র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী একজন বর্ণময়, মেধা-মননশীলতা-ধীশক্তিসম্পন্ন
ব্যক্তিত্ব। মুক্তবুদ্ধি চর্চা ও দেশজ সংস্কৃতির উদার পৃষ্ঠপোষক এবং
ধারাবাহিক উন্নয়নের নিবিষ্ট কর্মী ও একজন ত্যাগী-নিবেদিতপ্রাণ রাজনীতিক।
বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রাজনীতির সবচেয়ে জনপ্রিয় মুখ তিনি। এমনকি জাতীয়
রাজনীতিতেও বর্তমানে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর বলেই মনে করে রাজনৈতিক
মহল। স্বাধীনতার পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রাজনীতিতে এমন সজ্জন রাজনীতিক আর
এসেছেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। সময় যত গড়িয়েছে, ততই যেন পরিণত ও
প্রাজ্ঞ রাজনীতিক হিসাবে প্রতিনিয়ত নিজেকে তুলে ধরেছেন উবায়দুল মোকতাদির
চৌধুরী। ফলে অল্প সময়ের মধ্যে নিজ এলাকার সর্বস্তরের মানুষের কাছের মানুষ
হয়ে উঠেছেন তিনি। তাঁর সাবলীল নেতৃত্ব ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রাজনীতি ও
সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে যেমন প্রভাবিত করেছে, তেমনি যোগাযোগ, শিক্ষা,
চিকিৎসাক্ষেত্রে উন্নয়নকে করেছে ত্বরান্বিত।
মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়
উজ্জীবিত যে ধর্মনিরপেক্ষ ও অসাম্প্রদায়িক ভাবমূর্তি তাঁর এবং তাঁর দলের
সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক আদর্শ, তাকে কোনোভাবেই ম্লান হতে দেননি তিনি। সৌজন্যের
রাজনীতিতে বিশ্বাসী মোকতাদির চৌধুরী বরাবরই ভিন্নমতের মানুষের প্রতি
শ্রদ্ধাশীল। এসব কারণে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক অঙ্গনে তাঁর পরিচ্ছন্ন ও
জনগণমনস্পর্শী ভাবমূর্তি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তিনি তাঁর নির্বাচনী এলাকার
প্রান্তিক মানুষের প্রতিনিয়ত জীবনযাপনকে দেখিয়েছেন এক আলোর দিশা। তাই সকল
পশ্চাৎপদতা ভুলে প্রান্তিক মানুষেরাও এখন উন্নয়নের শরিক।
তবে, জাতীয়
রাজনীতি এবং নিজ নির্বাচনী এলাকার পাশাপাশি বৃহৎ একটি জেলার রাজনীতির
নেতৃত্ব দিতে গিয়ে ব্যক্তিবিশেষের অসন্তুষ্টির কারণও হয়তো-বা হয়েছেন তিনি।
কিন্তু একজন রাজনীতিককে যেহেতু একটা নীতি ও আদর্শকে সম্বল করে কাজ করতে হয়,
সুতরাং তাঁর প্রতি কারও কারও এমন অসন্তুষ্টি অস্বাভাবিকও নয়। অন্তত
উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীকে সমর্থন করা আপামর জনসাধারণের অধিকাংশ তা-ই মনে
করেন। তাই কারও কারও অসন্তুষ্টির কারণ হয়েও গত প্রায় এক দশকে তাঁর সদর্থক
মানসিকতা এবং সৎ ও পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর নয়নের
মণি ও অভিভাবক হিসেবে নিজের স্থান করে নিতে সক্ষম হয়েছেন সবার প্রিয় ‘রবিউল
ভাই’।
তিনি শুধু রাজনৈতিক ক্ষেত্রেই প্রজ্ঞার পরিচয় দেননি, প্রশাসনেও
নিজের বিচক্ষণতা-দক্ষতা-সততার স্বাক্ষর রেখেছেন। রাজনীতিক হিসেবে যেমন
বর্ণিল, তেমনই সরকারের প্রশাসনিক আধিকারিক হিসেবেও তিনি ছিলেন প্রজ্ঞাবান।
ক্ষুরধার বাগ্মিতায় তিনি সমকালীন বহু গণ্যমান্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সাথে
যেমন তুলনীয়, তেমনই মননশীল চরিত্রের দিক থেকেও স্বমহিমায় প্রোজ্জ্বল। তিনি
বিভিন্ন রাজনৈতিক বক্তৃতাতেও প্রাসঙ্গিকভাবে অনেক সাহিত্যিকের কালজয়ী
রচনার উদ্ধৃতি দিয়ে বক্তব্যকে আরও প্রাণবন্ত ও হৃদয়গ্রাহী করে তোলেন। শুদ্ধ
সংস্কৃতিচর্চার মাধ্যমে নানাবিধ সুন্দরকে বাঁচিয়ে রাখার আন্দোলনেও তিনি
বরাবরই সোচ্চার। দেশজ সংস্কৃতির ওপর প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির আক্রমণ এবং
সাম্প্রদায়িক হামলার মতো কুরুচিপূর্ণ কাজের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো অসমসাহসী
ব্যক্তিটির নাম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। একজন মানুষ ব্যক্তিগতভাবে
সম্পর্কের মানুষদের কাছে প্রিয় হয়ে ওঠেন তাঁর নিজস্ব কিছু স্বভাবগুণে। আবার
অনেক সময় সেই মানুষটির সামাজিক বোধ ও বহুরৈখিক কাজও তাঁকে নিজ গণ্ডির
বাইরে আরও অনেক মানুষের কাছে প্রিয় করে তোলে। উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী
শেষোক্তদের একজন। আপাদমস্তক রাজনীতিক হওয়া সত্ত্বেও শিল্প-সাহিত্যের প্রতি
তাঁর যেমন গভীর ভালোবাসা আছে, তেমনি শিল্পী-সাহিত্যিকদের প্রতিও আছে নিখাদ
শ্রদ্ধা। কী রাজনৈতিক, কী সাংস্কৃতিক—প্রতিটি ক্ষেত্রে চলনে-বলনে তাঁর সেই
স্বাক্ষর পাওয়া যায়।
কোনো স্থানের শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি তখনই বিকশিত
হয়, যখন সেই স্থানে শিক্ষিত সংস্কৃতমনা মানুষের বসবাস থাকবে, রাজনৈতিক
স্থিরতা থাকবে, অর্থনৈতিক সচ্ছলতা থাকবে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যুগের পর যুগ তা
ছিল, ফলে সাহিত্য ও সংস্কৃতির উৎকর্ষতা এমন উচ্চতায় পৌঁছতে পেরেছিল যে
একসময় ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে বলা হতো সংস্কৃতির ঊর্বর ভূমি। তবে মাঝখানের একটা
দীর্ঘ সময় যেন এ মাটির ঊর্বরাশক্তি হারাতে বসেছিল উপযুক্ত পরিচর্যার অভাবে।
মাদক, সন্ত্রাস, মৌলবাদী ও প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির অপতৎপরতার ফলে
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চিত্র এমন আকার ধারণ করেছিল যে মনে হতো ঐতিহ্যিক সবকিছুই
বুঝি শেষ হয়ে গেছে! কিন্তু এ শহরের যাঁরা সংস্কৃতিকর্মী, তাঁদের আশা ছিল,
একদিন ঠিকই সাংস্কৃতিক কৌলীন্য ফিরে পাবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
ইতিহাসখ্যাত এ
জেলার বিশিষ্ট ও বরেণ্য ব্যক্তিদের তালিকা নগণ্য নয়। বরং নানা ক্ষেত্রে
অবদান রাখা বরেণ্যদের সংখ্যা অন্যান্য জেলার তুলনায় অনেক বেশিই। অসংখ্য
খ্যাতিমান কবি-সাহিত্যিক-শিল্পী, বরেণ্য ব্যক্তি ও মনীষীর জন্মধন্য জনপদ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া। প্রাচীন এ জনপদের মাটি ও মানুষকে ঘিরে নানান গাথা-গল্প
রচনা করেছেন তাঁরা। বৃটিশবিরোধী আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধে
ত্যাগ-তিতিক্ষা ও সেবার কারণে এ জেলার মাটি ও মানুষ অত্যন্ত গর্বিত।
একটি ভূখণ্ডের মানুষের মেধা-মনন, সৃজনশীলতা বিকাশে যাঁরা অবদান রেখে
এসেছেন, তাঁদেরই প্রকৃত উত্তরাধিকারী সেই ভূখণ্ডের মানুষ। তাঁদের
উত্তরাধিকাররূপে গণ্যমান্য করা কেবল আবশ্যিক নয়, অপরিহার্যও বটে।
চিন্তা-চেতনা, শিক্ষা, শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি, জ্ঞান-বিজ্ঞান, মতাদর্শিক
অনুপ্রেরণাসহ সমস্ত ইতিবাচক বিকাশের ক্ষেত্রে উত্তরাধিকারী বলে প্রকাশ্যে
পরিচয় দিলেও সেটা প্রকৃতই আমরা কজন ধারণ ও পালন করে থাকি, সে প্রশ্ন নিশ্চয়
অবান্তর নয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কৌলীন্য রক্ষা ও সাংস্কৃতিক অগ্রগতির জন্য
একজন যোগ্য উত্তরাধিকারীর বড় অভাব ছিল সাংস্কৃতিক অঙ্গনে। অবশেষে
সংস্কৃতিজনেরা এমন একজন উত্তরাধিকারী পেলেন, যিনি তাঁর অনন্যসাধারণ
সাধারণত্ব দিয়ে অল্প সময়ের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সর্বস্তরের মানুষের কাছের
মানুষ হয়ে উঠেছেন। নিজ কর্মগুণে ক্রমে হয়ে উঠেছেন ওই জেলার রাজনীতিক ও
সংস্কৃতিকর্মীদের অভিভাবক। দীর্ঘদিন থেকে উন্নয়নবঞ্চিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার
নানামুখী সংকট সমাধানের জাদুকরী সেই উত্তরাধিকারী উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
তিনি জাতীয় সংসদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ নির্বাচনী আসনের বর্তমান সাংসদ এবং
আসন্ন সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী। শিল্প-সাহিত্য ও
সংস্কৃতির প্রতি তাঁর আন্তরিকতা, দায়বদ্ধতা ও নিবিড় পরিচর্যায়
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাংস্কৃতিক অঙ্গন এখন অনেক বেশি প্রাণবন্ত।
১৯৭১ সালে
মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করে আহত হন, যার বেদনাবহ ক্ষতচিহ্ন আজও বয়ে
বেড়াচ্ছেন তিনি। বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদে জীবনের মায়া ত্যাগ করে রাজপথে
নামা মোকতাদির চৌধুরীর রাজনীতির হাতেখড়িও বঙ্গবন্ধুর হাতেই। যদিও মাঝখানে
পেশাগত জীবনে প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের দায়িত্ব পালনের জন্য রাজনীতি থেকে
দূরে থাকেন, পরবর্তীকালে প্রশাসনের সর্বোচ্চ পদের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেও
সাধারণ মানুষের কল্যাণে আরও বেশি কাজ করার লক্ষ্যে চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে
পুনরায় রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তন করেন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রাজনীতিতে সক্রিয়
হয়েই মনোনিবেশ করেন মানুষের সেবায়। সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন এলাকার
অবকাঠামোগত উন্নয়নে, যা এখনো অব্যাহত আছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রাজনীতিতে
যুগান্তকারী পরিবর্তন এনে একটি সুস্থ ধারার রাজনীতি প্রবর্তন করেছেন তিনি।
তাঁর নেতৃত্বের ছোঁয়ায় তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ইতিবাচক রাজনীতির বিকাশ ঘটেছে।
তাঁরই অনুপ্রেরণায় অসংখ্য তরুণ জড়িত হয়েছেন বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক
কর্মকাণ্ডে। তাঁর কঠোর মনোভাবের ফলে বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চাঁদাবাজ,
সন্ত্রাস ও মাদক বলে কিছু নেই বলা যায়। তাঁর সততা এবং মানুষকে আপন করে
নেওয়ার অনন্যসাধারণ গুণ সম্মোহিত করছে সবাইকে। মোকতাদির চৌধুরী
রাজনৈতিকভাবে যতটুকু না, ব্যক্তি ইমেজে সফলতা পেয়েছেন তারও বেশি। ভালো
মানুষ হিসেবে দুর্জন ও নিন্দুকদের কাছেও তিনি শ্রদ্ধার পাত্র।
২.
একসময় ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে বলা হতো সংস্কৃতিকর্মী তৈরির সূতিকাগার। এখান থেকে
তৈরি হয়েছেন অনেক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সাংস্কৃতিক
ব্যক্তিত্ব। কালক্রমে স্থবির হয়ে পড়া এই অঙ্গনেও চাঞ্চল্য এনেছেন উবায়দুল
মোকতাদির চৌধুরী। তাঁর উদার পৃষ্ঠপোষকতা ও অভিভাবকত্বে বিস্তৃত হতে শুরু
করেছে জেলার সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর কার্যক্রম। সক্রিয় হতে শুরু করেছে
ঝিমিয়ে পড়া অনেক সংগঠন। নতুন নতুন সংগঠন তৈরি হচ্ছে, অনুষ্ঠিত হচ্ছে
গুরুত্বপূর্ণ অনেক উৎসব-অনুষ্ঠান। এরই ধারাবাহিকতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়
প্রথমবারের মতো সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঐতিহাসিক বঙ্গ-সংস্কৃতি উৎসব। তাঁর
স্বতঃস্ফূর্ত উদ্যোগ, প্রেরণা, পৃষ্ঠপোষকতা ও সক্রিয় অংশগ্রহণে ২০১৬ সালের
জানুয়ারি মাসে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যে বঙ্গ-সংস্কৃতি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়, সেই
উৎসবে বহু দেশি-বিদেশি কবি-সাহিত্যিক-শিল্পী আমন্ত্রিত হয়ে আসেন। জেলা
শহরটিতে শিল্প-সাহিত্যের অনেক আয়োজন থাকলেও তাঁরই পৃষ্ঠপোষকতায় প্রথমবারের
মতো অনুষ্ঠিত হয় নবান্ন উৎসব। একটি সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর অপতৎপরতায় জেলার
নাসিরনগর উপজেলায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের ঘটনায় যখন গোটা দেশের
সচেতন মানুষ উদ্বিগ্ন, ওই মুহূর্তে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় মানুষকে উদ্বুদ্ধ
করতে নবান্ন উৎসব ছিল একটি সময়োপযোগী আয়োজন। জেলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী
নৌকা বাইচেরও পুনঃপ্রবর্তক তিনি, যা জেলাবাসীর বাৎসরিক বিনোদনের অন্যতম
অনুষঙ্গ হিসেবে এখন সর্বজনীন বাৎসরিক উৎসবে পরিণত হয়েছে। সুরসম্রাট ওস্তাদ
আলাউদ্দিন খাঁ সংগীতাঙ্গন, জেলা শিল্পকলা একাডেমি ও শিল্পকলাসংলগ্ন বিভিন্ন
সাংস্কৃতিক সংগঠনের কার্যালয় যখন মৌলবাদী ও প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী আক্রমণে
তছনছ করে দিয়েছিল, তখন কঠোর হস্তে ওই দুর্বৃত্ত-শক্তিকে দমন করার পাশাপাশি
ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুনর্গঠনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেন
তিনি।
আগে যেখানে সংস্কৃতিকর্মীদের জেলা শিল্পকলা একাডেমির ভেতরে ঢুকতে
গেলেও প্রশাসনের অনুমতি লাগত, সেখানে তিনি সাংসদ হওয়ার পর শিল্পকলা
একাডেমিকে সংস্কৃতিকর্মীদের অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে এমনভাবে পুনর্গঠন করা
হয়েছে যে শিল্প-সংস্কৃতির মানুষদের হাতেই এখন শিল্পকলা একাডেমির পুরো
কর্তৃত্ব। তিনি জেলা শিল্পকলা একাডেমিসংলগ্ন চত্বরটিকে ‘শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ
দত্ত ভাষা চত্বর’ নামকরণ ও মঞ্চ নির্মাণের কাজে দৃষ্টান্তমূলক ভূমিকা
রাখেন। মোদ্দা কথা, তিনি বাংলা ও বাঙালি সংস্কৃতির চর্চায় সহায়তার যে উদার
অবদান রাখছেন, তা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রাজনৈতিক সংস্কৃতির ইতিহাসে সত্যিই বিরল
দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
শুধু শিল্প-সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষকতাই করছেন না
তিনি, এ দেশের কবি-সাহিত্যিক-শিল্পী-সাংবাদিকদের সব সময় পাশে রাখছেন পরম
শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায়। অনেক অসুস্থ
কবি-সাহিত্যিক-সাংবাদিক-শিল্পী-সংস্কৃতিকর্মীর সহায়তায় এগিয়ে গেছেন
সাধ্যমতো। এমন অনেক দৃষ্টান্ত আছে, যা হয়তো কেউ জানেও না, তিনি জানতে
দেনওনি। তিনি শিল্পী-সাহিত্যিক-সাংবাদিক-সংস্কৃতিকর্মীদের উপযুক্ত সম্মান
দিতে কখনোই কার্পণ্য করেননি। এভাবেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাসিন্দা ছাড়াও দেশের
বিভিন্ন অঞ্চলের কবি-সাহিত্যিক-শিল্পী-সাংবাদিক-সংস্কৃতিকর্মীদের কাছেও
তিনি একজন সজ্জন মানুষ হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছেন। হয়ে উঠেছেন তাঁদের আত্মার
আত্মীয়।
বর্তমানে বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে কজন সৎ, সংস্কৃতিবান ও
পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির রাজনীতিক আছেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম র আ ম উবায়দুল
মোকতাদির চৌধুরী। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে তাঁর প্রধান লক্ষ্য হলো
বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণ ও
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে আত্মনিয়োগ। একজন আপাদমস্তক রাজনৈতিক নেতা
হয়েও মোকতাদির চৌধুরী যেভাবে দেশজ সংস্কৃতির প্রসারে নিবেদিত কর্মীর মতো
কাজ করে যাচ্ছেন, সংস্কৃতিকর্মীদের জন্য নিঃসন্দেহে তা বড় প্রাপ্তি। তাই
সংস্কৃতিকর্মীদেরও নিজেদের স্বার্থে এবং সংস্কৃতির প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে
সাংস্কৃতিক বিকাশ ও ভবিষ্যতের অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ নির্মাণে আসন্ন
নির্বাচনে মোকতাদির চৌধুরীর বিজয় সুনিশ্চিত করতে কাজ করা উচিত।
ছবি পাদটিকা : [ঘড়ির কাঁটার আদলে] ১. বঙ্গ-সংস্কৃতি উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির ভাষণ, ২.ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে ঢাকার শাহবাগে কবি-লেখক-সংস্কৃতিকর্মীদের মানববন্ধনে উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি , ৩. বাংলাদেশের জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান ও বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত কবি মারুফুল ইসলামের সাথে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সার্কিট হাউসে, এবং ৪.নিজ বাসভবনের বৈঠকখানায় পশ্চিমবঙ্গের রবীন্দ্র-ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক পবিত্র সরকার-এর সাথে ।
লেখক : সংস্কৃতিকর্মী