কান্না গলে পড়ে অন্ধকারে
মাতাল ঝড়ের রাতে প্রাণ আহত ।
অসীম সাহস;
ছেঁড়া তসবিহ্দানায় পবিত্র প্রার্থনার মতো
আলোর ফেরেস্তা তোমার অতল চোখে
ডানা মেলে ভাসে,
তীব্রতা অসহায় করে, কোন নামে ডাকবে?
এখানে নিশ্চিত কতোকাল বিদীর্ণ বংশে
স্বপ্ন বহুদূর তোমারে দেখে হাসে ।
অনিন্দ্য নরম অনিদ্রা ঘুমিয়ে আছে
তীরের ফলার মতো বুকে রাখে মুখ,
বাতাসের ফেনায় তোমার নামের বুদবুদ
তুমি কী চাও ওয়াহিদ?
এই নিশ্বাস আবার পাহাড় হয়ে ফিরুক?
✒
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
ব্রিকলেইন,ইস্ট লন্ডন, ইংল্যান্ড
আত্মকাব্য

চলো এবার ফিরে যাই অস্তিত্বের প্রমাণ
জানান দিয়ে চৌকাঠের ভদ্রতা দেখবো।
আরও শোন ওয়াহিদ ,
মৃত্যুর পূর্বে হলেও একবার ভূমি দখলদারের
জানাজা পড়ে নিও,
তখন নিজের চোখেই দেখবে
সে কতোটুকু জমিন পৃথিবী থেকে নিয়ে যাচ্ছে!
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
মানচেষ্টার,ইংল্যান্ড

পঞ্চম গোধূলি

চাঁদটি আজ মাছের মতোন ভাসে
মনের উঠোনে,
তাই বুঝি আমাদের পথটিও
চন্ডীদাস হয়ে গেলো ?
আপন চোখের জল চিরকালের অনাথ,
সে সুখ, দুঃখের সমর্থনে প্রেমিক হয়ে
নিজের চোখ ধুয়ে আসে ফুলের কান্নায়।
আশাকে কখনো শরীরে স্থাপন করতে নেই,
আশার দূয়ার ভেতর থেকে খোলা,
একটা বিশুদ্ধ সৌন্দর্যের সমন্বয়ে
অনন্ত প্রেমের কুহেলি আচ্ছন্ন রেখাহীন
চেতনা কেমন শূন্যতার পেটে ঘুমিয়ে থাকে,
মানুষের আর্তি প্রতীক্ষার মতোন দীর্ঘ হয়।
সব পথের একটাই শেষ,
যে রূপ তাকে সীমাবদ্ধ করে দেয়
সেখানে দৃষ্টি অনন্তকালের যোগিনী,
মনে রেখো ওয়াহিদ,
খুব পরিচিত নদী দেখলেই তার
বুকে নামতে যেওনা, নদী কাঙ্গালের ভরসা।
✒
২৬.০৭.২০২৪
ম্যানচেষ্টার, ইংল্যান্ড

দেরী করো না

আমার খুব প্রয়োজন ছিল তোমাকে
না হলে আমার নিঃশ্বাস ফুরিয়ে আসছে,
চারপাশের পরিবেশ অবলোকন করছি
খুবই আবছা আধাঁর-আধাঁর মনে হচ্ছে,
এখন দীর্ঘশ্বাস হয়ে
তোমার সকল স্মৃতি বুকের ভিতর ঘুমহীন
আমার খুব প্রয়োজন ছিল তোমাকে
তুমি এলে বহুদিন পর আমি তোমার বুকে
ঘুমিয়ে যাব
আর চিরকালের জন্য অস্থির হবো না কোনদিন।
আজ খুব উৎসুক হয়েছে ঘুম
আমি ঘুমিয়ে যাব,তোমার কসম----
২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪
নরওয়ে

আমি চলে যাব বলেছিলাম

আমি চলে যাব বলেছিলাম,
অথবা কোন খুব আপন নদীর কাছে
গিয়ে যে ঘর নিজের চোখে পুড়তে দেখেছি
তার ছাইগুলো ভাসিয়ে দেবো জলে,
আমার আর তা হলো না
বুকের ভেতর সীমান্তের মতো পাহারাদার আগুন
সমস্ত বিকেল পর্যন্ত আমাকে পুড়ালো কোলে তুলে!
ভালবাসার মানুষটির মত আগুনও একান্ত আপন
হয়না রে ওয়াহিদ
যেমন ইচ্ছে দুঃখ দেয়,পুড়িয়ে দেয় স্বপ্নগুলো, অধিকার,
দুই চোখের নিদ!
আমি চলে যাব বলেছিলাম,
অথবা কোন কবরগাহে'র পাশে বসে অসুখ বোঝাই
দেহতরী লাগিয়ে নিঃশ্বাসের আয়াতে প্রেমপত্র
তারই নামে লিখবো মাটির কাগজে,
আমার আর তা হলো না
এতো দূরে তুমি দিয়েছো আমারে ঠেলে,যে আমি
নির্বাক পড়ে আছি তোমার অবহেলার মখমল ভাজে!
এতো তামাশার চাদরে ঢেকে রাখে ভালবাসা অবুঝ
কেনো রে ওয়াহিদ?
আমি পাগল,সে আমার প্রেমের অসীম স্বর্গ চিরকাল
যে তার মুরিদ।
২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
ডেনমার্ক



সাবস্ক্রাইব করুন! মেইল দ্বারা নিউজ আপডেট পান