
স্বপ্নের জল
আমরা অতলান্ত জল
ডুবে আছি স্বপ্নে, বিশ্বাসে,
অপেক্ষায়, আঁধারে। ডুবে আছি বেঁচে ফিরবো বলে।
চেয়ে আছি খানিক দূরে... চারিদিকে বিচ্ছিন্নতা, মানুষের ভীড়। আসীম নীল আকাশ , মেঘেদের জড়িয়ে থাকা শরীর;
সমুদ্রের সীমাহীন তাকিয়ে থাকা , সকলে যেন দারুণ ভালোবাসায় একতাবদ্ধ ।
আসলেই কি এতটাই আপন?
নিবিড় ঘন রাত , শিরশিরে কাঁপন ,
জেগে থাকা ভোর, নাকী দূরের কোন পথে
আবছায়া আঁধার!
না দেখা কোন শব্দের ঘোর অথবা খুব চেনা মুখে অচেনা ছায়া ।
সবাই যেন অনেক দূরে নিজের মতো নিজের কাছে।
যেমনটি গাছ বাঁচার জন্যে, শুষে নেয় রস ; ফুল ফোটায়, সুগন্ধও ছড়ায় একাকি।
মানুষ, গাছ, পাহাড় ,জল, বন সকলেই খোঁজে
নিরালা।
ওরা আদিম আগুনে ছুয়ে দেখে সুখ
আঁধারের গর্ভে আলো খোঁজে, মাটির হৃদপিণ্ডে
খোঁজে জল—--!
শেকড়ের খোঁজে
সেইদিন আলো ও উত্তাপ
ভাষা খুঁজেছিল,
কুঁড়ি ও পরাগ উথলে উঠেছিল উপলে!
ঝড়ও হারিয়ে আঁচলের বাঁকে
খুঁজেছিল কাঁপন;
জোয়ার খুঁজেছিল উন্মাদনা!
হারিয়ে যাওয়া ডাক অথবা,
ছুঁয়ে থাকা শিকড় কাঁপানো হাসি!
সুধাময় এজীবন খুঁজে চলেছিল
উজ্জীবিত ভালোবাসা!
পৃথিবীর মুখ
বসন্তের রঙ মেখে
চলো হলুদ ডানায় ভর করে
উড়ে যাই…
যেখানে যাবো বলে অনন্ত দ্রাঘিমার দিকে
তাকিয়ে অবিচল!
পৃষ্ঠাগুলো ওলোট পালোট করে
কবিতার শব্দে এঁকে নাও
বসন্তের রোদ।
এরপর প্রতিটি শব্দ কেটে কেটে
তৈরি করো মূর্তি।
তোমার মুখ আর পৃথিবীর দৃষ্টি ;
যেন ঈশ্বরের আদলে কোন শব্দের
সহাস্য উদযাপন !
মাটি ও মানুষ
পশ্চিমের মাঠে সাঁওতালদের কয়টা ঘর ছিল।
ওখানে খেলতে খেলতে
যে ধুলো লেগেছিল,
দু'পায়ের পাতা ঘষে পানি দিয়ে তা ধুয়েছি!
পা দু’টো এখন অনেক বড়,
এখনো দেখি, কিছু ধুলো তাতে
লেগে আছে।
ওরা বলে, ওদের কাছেই আমার ছোটবেলা
আটকে আছে।
যতই পানি দিয়ে ধুতে চাই,
দেখি খেলা শুরু করে
জল থৈথৈ।
খুলে নাও আমাকে অপার
ইচ্ছে নেই খুলবার
কি আছে বাইরে?
অন্ধকারে ওঁত পেতে থাকা আগ্রাসী ছোবল,
যা খুশি.... ঘটে যায় দুঃস্বপ্ন!
প্রতারণা আর কালো কুটকুটে দীর্ঘশ্বাসের দাপুটে মেজাজ।
যন্ত্রের মত স্থির চোখ স্পন্দনহীন!
ডাহুকের শব্দে ভাঙে না ঘুম আর...
কি আছে বাইরে?
অস্থির তাড়নাগুলো বিদ্রুপ নিয়ে দেখছে
বিপন্ন আমাকে!
হুটহাট আসে না কেউ,
হৃদয়ে রক্তের ফোটায় লেখে না কেউ—
ওড়ে না পালক…
বলে না—দরোজাটা খোল একবার,
শুধু একবার..
যে কথা বলব বলে এসেছি এতটা পথ!