রজব বকশীর গুচ্ছ কবিতা

গুড মর্নিং
গুড মর্নিং শৈশবের হাত ধরে ফিরে
রেকর্ডে বাজে 'পুরনো সেই দিনের কথা ভুলবি কিরে হায় '
বৃষ্টি মুছে দিয়ে গেল ধূলির স্ট্রাইক
কেউ কারও দিকে তাকাবার সময় নেই
মনপোড়া গন্ধে বাতাস চিৎকার করে
তার ছেঁড়া বকবকানুষ্ঠানে
মাথা নষ্ট হাততালি!
ফেসবুক বন্ধুত্ব টবে লাগানো বনানী
আমাদের শৈশব এসে ভেংচি কাটে
মেঘচিঠি
এখানে আমার আসার কথা ছিলো, এসেছিলাম নাকি? ধূলিস্রোত সাক্ষী দেবে না
সবুজ পাতার রৌদ্র-জল হাওয়ায় ওড়ে
তার ছায়া মাটি ও আকাশের ভাঙা আয়নার কোণে
নদী জানে না তার ঢেউয়ের গল্প
কেবল পালকের মতো কিছু মেঘচিঠির হাতছানি
ক্ষয়িষ্ণু চাঁদের আলোয় স্বপ্নের কঙ্কাল হেঁটে যায়
ফিরে গেছি তার চিহ্ন প্রদীপের নিচে
অন্ধকারে মুছে যায়
অক্ষর উধাও!
কুয়াশাচ্ছন্ন পথে ঠিকানা হাতড়ে ফিরে
আমাদের অন্ধ বাউল সামিউল আর হোমার
অণুগল্প
এখনো আমার সাথে কথা বলে
অথচ গড়িয়ে হারিয়ে গেছে
অনেক রৌদ্র-জল
চোখ খুলে কিংবা বুজে দেখি
ছিঁড়ে যাওয়া সম্পর্কের ফাটলে ফাটলে
ট্র্যাজেডির বৃক্ষ লতাগুল্ম ঘাস
তার ছায়া নিয়ে ঘুমায়
স্মৃতির শহরের রাজপথ অলিগলি
রেস্টুরেন্ট ও পার্ক
কেবল আমার ঘুম নিয়ে উড়ে গেছে
চেনা ওই পাখিটার অচেনা হয়ে যাওয়া
কেউ কোথাও নেই
কেউ আমাকে বলেছিল
পাথরের সখ্যে ঘুমিয়ে পড়েছি অনেকবার
তার চিহ্ন ধূলির ডাস্টবিন মুছে দিয়ে গেছে
সময়ের অন্তহীন পাঠশালায়
এক একটা জীবন যেন ব্ল্যাকবোর্ড
লিখি আর মুছে ফেলি
ঘুম জাগরণ
কে পিছন থেকে ডাকে?শুনতে পাই না
তবু শুনি তার নৈঃশব্দের অনবরত আওয়াজ
কেউ কোথাও ছিল তার এলবাম থেকে গড়িয়ে পড়েছে
স্মৃতি ও নদীর গল্প
কত নদী ছিল, উড়ে গেছে
ওদের ডানার পালক আমিও ছিলাম
মননদীর দিকে তাকিয়ে বলি
পাথর যাপনে কলকল ধ্বনি প্রতিধ্বনি নেই
দীর্ঘশ্বাসে জেগে উঠে বাঁধ ব্রিজ কালভার্ট
নিশ্বাস ও বাতাস বিষাক্ত হয়ে গেছে
এখন গল্প হয়ে ফিরে জার্নি বাই বোট
কে জানি গেয়েছিল 'আষাঢ় মাসের ভাসা পানিরে '
সময়ের চিল বড় বড় মাছ নিয়ে উড়ে গেছে
আমাদের প্রথম বসতির কথা মনে নেই!
আজ আমরা কাঁধে জোয়াল টেনে দেখি
জোয়ার ভাটার তীরহীন স্মৃতিজল কানাকানি করে
দেখি সারিগানের ফসিল মাঝিমাল্লার ভিডিও গেম
মৃত নদীর উপর অসংখ্য দালানের ঢেউ