শিশুর ঘুম নিয়ে নাজেহাল প্রায় সব বাবা-মা। বেশিরভাগ অভিভাবকের অভিযোগ, তার সন্তানকে ঘুম পাড়ানো খুবই কঠিন কাজ! সে নাকি রাতে মোটেও ঘুমোতেই চায় না। এর প্রভাব পড়ে বাবা-মায়ের ওপরেও। তারাও জেগে থাকতে বাধ্য হন। কিন্তু কিছু সহজ উপায় অবলম্বন করলেই শিশু ঘুমোয় ঠিক সময়ে এবং পর্যাপ্ত। দেখে নিন সেসব।
শিশুর ঘুমনোর একটা নির্দিষ্ট সময় ঠিক করুন প্রথমেই। নিজেদের যত কাজই থাক, শিশুর ঘুমের সেই সময়ের হেরফের করবেন না। তাতে শিশুর বায়োলজিক্যাল ক্লক ঠিক থাকে। কিছু দিন অভ্যাসের পর ওই নির্দিষ্ট সময় মেনেই তার ঘুম আসবে।
মনোবিদদের মতে, অনেক অভিভাবকই শিশুকে ঘুমের উপযুক্ত পরিবেশ দেন না। ঘরে চড়া আলো বা টিভি, সাউন্ড সিস্টেমের আওয়াজ তাদের ঘুমের দফারফা করে। শিশুও না ঘুমিয়ে সেসবে মন দিতে শুরু করে। কাজেই সন্তানকে ঘুম পাড়ানোর আগে তার ঘুমের পরিবেশ আনুন ঘরে। রাতে খাওয়া-দাওয়ার পর সন্তানকে ঘুম পাড়াতে গান বা গল্পের আশ্রয় নিন। গানের সুর, গল্পের গতি এসব শিশুর মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস ও থ্যালামাসকে প্রভাবিত করে। তাকে শান্ত করে। গান বা গল্প শুনতে শুনতে তাই ঘুমিয়ে পড়া অনেক শিশুরই অভ্যাস।
সন্তানকে ঘুম পাড়াতে গিয়ে আপনি মোবাইল ঘাঁটতে শুরু করেন কি? তা হলে সেই অভ্যাসে রাশ টানুন আজই। শিশুকেও ঘুমানোর আগে মোবাইলে হাত দিতে দেবেন না। অনেক বাবা-মা সন্তানকে রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে মোবাইলে গেম খেলতে দেন। এতে তার মস্তিষ্কের স্নায়ু উদ্দীপ্ত হয় এবং ঘুম বাধা পায়।
শিশুকে তো নির্দিষ্ট সময় ঘুম পাড়াতেই হবে,
সঙ্গে ঘুমানোর সময় যদি তার হাতের কাছে প্রিয় কোনো খেলনা বা বস্তু দেন, তার
সংস্পর্শে এসে শিশু ঘুমোয় অনেক তাড়াতাড়ি। মনোবিদদের মতে, শিশু ঘুমানোর সময়
পছন্দের বস্তু পেলে তার গন্ধে, স্পর্শে শিশুর মস্তিষ্কে চাপমুক্তির হরমোন
ক্ষরণ করে, শিশু দ্রæত
ঘুমোয়।
সন্তান একটু বড় হলে, তার সারাদিনের রুটিনে কিছুটা সময় রাখুন শরীরচর্চার জন্যও। ডায়েট মেনে খাওয়া ও শরীরচর্চার মধ্যে থাকলে শরীরের সমস্যা দূরে থাকে, মানসিক চাপ কমে ও শিশু পর্যাপ্ত ঘুমোয়। সাঁতার, জিমন্যাস্টিক বা দৌড়োদৌড়ি করে খেলা যায় এমন কিছু তার রুটিনে থাকলে সে অনেক সুস্থও থাকে।